ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে নোঙ্গর করা একটি তেলবাহী ট্যাংকার বিষ্ফোরিত হয়েছে। এতে দগ্ধ হয়েছেন ট্যাংকারে থাকা ৪ জন কর্মচারী, নিখোজ রয়েছেন ৪জন এবং তাদের মধ্যে ১ জন বাবুর্চি অক্ষত অবস্থায় ঝালকাঠি সদর থানায় পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। বাবুর্চি জানান, জাহাজে সর্বমোট ১৩ জন কর্মচারী কর্মরত ছিলেন। তাদের মধ্যে হতে ২ জন ছুটিতে আছেন বাকীরা জাহাজের মধ্যে ছিলেন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ঝালকাঠি, রাজাপুর, নলছিটি ও বরিশালের ৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রন করেছে।একই সঙ্গে নিখোঁজদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
শনিবার (১জুলাই) বেলা ১ টা ৩০ মিনিটের দিকে ঝালকাঠি পৌরসভা খেয়াঘাটের বিপরীত পাশে সুগন্ধা নদীর দক্ষিণ পাড়ে রাজাপুর গ্রামের কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: নাসির উদ্দিন সরকার।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সাগর নন্দিনী-২ নামের জাহাজটি ঝালকাঠি শহরের সুগন্ধা নদীর পাড়ে তেল খালাস করতে পেট্রোল ও ডিজেল নিয়ে আসে। জাহাজটি নোঙ্গর করা অবস্থায় হঠাৎ বিকট শব্দে বিষ্ফোরণ হয়। পরে জাহাজের ইঞ্জিনরুমে আগুন ধরে কালো ধুমা বের হতে থাকে। বিষ্ফোরণে ইঞ্জিনরুমের উপরে দ্বিতল বিশিস্ট সুকানি ও স্টাফ কেবিন উড়ে নদীতে পড়ে ডুবে যায়।
দগ্ধ হয়ে আহতের মধ্যে রয়েছেন পাবনা জেলার মোদাচ্ছেরের পুত্র মো: শাকিল (৩৫), চাঁদপুরের মৃত আবুল হোসেন পাটোয়রীর পুত্র মো: ফরিদুল আলম (৫৩), পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার ছালাম বেপারীর পুত্র ইকবাল হোসেন (২৭), বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জের শিবপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম টুকুর পুত্র মাইনুল ইসলাম হৃদয়(২৯)।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: মহিতুল ইসলাম জানান, পেট্রোল ও ডিজেল ভর্তি সাগর নন্দিনী-২ নামের জাহাজটি ঝালকাঠি শহরের সুগন্ধা নদীর পাড়ে পদ্মা তেলের ডিপোতে তেল খালাস করার অপেক্ষায় ছিলো। জাহাজটি ২ দিন আগে চট্টগ্রাম থেকে এসে এখানে নোঙ্গর করে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল, সিভিল সার্জন ডা: মো: জহিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো: মহিতুল ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: নাসির উদ্দিন সরকারসহ উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।
জাহাজের তেল খালাসের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সাগর নন্দিনী-২ তেলবাহী জাহাজের মালিক গোপালগঞ্জের শেখ হাফিজ নামের এক ব্যবসায়ী। জাহাজের গায়ে লাইসেন্স নং এম- ১৩০৬৩ লেখা রয়েছে। জাহাজটির তলা ফেটে পানি ওঠার কারণে নদীতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কয়েক লক্ষ লিটার তেলসহ নদীতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।