দীর্ঘ ৩ যুগ পর অর্থাৎ ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুলেছে আর্জেন্টিনা। সেই সঙ্গে ফুটবল ক্যারিয়ারের একমাত্র অপ্রাপ্তিটাও নিজের শোকেসে ভরেছেন লিওনেল মেসি। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই আর্জেন্টাইন অধিনায়ক জানিয়েছিলেন এই বিশ্বকাপই তার শেষ।
তখনই মূলত সকলে ধরে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপ শেষে হয়ত আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরও নিতে পারেন মেসি। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের পর আর সে পথে হাটেননি এলএমটেন। বরং জানালেন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আরও কিছুদিন খেলতে চান তিনি।
তবে আরও কতদিন তিনি আকাশী-সাদা জার্সিতে খেলবেন সেটা নিয়ে কিছু না বলায় শুরু হয়েছে জল্পনা কল্পনা। তবে কি পরের বিশ্বকাপেও থাকছেন মেসি? কাতার বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার মেসি এ প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছিলেন ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দিয়াগো ম্যারাডোনার সতীর্থ জর্জ ভালদানোর কাছে।
সোমবার স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কাদেনা কোপ’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারের বিশ্বকাপজয়ী ভালদানো বলেন, পরের বিশ্বকাপটাও খেলবেন মেসি। আর সেটা নাকি তাকে মেসি নিজেই জানিয়েছেন।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ক্যাদেনা কোপের বরাত দিয়ে এমন খবর ছাপিয়েছে ডেইলি মেইল, মিরর, মার্কা ও গোলডটকম।
ভালদানো জানিয়েছেন, বিশ্বকাপের আগে যখন আমি ওর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম, ক্যামেরার বাইরে আমি ওকে বলেছিলাম যে ও পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে এবং কোনো ফুটবলার ছয়টি খেলেননি। ও আমাকে বলেছিল যে এটা অসম্ভব তবে ও আমাকে বলেছিল, আমি যদি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হই তবে আমি পরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত আমার জার্সিটি রাখব।
পরের বিশ্বকাপের সময় মেসির বয়স হবে ৩৯। যা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। কারণ এরচেয়েও বেশি বয়সি অনেক খেলোয়াড়ই খেলেছেন বিশ্বকাপে। এমনকি পেপে, দানি আলভেসদের মতো অনেকেই খেলেছেন এবারের কাতার বিশ্বকাপেও।
তবে মেসি বলেই ভরসা রয়েছে ভালদানোর। তিনি বলেন, মেসি পারবে কি না আমরা জানি না। তবে মেসি বলেই ভরসা রয়েছে। ফুটবলের ইতিহাসে ছটা বিশ্বকাপ কেউ খেলতে পারেনি। দেখা যাক কী হয়!
এই বিশ্বকাপেই মেসির সঙ্গে পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলেছেন পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, মেক্সিকোর আন্দ্রেয়াস গার্দাদো ও গিলার্মো ওচোয়া। এর আগে ইতালির জিয়ানলুইজি বুফন, জার্মানির লোথার ম্যাথিউজ ও মেক্সিকোর রাফায়েল মার্কুইজ ও আন্তনিও কারবাহালও খেলেছেন পাঁচটি করে বিশ্বকাপ। ফলে সবমিলিয়ে সংখ্যাটা দাঁড়ায় আটে।
কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনার সঙ্গে মেসির মিল ও পার্থক্যটাও তুলে ধরে ভালদানো বলেন, ম্যারাডোনা এবং মেসির মধ্যে মিল হচ্ছে তারা দুজনেই জিনিয়াস। পার্থক্য হল মেক্সিকোতে ৮৬’তে শারীরিকভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে (২৬ বছর বয়সী) ছিল দিয়াগো এবং লিওর বয়স এখন ৩৫ বছর এবং এই বয়সে ওর প্রতিভা এবং প্রজ্ঞা প্রকাশ করতে হয়েছে।