বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ অপরাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রধান নাজিরের বদলী নিয়ে চরম অসন্তোষ বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঠাকুরগাঁও কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাজহারুল সম্পাদক ওবায়দুল এমন কোনো পরিস্থিতি নেই যেখানে নির্বাচন ব্যাহত হতে পারে: মির্জা ফখরুল আটোয়ারী উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত লামায় ডেংগু বিষয়ে পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতা ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত পাবনা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে ঈশ্বরদীতে ম’শা’ল মিছিল “নকল দুধের ভয়ংকর সাম্রাজ্য, খাঁটি দুধের রাজধানী পাবনা এখন ‘সাদা বিষের’ অন্ধকার জগত” অভয়নগরে কোটি টাকার সার আত্মসাৎ চক্র ধরা, ডিবির অভিযানে আটক ৩ উদ্ধার ২২ লাখ টাকা

সবাইকে কাদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোর!

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০, ৯:৪৭ অপরাহ্ণ

এম এস শবনম শাহীন:

জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস, আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে, সবাই তো ভালবাসা চায়- এমন অনেক গান নিয়ে গত শতকের ৮০ দশক থেকে শুরু করে টানা দুই দশক বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে গানের জগতে ছিল তার রাজত্ব। ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে নয় মাস ধরে ভুগছিলেন তিনি। বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে ছিলেন রাজশাহীতে চিকিৎসক বোনের বাড়িতে। সেখানে সোমবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যু মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এন্ড্রু কিশোরের বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। তিনি স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু ও দুই সন্তান রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেছেন, এন্ড্রু কিশোর তার গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

 

এন্ড্রু কিশোরের জন্ম ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে; সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। ছোট বেলা থেকেই সঙ্গীতে অনুরক্ত ছিলেন তিনি। প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনায় পড়লেও গানই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হন। একসময় গানের নেশায় এন্ড্রু কিশোর ছুটে আসেন রাজধানী ঢাকায়। চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু হয়েছিল ১৯৭৭ সালে; মেইল ট্রেন-এ আলম খানের সুরে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে। এরপর বাদল রহমানের এমিলের গোয়েন্দা বাহিনীতেও কণ্ঠ দেন তিনি। ১৯৭৯ সালে প্রতিজ্ঞা চলচ্চিত্রের ‘এক চোর যায় চলে’ গান গাওয়ার পর আর পেছনে ফিরতে হয়নি তাকে। তার গাওয়া সবাই তো ভালবাসা চায়, আমার বুকের মধ্যে খানে, আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান, ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা, আমার বুকের মধ্যেখানে, আমি চিরকাল প্রেমেরও কাঙাল- এমন অনেক গান এখনও মানুষের মুখে ফেরে।

 

গান গেয়ে আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জেতেন তিনি। ৯০ এর দশকের শেষ দিক পর্যন্ত চলচ্চিত্রের গানে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তার। ওই সময়েও তার গাওয়া ‘পড়ে না চোখের পলক’ গানটি ছিল তুমুল জনপ্রিয়। বেশ কিছু দিন অসুস্থ থাকার পর এন্ড্রু কিশোরের ক্যান্সার ধরা পড়ে। গত বছর সিঙ্গাপুরে যান চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসা শেষে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ১১ জুন তার দেশে ফেরার কথা থাকলেও ১০ জুন এক পরীক্ষায় তার শরীরে আবারও লিম্ফোমার অস্তিত্ব মেলে। সিঙ্গাপুরে নয় মাস ধরে চিকিৎসা নিয়ে গত ১১ জুন দেশে ফিরে পরদিন রাজশাহী নগরীর মহিষবাতান এলাকায় বোন শিখা বিশ্বাসের ক্লিনিকে ভগ্নিপতি ও চিকিৎসক প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে ছিলেন এন্ড্রু কিশোর। প্যাট্রিক বিশ্বাস ক’দিন আগেই গ্লিটজকে জানিয়েছিলেন, এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। লিম্ফোমা ফিরে আসায় তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটছে। তার জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া আর উপায় নেই। রোববার বিকালে এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থা আরও সঙ্কটাপন্ন হয়ে ওঠার খবর ছড়িয়ে পড়ে। তিনি কারও সঙ্গেই কথা বলতে পারছিলেন না।

 

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে গত বছরের অক্টোবরে এক অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর। রোববার রাতে স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু স্বামীর ফেইসবুকে এক পোস্টে লেখেন, “এখন কিশোর কোনো কথা বলে না। চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকে। আমি বলি কী ভাব, বলে, ‘কিছু না, পুরনো কথা মনে পড়ে আর ঈশ্বরকে বলি আমাকে তাড়াতাড়ি নিয়ে যাও, বেশি কষ্ট দিয়ো না’।” লিপিকা লেখেন, “ক্যানসারের লাস্ট স্টেজ খুব যন্ত্রণাদায়ক ও কষ্টের হয়। এন্ড্রু কিশোরের জন্য সবাই প্রাণ খুলে দোয়া করবেন, যেন কম কষ্ট পায় এবং একটু শান্তিতে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে যেতে পারে।” প্যাট্রিক বিশ্বাস সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, দুপুরে এন্ড্রু কিশোরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর