চলে গেলো বৈশাখ মাস। এর ওপর হয়ে গেলো ঈদ। তাই হিন্দু – মুসলিম উভয় ধর্মাবলম্বীদের মাঝে এখন বিয়ের মৌসুম চলছে। বিয়ের ক্ষেত্রে কনেদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সাত পাকে বাঁধা পড়ার পালা। বিয়ে নিয়ে প্রতিটি মেয়ের নানা রকম স্বপ্ন থাকে। জীবনে এই বিশেষ ও গুরুত্বপূর্ন একটা দিন নিয়ে হাজারটা পরিকল্পনা করে থাকেন বিয়ের কনেরা। তবে, বিয়ের সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার আগে বিয়ের কনেদের কয়টি জিনিস মেনে চলা অবশ্যই জরুরী। তাই তো বিয়ের প্রস্তুতির সময় এই ১০টি জিনিস মেনে চললে মেয়েদের জীবনের বিশেষ দিনটি আরও বেশি বিশেষ হয়ে উঠবে।
১# বর্তমান সময়ে সাধারণত বিয়ের দিন সব কনেই মেকআপ আর্টিস্টের কাছে সেজে থাকেন। আর এই কাজের মাধ্যমে নিজেদের সুন্দর দেখাতে মোটা অঙ্কের টাকার খরচ হয়। তবে, বিয়ের দিন কনেকে সুন্দর দেখাতে চাইলে শুধু ওই একদিনের সাজেই হবে না। বিয়ের আগে থেকে ফেসিয়াল ও ত্বক চর্চা করতে হবে। তবেই, বিয়ের দিনের মেকআপ কনের চেহারায় ভালো করে ফুটে উঠবে। বিয়ের সাজ সুন্দর করতে সঠিক পরিচর্চার প্রয়োজন।
২# বিয়ের সাজের সময় ত্বক নিয়ে কোনো এক্সপেরিমেন্ট করা চলবে না। হয়তো কেউ আপনাকে কোনও প্রোডাক্টের সন্ধান দিয়েছে, যেটা ত্বকে মাখলে কনের ত্বক হয়ে উঠবে চকচকে। আর এই কথা শুনে বিয়ের আগের দিন মেখে বসেন সে প্রোডাক্ট – এমনটা করা কিন্তু মোটেও উচিত হবে না। নতুন কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে চাইলে অন্তত ৬ মাস আগে থেকে সেটা করতে হবে। তা না হলে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
৩# ভুল করেও বিয়ের সময় ওয়্যাক্স নিয়ে কোনো ধরনের এক্সপেরিমেন্ট করা ঠিক হবে না। দেখা যায়, বিয়ের সময়ই অনেকে প্রথমবার ওয়্যাক্সিং করিয়ে থাকে। তবে এমন করা উচিত নয়। যদি কনের ত্বকে যদি সেটা মানানসই না হয়, তা হলে তার থেকে অন্যরকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই আগে থেকে সতর্ক হতে হবে এই কাজে। আর এই জন্যেই বিয়ের আগে অন্তত দুটো ওয়্যাক্সিং করানো উচিত।
৪# বিয়ের দিন কনের জন্য সেরা লুক নির্বাচন করা খুব প্রয়োজন। বিয়ের দিন চুলের স্টাইল নিয়ে নানা রকম সমস্যা হয়। কারণ, সকলকে সব স্টাইল মানায় না। আর চুলের সাজ ঠিক না হলে পুরো সাজটাই ফুটে উঠে না। মূলত বিয়ের দিনের লুক সেট করার বিষয়ে আগে থেকেই মেকআপ আর্টিস্টের সঙ্গে কথা দরকার। তার সঙ্গে দেখা করে জেনে নিতে হবে কনের জন্য কোন লুক বা সাজটা উপযুক্ত হবে।
৫# কনের বিয়ের বেনারসি মানেই যে লাল হবে – এখন এমন কোনো কথা নেই। আজকাল গোলাপী বেনারসীতেও অনেকে কনে সাজছেন। আবার লাল রঙেও রয়েছে তারতম্য। তাই কোন লাল রঙ কনের গায়ের রঙের সঙ্গে মানানসই রঙের শাড়ি কেনা দরকার। আবার বৌভাত বা রিসেপশনের পোশাক নির্বাচনের সময়ও এই একই কথা মনে রাখতে হবে।
৬# আজকাল প্রায় সকলেই ডিজাইনার ব্লাউজ পরে থাকেন। তবে, এক্ষেত্রে এমন ব্লাউজ বেছে নেওয়া উচিত, যেটা কনে ক্যারি করতে পারবেন। এই সকল ব্লাউজে নানা রকম ডিজাইন থাকে, তাই কনে নিজের জন্য উপযুক্ত ব্লাউজ বেছে নিলে ভালো হয়। আর কীভাবে শাড়ি পরতে হবে, তাও আগে থেকে ঠিক করে নেওয়া দরকার। অনেকে শাড়ির সঙ্গে বেল্ট পরেন, তা পরতে চাইলে আগে থেকে বিস্তারিত জেনে নেওয়াই ভালো।
৭# বিয়ের দিন সকালে কনেকে হালকা সাজ করালে বেশি ভালো। করুন, গায়ে হলুদের দিন থেকে বিয়ের দিন, বৌভাত – কোন দিন কখন কেমন সাজ হবে, তা আগে থেকে ভেবে নিতে হবে। সঠিক প্ল্যানিং করে নিলে বেশি ভালো। কোন শাড়ির সঙ্গে কোন ব্লাউজ মানাবে, কী গয়না পরলে আকর্ষণীয় মনে হবে – এগুলো আগে থেকে ঠিক করে নেওয়া উচিত। তা না হলে পরে সাজের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।
৮# বিয়ের বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বিয়ের কনেকে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া অবশ্যই জরুরী বিষয়। এই সময় কনে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন। একদিকে গরম অন্য দিকে বিয়ের ধকল। এই কারণে এই সময় শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। সে কারণে খাদ্যতালিকায় বিশেষ নজর রাখতে হবে।
৯# বিয়ের আগে কনের কিন্তু নানা রকম চিন্তা আসেই। কিন্তু, দুশ্চিন্তা করা যাবে না। এতে মানসিক চাপ বাড়বে। এর থেকে দেখা দিতে পারে শারীরিক জটিলতা। সঙ্গে বাড়তে পারে জটিলতা। এর প্রভাব পড়বে ত্বকেও। তাই বিয়ের আগে অকারণ দুশ্চিন্তা না করাই ভালো।
১০# অনেকেই বিয়ের আগে বন্ধুদের সঙ্গে ব্যাচেলার্স পার্টি করেন। তবে মনে রাখতে হবে – ব্যাচেলার্স পার্টিতে আনন্দ করতে গিয়ে অনেকেই মদপান করে। কিন্তু বিয়ের কনেকে এই পার্টিতে কোনো ভাবেই মদ্যপান করে অসুস্থ হওয়া চলবে না। বিয়ের আগে সকলেই মজা করতে চায়। তবে, সে আনন্দ যেন কোনও ক্ষতির কারণ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই এর থেকে সতর্ক থাকুন। বন্ধুদের সঙ্গে অবশ্যই পার্টি প্ল্যান করুন, কিন্তু মদ্যপান যেনো কোনো প্ল্যানে না আসে।
#CBALO/আপন ইসলাম