একটি দেশের মানুষের গড় আয় বলতে কি বোঝায় হয়ত আমরা অনেকেই জানিনা,
আসুন জেনে নেওয়া যাকঃ মনে করি একটি দেশে ১০জন লোক বসবাস করে তার মধ্যে ৩ জনের আয় প্রতিমাসে ১০০টাকা এবং ৩ জনের ২০টাকা ও বাকি ৪ জনের আয় ১টাকা করে।
তাহলে ১০ জনের মোট আয় ১০০×৩=৩০০টাকা,
২০×৩=৬০টাকা,৪×১=৪ টাকা।
তাহলে দেশের মানুষের মোট আয় ৩৬৪টাকা,
এই টাকা যদি ১০ জনের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করা যায় তাহলে প্রতি জনের গড় আয়৩৬.৪০টাকা করে হবে।
আসুন এবার জেনে নেই এই গড় আয়ের ফলে জনগণ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ঃ
প্রথম ৩ জন ১০০টাকা করে আয় করে প্রতিমাসে,তারা তাদের ইচ্ছেমত ৩ টাকায় ৮০কেজি চাউল,৩টাকায় কাঁচা-বাজার,২টাকায় মাছ মাংস ক্রয় করেন।
৫ টাকায় চিকিৎসা,৫টাকায় বস্ত্র(পোশাক),৫টাকায় বিনোদন বা ভ্রমণের জন্য খরচ করেন এবং ১টাকা দান করেন।
দ্বিতীয় ৩ জন প্রতিমাসে ২০টাকা করে আয় করে,
তারা প্রতিমাসে কম মূল্যে চাউল,ডাউল,বাজার/সদাই ক্রয় করেন,সস্তায় বস্ত্র ও চিকিৎসা সেবা নেন,
বিনোদন ও দান খয়রাত কম করে,কায়দা করে বেঁচে থাকেন।
তাহলে বাকি ৪ জন প্রতিমাসে ১টাকা আয় করে কিভাবে চলে,কখনও ভেবে দেখেছেন,
এদেরকে বলা হয় নূন আনতে পান্তা ফুরানো লোক,
এদের নেই খাদ্য,চিকিৎসা,বাস-স্থান বা অন্য কোন সুযোগ সুবিধা,
অথচ তারা বয়ে বেড়াচ্ছেন প্রতিমাসে ৩৬.৪০ টাকা গড় আয়ের বোঝা।
এই গড় আয়ের হিসেব দেখিয়ে সরকারের লাভ কি জানেন?
যাদের রাষ্ট্র পরিচালনার সম্পর্কে পর্যাপ্ত বিদ্যা আছে তারাই বলতে পারবেন,এবার আসুন জেনে নেওয়া যাকঃ
সরকার মূলত নিজের যোগ্যতা দেখাতেই এই গড় আয় হিসেব করে থাকেন,
এবং অনেক সময় সত্য চেপে রেখে গড় আয় হিসেব বেশি দেখায় আন্তর্জাতিক মহলে।
এবং সরকার বোঝাতে চায় আমরা একটি উন্নত রাষ্ট্রের মানুষ,
এখানে সবাই ভালো খায়,ভালো পড়ে,ভালো জায়গায় ঘুমায় অর্থাৎ সবাই অন্যদেশের চেয়ে ভালো আছে।
এই গড় আয় হিসেব মানে আমার কাছে এক ধরনের প্রতারণা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
গড় আয় হিসেবের কবলে দেশের ৪০% মানুষ অনাহারে,বিবস্ত্র ও বিনা চিকিৎসায় ভূগছে।
এখন আমার বাংলাদেশ নিয়ে কিছু কথা বলি,
বর্তমানে বিনিয়োগ এর নিজস্ব কোন ধরনের সামর্থ্য বাংলাদেশ সরকারের নেই,
তাই তারা বিদেশে গিয়ে ধরনা ধরে আছেন ঋণ পাওয়ার জন্য,
আন্তর্জাতিক মহলে দেখাচ্ছেন এদেশে কোন অভাব নেই আপনারা বিনিয়োগ করুন।
আবার ইদানিং একটা সংবাদ শুনলাম ৬০এর বেশি বয়সী লোককে দেওয়া হবে ভাতা,
তবে এর জন্য প্রতিমাসে ১০০০টাকা করে জমা রাখতে হবে।
এই তথ্য যদি সঠিক হয় তবে বুঝে নিন বাংলাদেশ একদম ফতুর(ভিকারী) হয়ে গেছে;তাই জনগণের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে সরকারি কোষাগার ভরতে চেষ্টা করছেন।
এই গড় আয় হিসেব মানে দেউলিয়া হয়েও স্বর্ণ খঁচিত গাড়ীতে চড়ে ঘুড়ে বেরানোর মত বিলাসিতা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
“এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম
এবারের শৈরচার পতনের সংগ্রাম”
#চলনবিলের আলো / আপন