মোঃ কামাল হোসেন অভয়নগর যশোর থেকে:
যশোরের শিল্প-বাণিজ্য ও বন্দর নগর নওয়াপাড়ার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পুণরায় সভাপতি মনোনীত হয়েছেন যশোর-খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বহুল প্রচারিত পত্রিকা দৈনিক নওয়াপাড়ার প্রকাশক-সম্পাদক ও নওয়াপাড়া প্রেসকাবের সভাপতি আসলাম হোসেন। বুধবার যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড তাকে ছয় মাস মেয়াদী এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করে চিঠি ইস্যু করে। বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইতিপূর্বে সভাপতি থাকাকালীন তার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড, সৃজনশীলতা ও শিক্ষার মনোন্নয়নে অভাবনীয় পদক্ষেপ গ্রহন এবং প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাুদেশ গড়ার সহায়ক হিসেবে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে এ অঞ্চলে সর্বপ্রথম ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এনে তিনি গোটা জেলায় সাড়া ফেলে দেন।
তার গৃহিত বেশ কিছু পদক্ষেপ পরবর্তীতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরনীয় হয়ে দেখা দেয়। এসকল কাজের বিশ্লেষন করে ঐতিহ্যবাহী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে আসলাম হোসেনের মত ত্যাগী, শিক্ষানুরাগী, সৃজনশীল ও মননশীল ব্যক্তিকে সভাপতি পদের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। সূত্রটি আরও জানায়, যশোর বোর্ডের সুযোগ্য চেয়ারম্যান ড. মোল্যা আমীর হোসেন নিজে সার্বিক কর্মকান্ড ও বিদ্যালয় সম্পর্কিত অতিত ইতিহাস পর্যালোচনা করেছেন। যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মেদ স্বাক্ষরিত পত্রে আসলাম হোসেনকে এ্যাডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করা হয়। এ কমিটিতে অভিভাবক সদস্য মনোনীত হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল মান্নান সানা, সাধারণ শিক্ষক সদস্য মনোনীত হয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিপ্লব কুমার পালিত এবং সদস্য সচিব মনোনীত হয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন।
জানাগেছে, ঐতহ্যবাহী নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইতিপূর্বে সভাপতির দায়িত্ব পালন করাকালীন আসলাম হোসেন বিদ্যালয়ের স্মরণকালের উন্নয়ন ঘটিয়ে ইতিহাস রচনা করেন। জলাবদ্ধ মাঠকে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার জন্য উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলা, স্কুল ক্যান্টিন স্থাপন, শিশুদের জন্য মনোরম শিশু পার্ক নির্মাণ, বৃহৎ আইটি পার্ক স্থাপন, শিক্ষার উৎকর্ষিত পরিবেশ গঠন, শিক্ষকদের কোচিংমুখিতা থেকে ফিরিয়ে আনাসহ ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়ে তা কার্যকর করেন। যুগ যুগ ধরে শহীদ মিনার বিহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে দৃষ্টিনন্দিত শহীদ মিনার স্থাপন করে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে শিক্ষার্থীদের মাঝে জাগ্রত করেন এবং বাংলা ভাষার প্রতি মমত্ববোধ জাগিয়ে তোলেন। কেবল এখানেই শেষ নয়, অভয়নগর উপজেলায় সর্বপ্রথম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের দৃষ্টিনন্দিত প্রতিকৃতি স্থাপন করেন নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। যার মধ্য দিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগিয়ে তোলেন এবং বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর স্বরূপ উম্মোচন করে জাতীর পিতার আদর্শ শিশুদের মাঝে জাগ্রত করেন। এছাড়া অভয়নগরের ভঙ্গুর শিক্ষা ব্যবস্থায় এবং কোচিংবাজ শিক্ষকদের দৌরত্বকে কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে হটিয়ে শ্রেনি কার্যক্রমে গুরত্বদিয়ে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে নিরলস প্রচেষ্টা চালান আসলাম হোসেন।
সেই সাথে তিনি প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে একধাপ এগিয়ে নিতে উপজেলায় সর্বপ্রথম নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে ডিজিটালাইজড ঘোষণা করে তা বাস্তবায়ন করেন। বিদ্যালয়টিতে তিনি বৃহৎ ল্যাব স্থাপন করে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল শিক্ষায় পারদর্শী করে গড়ে তুলতে ভুমিকা রাখেন। যার ভূয়ষী প্রশংসা করেন যশোর জেলার তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীরসহ শিক্ষানুরাগী সচেতন মহল। ভাঙ্গাচোরা মান্ধাতার আমলের বিদ্যালয় ফটকটিকে দৃষ্টিনন্দিত ফটকে রূপন্তরিত করেন যা প্রতিটি পথচারির দৃষ্টি কেড়ে নেয়। এছাড়া বিদ্যালয়টিতে ছাত্র-শিক্ষক ও ছাত্রীদের জন্য পৃথক নামাজের স্থান গড়ে তুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলেন। স্বল্প সময়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও সচেতন সমাজের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হন তিনি। কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহলের কূটকৌশলে তিনি বিদ্যালয় থেকে সরে দাড়ান। ফলে বিগত ২ বছরে বিদ্যালয়ের শিক্ষাসহ অবকাঠামোগত সার্বিক দিক মুখ থুবড়ে পড়েছে। খুড়িয়ে চলছে ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম। শিশু পার্কটিকে রাখা হয়েছে তালাবদ্ধ। নষ্ট হয়েছে ক্রীড়া সামগ্রী।
চরম অবহেলায় পড়ে আছে বিদ্যালয় ক্যান্টিন। শিক্ষকরা হয়ে পড়ে আবারও কোচিং মুখি। ফলে শিক্ষার পরিবেশ পিছিয়ে যায় বহুগুনে। ফলে অসংখ্য অভিভাবক দিনের পর দিন বিভিন্ন মাধ্যমে তাকে বিদ্যালয়ের ভঙ্গুর অবস্থার কথা জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করতেন এবং বিদ্যালয়টির হাল ধরার অনুরোধ জানিয়ে আসছিলেন। বোর্ড চেয়ারম্যান ড. মোল্যা আমীর হোসেনসহ বোর্ড কর্তৃপক্ষ আসলাম হোসেনকে বিদ্যালয়ের সভাপতি মনোনীত করে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন বলে অভিভাবক মহল দাবি করেছেন। তারা বোর্ড চেয়ারম্যানসহ যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন