রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৪ অপরাহ্ন

ই-পেপার

পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে অপচয়রোধ – মাওলানা: শামীম আহমেদ 

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩, ১১:১৩ পূর্বাহ্ণ

ইসলামে অপচয় ও অপব্যয় উভয়ই নিষিদ্ধ। ইসলাম একটি ভারসাম্যপূর্ণ কল্যাণকর আদর্শ। তাই এতে অপচয় ও অপব্যয়ের মতো কৃপণতাও নিষিদ্ধ। কারণ কৃপণতাও মানুষের একটি মন্দ স্বভাব, বিশ্বাসঘাতকতা ও নির্দয়তার লক্ষণ। কোরআন ও হাদিসে ক্ষুধার্তকে খাদ্যদান, বস্ত্রহীনকে বস্ত্রদান, অভাবগ্রস্তকে সাহায্যদান, অনাথ-ইয়াতিমদের লালন-পালন, নিঃস্ব ব্যক্তির উপার্জনের ব্যবস্থা করা, বিপদগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করা মুসলিমদের কর্তব্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কোরআনের সুরা বনি ইসরাইলের ২৬-২৭ আয়াতে এরশাদ হয়েছে- আত্মীয়-স্বজনকে তার হক প্রদান করো ও অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরকেও দান করো এবং কিছুতেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। শয়তান স্বীয় পালন কর্তার প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। অন্যত্র সুরা আরাফের ৩১ আয়াতে এরশাদ হয়েছে- তোমরা খাও এবং পান করো, কিছুতেই অপচয় করো না। নিশ্চয় আলল্গাহতায়ালা অপচয় ও অপব্যয়কারীকে পছন্দ করেন না। মুসলিম শরিফে বর্ণিত- রাসুল (সা.) বলেছেন, কারও ঘরে একটি বিছানা তার জন্য, অপরটি তার স্ত্রীর জন্য, তৃতীয়টি মেহমানের জন্য এবং চতুর্থটি শয়তানের জন্য। নদীতে বসে ওজু করলেও তা অপচয় করতে নিষেধ করেছেন। এ প্রসঙ্গে ইবনে মাজাহে বর্ণিত, ‘একদা নবী (সা.) হজরত সা’আদের (রা.) পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি ওজু করছিলেন। নবী (সা.) বললেন, হে সা’আদ, অপচয় করছ কেন! সা’আদ বললেন, ওজুতে কি অপচয় হয়? নবী (সা.) বললেন, হ্যাঁ, প্রবহমান নদীতে বসেও যদি তুমি অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করো, তা অপচয়।’ এ আয়াত ও হাদিসের শিক্ষা অনুযায়ী প্রতিটি মানুষকে মিতব্যয়ী হতে হবে। ধনসম্পদের অধিকারী হলেই প্রয়োজন ব্যতীত নিজের খেয়ালখুশি অনুযায়ী ব্যয় করা যাবে না।
যেহেতু প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করাই অপচয়, সেহেতু সবধরনের বিলাসিতাই অপচয়। তাই দামি খাবার, দামি পোশাক, অট্টালিকা, অপ্রয়োজনীয় শিক্ষা, চিকিৎসা ও বিনোদন অপচয়ের শামিল। এ জন্য নবী-রাসুল, ওলি-আলল্গাহ ও পরহেজগার মুসলিমের জীবনে এতটুকু বিলাসিতাও স্থান পায়নি। আর তাই সম্পদ অপচয় ও অপব্যয় না করে তা মানবকল্যাণে ব্যয় করাই হচ্ছে প্রকৃত মুমিন-মুসলিমের কাজ। ব্যয়ের ক্ষেত্রে কৃপণতা যেমন দূষণীয়, তেমনি অপচয়-অপব্যয় দূষণীয়। সম্পদ কমে যাওয়ার ভয়ে নিঃস্ব ও বিপদগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা না করার জন্য কৃপণরা দোষী। আর অপচয়কারীরাও দোষী এ কারণে যে, তারা নিজের প্রয়োজন ছাড়াই ব্যয় করছে। অথচ নিঃস্ব ও বিপদগ্রস্তদের প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করছে না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর