আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাই আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ কেমন হবে সেটি নির্ভর করে আপনি আপনার সন্তানের জন্য কেমন ভূমিকা রেখেছেন। কারণ একটি শিশুর মানসিক বিকাশে যাদের ভূমিকা সব চেয়ে বেশি তারা হলেন মা বাবা। কেন না সন্তানের জন্য প্রথম ও প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে তার পরিবার, মা-বাবা। কাজেই পিতা মাতা যা কিছু শেখাবেন তাই সন্তানেরা শিখবে এবং সে অনুযায়ী সুনাম বা সফলতা বয়ে আনবে।
তাই প্রত্যেক পিতা মাতা তাদের সন্তানকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে নিম্নোক্ত বিষয় গুলোকে গুরুত্ব দিতে পারেন,যেমন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা মা-বাবা সন্তানকে খুব বেশি ভালোবাসবে এটাই স্বাভাবিক। অতিরিক্ত আদরে সে যেন অন্যায় কোনো আবদার না করে বসে। তাই ছোট বেলা থেকেই তার এবং আপনার নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করুন।
ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান আপনার সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করুন। কারণ ধর্মীয় শিক্ষা আপনার শিশুকে সামাজিক, নৈতিক, ভদ্র, শান্ত ও অনুগত হতে সাহায্য করে। নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা সন্তানকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে শিশুকে ধর্মীয় মূল্যবোধ শেখানোর কোন বিকল্প নেই। বড়দের সম্মান করা, ছোটদের স্নেহ করা, সৎ পথে চলা, ন্যায়ের প্রতি ভালোবাসা, অন্যায়ের প্রতি ঘৃণাবোধ ইত্যাদি বিষয় গুলো একটি শিশুর জীবনকে সুন্দর করে তুলে। অধিক শাসন করা থেকে বিরত থাকুন কখনোই সন্তানকে অতিরিক্ত শাসন করা উচিত নয়, কারণ অতিরিক্ত শাসন তাকে আপনার থেকে দূরে ঠেলে দেবে।
সন্তানকে সময় দিন আজ কালমা-বাবা বিভিন্ন কাজে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকেন। ফলে সন্তানকে উপযুক্ত সময় না দেওয়ার কারণে সন্তান বিপথে চলে যায়। তাই সন্তানকে কার্যকর সময় দিন। তাদের ধারণা ও মতামত প্রকাশ করতে দিন। বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ কররুন আপনি ইহতে পারেন আপনার সন্তানের সব চেয়ে প্রিয় আর বিশ্বস্ত বন্ধু। অবসর সময়ে তার সঙ্গে আড্ডা দিন। তাহলে সে আপনার সঙ্গে সহজ হতে পারবে আর সব কিছু শেয়ার করতে পারবে। সহপাঠী নির্বাচনে গুরুত্ব দিন আপনার সন্তানের খোঁজ খবর রাখুন, সৎ সঙ্গ ও সুস্থ পরিবেশে গড়ে তুলতে সাহায্য করুন। ইতিবাচকশিক্ষায়গড়েতুলুন। শিক্ষকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগরাখুন।
শৃঙ্খলা মেনে চলতে শেখান সন্তানকে ছোট বেলা থেকেই উৎসাহ দিন নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে। অনেকেই এটাকে পরাধীনতা মনে করে। আসলে নিয়ম মেনে চলা পরাধীনতা নয়। শৃঙ্খলা মানে হচ্ছে জীবনকে গুছিয়ে চলা, যা জীবনকে আরও সুন্দর ও পরি পাটি করে তুলে। খেলা ধুলায় গুরুত্ব দিন আপনার সন্তানকে খেলা ধুলার প্রতি উৎসাহ প্রদান করুন। কেননা খেলা ধুলা মানসিক বিকাশে অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া শারীরিক গঠনের জন্য খেলা ধুলার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বই পড়তে উৎসাহ দিন আপনার সন্তানকে বই পড়তে উৎসাহ প্রদান করুন। বই মানুষকে উদারহতে সাহায্য করে। তাই ছোট বেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি মনোযোগী করুন।
প্রযুক্তি গত শিক্ষা দিন সচেতনতার সঙ্গে বর্তমান সময়ে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা খুব জরুরি। কিন্তু আমাদের তরুণ সমাজ বেশির ভাগ সময়েই তার অপব্যবহার করে থাকে। তাই প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কে আপনার সন্তানকে সচেতন করে তুলুন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করাআপনার সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করে সুখী সমৃদ্ধ দেশ গঠনে ভূমিকা রাখুন।
পরিশ্রমী হতে উৎসাহিত করুন নিজের কাজ নিজেকে করতে উৎসাহ দিন। শারীরিক পরিশ্রমে মনে প্রশান্তি ও জীবনে সফলতা আসে। তাই নিজের কাজ নিজে করার মাধ্যমে শ্রমের মর্যাদা উপলব্ধি ও আত্ম মর্যাদা বিকাশে সন্তানকে সহায়তা করুন।
লেখক : উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নাগরপুর, টাঙ্গাইল।