জহুরুল ইসলাম (জীবন) (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ
প্রাথমিক প্যানেল চাকরি প্রত্যাশী মোঃজসীম উদ্দীন প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক নিয়োগ প্যানেল প্রত্যাশী প্রাথমিকের ২০১৮ এর প্যানেল প্রত্যাশীদের সারা দেশে থেকে প্রায় ২৪ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫ হাজার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহোদয়ের মতে প্রাথমিকে ভাইভায় অংশগ্রহণ করলেই ১৪ থেকে ১৫ নম্বর পেয়ে পাশ করে। এ পরীক্ষা চার-ধাপে সম্পন্ন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। পরীক্ষার পর অনেকটাই দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করে ডিপিই। সেখানে ভাইভার জন্য ডাকা হয়৷ ৫৫ হাজারেরও বেশি প্রার্থীকে। সারাদেশে ১ লক্ষ ৯ শত ৬৬ জন শিক্ষার চাহিদা প্রদান শিক্ষা অধিদপ্তর হতে। এবার ৫৫ হাজার থেকে বাদ পড়া শিক্ষকেরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন৷ প্যানেলের মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেয়ার জন্য। এ রকম একটি মন্তব্য শিক্ষকদের ফেসবুক গ্রুপে ও বিভিন্ন পত্র পত্রিকাসহ অন-লাইন মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষক সংকট এর সংখ্যা প্রায় ৬৩ হাজারেরও বেশি। অধিকাংশ পরীক্ষার্থীরাই ১৪ থেকে ১৫ টি সরকারি চাকুরির ভাইভায় অংশ-গ্রহণ করার পরেও কোন চাকুরি না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। সেই সাথে অধিকাংশ দের বয়স শেষ হয়ে গেছে।
পাঠকদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে লিখিত পত্রটি হুবহু তুলে ধরা হলো- তারিখ:৩০/০৬/২০২০খ্রী. আসসালামু আলাইকুম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক করোনা মহামারীর সংকটময় মুহূর্তে প্রথমেই আপনার সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি, সেই সাথে মুজিব শত-বর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। গভীর শ্রদ্ধা এবং বিনম্রতার সাথে সু-মহান আল্লাহর নিকট আপনার সরকারের সফলতাসহ আপনার শারীরিক সুস্থতা ও আপনার দীর্ঘ নেক হায়াত কামনা করে বুকের শত বেদনায় অশ্রুসিক্তে আপনাকে দেওয়া আমার খোলা চিঠিতে লিখতে বসলাম । বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,৩৭ হাজার পরিবারের সশ্রদ্ধ সালাম নিবেন, আসসালামু আলাইকুম। আপনার সফল নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। আপনার সঠিক, বিচক্ষণ এবং সাহসী নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান হয়েছে এবং হচ্ছে। আপনি বাংলার শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালির সন্তান, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির জনক এর সু-যোগ্য কন্যা, আপনি বিশ্ব মানবতার জননী হিসেবে আজ আখ্যায়িত। প্রায় বারো লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন।
আপনি আমাদের অহংকার ও গৌরব। স্বপ্ন ভেঙে যখন চুরমার, প্রতিটি মুহূর্ত বেঁচে থাকা যখন কঠিন সেই মুহূর্তে ভালোবাসা ও আবেগের সর্বোচ্চ আসন থেকে প্রাণের আকুতি নিবেদন করি। আপনার মুখের বাণীই আমাদের একমাত্র আশা, বেঁচে থাকার উপায়। হে মানবতার মা, আপনিই তো বলেছেন কোটি বাঙালির অস্তিত্বের স্বীকৃতির মহানায়ক, অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর শততম জন্ম-বার্ষিকীতে কেউ বেকার থাকবে না। মাগো, আমি নিম্ন মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে বেড়ে ওঠা একটি সাধারণ ছেলে। আমার বাবার স্বপ্ন ছিলো আমাকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে একজন সৎ ও আদর্শবান এবং দেশ ও জাতি গঠনের কারিগর হিসেবে গড়ে তুলবেন। আজ আমি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছি বটে কিন্তু বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারিনি। উচ্চশিক্ষা অর্জনের পর বেকারত্বের বোঝা নিয়ে কেবল এটাই মনে হয় ‘জন্মই যেন আমার আজন্ম পাপ।’ হে মানস কন্যা, আপনার পিতা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতির জনক, বাঙালির ঐতিহ্য, স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেকর্ড সংখ্যক মানুষকে দেশ স্বাধীনের পরে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই হতে ১৯৭৫ সালের জুলাই পর্যন্ত মাত্র ৩ বছরে ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারিকরণ করেন।
সুতরাং আমরাও চাই আপনি তার সুযোগ্য কন্যা হিসেবে মুজিব বর্ষের উপহার স্বরূপ আমাদের বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিন। আপনি হয়তো জানেন যে, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম খুবই ধীর গতি সম্পন্ন এবং মামলা জটিলতার কারণে দীর্ঘ কয়েকবছর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ বন্ধ থাকে। তৎসময়ে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত সেশনজট থাকে এবং কয়েক বছর পরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় আমাদের প্রায় সংখ্যাগরিষ্ঠ চাকরিপ্রার্থীর বয়স শেষ। অনেকেই আর সরকারি চাকুরির জন্য আবেদন করতে পারবে না এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ হবে না। শিক্ষিত হয়েও সমাজের বোঝা হয়ে তাদের বেঁচে থাকতে হবে। হে মাননীয় দেশনেত্রী, ২০১৮ সালের প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১২ হাজার শিক্ষক নিয়োগের অনুকূলে ২৪ লাখ চাকরিপ্রার্থী আবেদন করে। এর মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় প্রায় ৫৫ হাজারের বেশী উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী মধ্যে অধিদপ্তর থেকে ১৮১৪৭ জনকে চূড়ান্তভাবে সুপারিশে নির্বাচিত করে এবং তাদেরকে নিয়োগ দেয়। এই ১৮১৪৭ জন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীর মধ্যে ৬১ টি জেলাতেই অনেকেই এর মধ্যে উচ্চ-পর্যায়ের চাকরিতে যোগদান করার কারণে অনেক পদ শূন্য রয়ে গেছে।
কিছুদিন আগেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত ২৮,৮৩২ এবং বর্তমানে প্রায় ৬৩,০০০ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ রয়েছে৷ যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের রেকর্ড করা ইতিহাস ২০১৮ সালেই কেবল আমরা ২৪ লক্ষ প্রার্থীর সাথে প্রতিযোগিতা করে মাত্র ৫৫ হাজার প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি, যা শতকরা ২.৩%। হে মাতা, যখন ২৪ লক্ষ প্রার্থীর সাথে লড়াই করে টিকে থেকেও চূড়ান্তভাবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হই তখন সমাজ আমাদেরকে হেয় প্রতিপন্ন চোখে দেখে। তাই বাকি ৩৭ হাজার প্যানেল প্রত্যাশীদের প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করে বেকারত্বের