বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

তাড়াশ হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুয়া বিল করে টাকা আত্নসাতের অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০২০, ৫:৫৮ অপরাহ্ণ

তাড়াশ(সিরাজগঞ্জ)প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ডাক্তার ও নার্সসহ তার কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরন, হয়রানী ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজসহ ভুয়া বিল ভাউচার করে টাকা আত্নসাতের অভিযোগ।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কম্পিউটার মেরামত ও কম্পিউটারের মালামাল ক্যারিইন নামে ভুয়া ভাউচার ও বিল করে গত জুন ফাইনালে ৬৫হাজার ৩০০শত টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন।

তিনি যে বিল ভাউচার জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করছেন সেই নামে তাড়াশ বাজারে কোন কম্পিউটারের দোকানের অস্তিÍত্ব নেই। ভুয়া দোকানের নাম দিয়ে ভাউচার তৈরী করে এসব বিল উত্তোলন করছে।

তথ্য নিয়ে জানা যায়, তাড়াশ বাজারের সরকার কম্পিউটার সেন্টার নামে একটি ভুয়া ভাউচার তৈরী করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কম্পিউটারের হারডিক্স র‌্যাম, পাওয়ার সাপ­াইয়ার, ক্যাসিং, এন্টিভাইরাস, কালার প্রিন্ট ও ইউন্ডস ডিক্স ক্রয়ের নামে এসব ভুয়া বিল করেছেন।

ভাউচারে দেখা যায়, ৩টি হারডিক্স যার প্রত্যকটির মুল্য ধরা হয়েছে ৪২০০টাকা করে মোট ১২হাজার ৬শ’ টাকা। র‌্যাম ৩টি প্রতিটির মুল্য ধরা হয়েছে ২৫০০ টাকা করে ৭হাজার ৫শ’ টাকা। অপর ভাউচারের একটিতে পাওয়ার সাপ্লাইয়ার ৪টি যার প্রত্যকটির মুল্য ধরা হয়েছে ৪৫০০টাকা করে মোট ১৮হাজার ২০০শত টাকা। আরেকটি তে ক্যাশিং ৪টি যার প্রত্যকটির মুল্য ধরা হয়েছে ৩ হাজার টাকা করে মোট ১২হাজার টাকা। তাছাড়া গত মে মাসে তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিসের কম্পিউটারের সামগ্রী ক্রয় বাবদ ১৫হাজার টাকার বিল উত্তোলন করা হয়েছে। সেখানে এন্টিভাইরাস, কালার প্রিন্ট ও উইন্ডস ডিক্স ক্রয় দেখিয়ে সরকার কম্পিউটার সেন্টার নামক কম্পিউটারের দোকান থেকে ওই সব মালামাল ক্রয় করা হয়েছে বলে বিল ভাউচারের উল্লেখ্য আছে।

 

তাড়াশ বাজারের কম্পিউটারের দোকানের মালিক জাহাঙ্গীর আলম জানান, যে সকল মালামাল ক্রয় করা হয়েছে এবং যা মুল্য ধরা হয়েছে তা বাংলাদেশের কোন জায়গায় এর মুল্য এত হওয়ার কথা নয়। তিনি ওই বিলটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া যে সকল মালামাল ক্রয় দেখানো হয়েছে তা এখানে পাওয়া যাায় না। বগুড়া অথবা সিরাজগঞ্জ থেকে আসতে হয়। মিথ্যা ভুয়া একটি বিল করে টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। এভাবেই তিনি একের পর এক ভুয়া বিল ও ভুয়া ভাউচার তৈরী করে বিল উত্তোলন করছেন।

অপরদিকে, এমএসআর ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাড়াশ ও সাব-সেন্টার দোবিলার জন্য গ্যাস ও অক্সিজেন সিলিন্ডার, ফ্লো মিটার ক্রয় বাবদ ৮৩ হাজার ৬০০ টাকা গত জুন ফাইনালে একটি বিল করে এসব টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

বিভাজনের দেখা গেছে, দোবিলা সাব সেন্টারের জন্য ঔষধ ক্রয় বাবদ ১নং ক্রমিকে ২লক্ষ ১০ হাজার টাকা। ২নং ক্রমিকে এমএসআর যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য ৩০হাজার টাকা। ৩নং ক্রমিকে গজ, ব্যান্ডেজ ও তুলা ক্রয় বাবদ ১৫হাজার টাকা। ৪নং ক্রমিকে নিলেন সামগ্রী ক্রয় ১৫হাজার টাকা। ৫নং ক্রমিকে এমএসআর যন্ত্রপাতি মেরামত বাবদ ৬হাজার টাকা। ৬নং ক্রমিকে পরীক্ষা নিরিক্ষার রিয়েজেন্ট (এক্স-রে ফিন্ম, ইসিজি পেপারসহ অন্যান্য খরচ বাবদ দেখানো হয়েছে ৬হাজার টাকা। ৭নং ক্রমিকে অক্সিজেন ও অন্যান্য গ্যাস সরবরাহ বাবদ ৪হাজার ৫শ’ টাকা। ৮নং ক্রমিকে আসবার পত্র ক্রয় বাবদ ৬ হাজার টাকা, ৯নং ক্রমিকে সংগ্রহ ও সরবরাহ বাবদ ৭হাজার ৫শ’ টাকা। মোট ৩ ল¶ টাকার মালা মাল দোবিলা সাব-সেন্টারের জন্য খরচ হয়েছে।

 

উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের দোবিলা সাব-সেন্টারে গিয়ে কর্মরত কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, আসবার পত্র ও অন্যান্য কোন কিছুই দোবিলা সাব-সেন্টারে চোখে পরে নাই। শুধু মাত্র ঔষধ ছাড়া তারা আর কিছই পায় নাই।

 

দোবিলা সাব-সেন্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত করোনা রোগী এসএসসিএম আমিরুল ইসলাম ও ডাঃ সুমন জানান, গজ, ব্যান্ডেজ ও তুলা আমরা পাই নাই। এক্স-রে মেশিনই নাই তার ফিণ দিয়ে কি করব বলেন। তাছাড়া এমএসআর যন্ত্রপাতি নাই তার মেরামত কি হবে। এমএসআর যন্ত্রপাতি মেরামত, অক্সিজেন ও অন্যান্য গ্যাসসহ কোন কিছুই আমরা পাই নাই। আজকেই আপনার মাধ্যমে জানতে পেলাম যে আমাদের সাব সেন্টারের নামে এত কিছু বরাদ্দ হয়ে ছিল। ঔষধ ছাড়া বাকী ৯০ হাজার টাকার কোন মালামালা আমরা পাই নাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর