মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ন

ই-পেপার

আটঘরিয়ায় বাঁশ-বেতের পণ্য তৈরি করে সংসার চালান সুবল চন্দ্র দাশ

মাসুদ রানা, আটঘরিয়া(পাবনা)প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০২২, ৪:০০ অপরাহ্ণ

আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের শ্রীকান্তপুর -পুকুরপাড়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের সামনে পড়ে থাকা ছোট জায়গায় বাঁশ-বেত দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করেন। এতে অভাবের সংসারে দুই বেলা খেয়ে পড়ে বেচে আছেন সুভল চন্দ্রের পরিবার।
 ৬০ বছর বয়সি শ্রী-সুবল চন্দ্র দাশের  দুই বউ ও  চার মেয়েসহ ৭ জনের সংসার চালানোর পুরো দায়িত্ব এসে পড়ে সুবলের  কাঁধে। কিন্তু এ বিপর্যয় হারাতে পারেনি তাঁকে। বাব দাদার পেশা বাঁশ ও বেতের পণ্য তৈরির কাজ জানা থাকায় আত্মবিশ্বাস ছিল মনে।
সেই বিশ্বাসে ভর করে সংসারের হাল ধরেন। দিনরাত কাজ করে ছেলে-মেয়েদের মুখে অন্ন তুলে দিয়ে পড়াশোনাও করান। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চার মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এখন সুবলের পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৩ জন। শিশুবয়সে  বাবা-মায়ের কাছে বাঁশ-বেতের পণ্য তৈরির কাজ শিখেছিলেন তিনি।
 প্রথম দিকে মা চাইতেন না ছেলে এসব কাজ করুক। কিন্তু একসময় ছেলের  ইচ্ছের কাছে হার মানেন মা । পরে খুব মন দিয়ে বাবার কাছেই সুবল শিখতে থাকেন বাঁশের তৈরি চট, মোড়া, হরেক রকমের ঝুড়ি, টুকরি, খাঁচা, চালুন, মাছ-তরকারি ধোয়ার ঝাঁকা, মাছ ধরার চাঁই, আনতা, বেতের তৈরি পাটি, জায়নামাজ প্রভৃতি পণ্য তৈরির কাজ।
একসময় এ কাজে খুবই দক্ষ হয়ে উঠেন তিনি।  বিয়ের পরেও এসব কাজই ছিল তাঁর আয়ের প্রধান উৎস। হাতের কারুকাজের অপূর্ব এ শিল্পের সাথে আরো নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠে সুবলের। এখন পুরোপুরি এই শিল্পের ওপর নির্ভরশীল তিনি। সুবলের এই শিল্প ব্যাবসা
 পেশাকে টিকিয়ে রাখতে বড় বউ পুস্তিগাছা বাজারে বাঁশ-বেতের পণ্য তৈরীর দোকানে বসেন। তবে এই কাজের পাশাপাশি সুবল  অল্প বেতনে  আটঘরিয়া পৌরসভায় ঝাড়ুদারের কাজ করেন। এতে তার সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
গত রোববার সুবলের আশ্রায়ণ প্রকল্পের বাড়িতেই কথা হয় তাঁর সঙ্গে। অর্থনীতি কে  বলেন, ছোটবেলায় বাবা মাকে বাঁশ ও বেতের বিভিন্ন পণ্য তৈরি করতে দেখে আমারও এ কাজ শেখার আগ্রহ জন্মে। কিন্তু প্রথমে মা চাননি আমি ওই কাজ করি। অবশ্য পরে তিনিই শিখিয়ে দেন। এর পর ৪৫ বছর ধরে এ কাজ করছি। এখন বাঁশ ও বেতের এমন কোনো পণ্য নেই যা আমি তৈরি করতে পারি না।
তিনি বলেন,  স্থানীয় বাজার থেকে বাঁশ ও বেত কিনে এনে কাজ করি । নানা কিছু তৈরি ও বিক্রি করি। প্রতিটি বাঁশের খাঁচা ৬০-৭০ টাকা, বড় টুকরি ২৫০-৩০০ টাকা, মুরগির টোপা ১০০-১৫০ মাঝারি মোড়া ২০০, পাটি ৫০০-৬০০, বেতের জায়নামাজ ২০০ থেকে আড়াই শ, চালুন ৩০ থেকে ১০০ টাকা দামে বিক্রি করি।
এসব বিক্রি করে প্রতিমাসে তার ৬-৭হাজার টাকা আয় হয়। এতেই কোন মতো চলে কষ্টের সংসার । এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বাঁশ-বেত কিনে পণ্য তৈরি করে বিক্রি করি। সেই টাকায় ঋণ শোধ করা, সংসার চালানো সব। তবে এনজিওর ঋণের সুদ বেশি।
যদি স্বল্প সুদে সরকারিভাবে ঋণ পাওয়া যেত তাহলে এই কুটির শিল্পটিকে আরো সম্প্রসারণ করা যেত। সুবলের ছোট বউ বলেন, যদি একটু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পান, তাহলে এ কাজ আরো সম্প্রসারিত করা সম্ভব। 

 

#CBALO / আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর