ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে এক গৃহবধূর শ্লীলতাহানীর ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই অভিযোগের তদন্তে গিয়েছিলো থানা পুলিশ। এসময় পুলিশের সামনে স্বাক্ষ্য দেয়ায় অভিযুক্ত বখাটের পক্ষালম্বন করে এক ইউপি সদস্যর নেতৃত্বে তিনটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে।

হামলায় নারীসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়। গুরুত্বর আহতদের বরিশাল শেবাচিম ও উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারীরা ব্যাপক লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে হামলা এবং শ্লীলতাহানীর ঘটনা ধামাচাঁপা দিতে হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের অপপ্রচার চালিয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করেন। এনিয়ে গত দুইদিন থেকে ওই এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ নারকীয় হামলার পর পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার বার্থী গ্রামের।

রবিবার দুপুরে সরেজমিনে প্রত্যক্ষদর্শী শিউলী বেগম জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা করিম লস্করের সমর্থক রানা হাওলাদার ওই এলাকার এক দিনমজুরের স্ত্রীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শ্লীলতাহানী করে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের পর গৌরনদী মডেল থানার এসআই শহিদুল ইসলাম সহিদ শুক্রবার দুপুরে অভিযোগের তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় ওই নারীর প্রতিবেশী আব্দুল আজিজ ফকিরসহ একাধিক ব্যক্তির জবানবন্দিতে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, পুলিশের কাছে স্বাক্ষ্য দেওয়ায় ওইদিন বিকেলে ইউপি সদস্য করিম লস্করের প্রত্যক্ষ মদদে তার স্ত্রী রিনা বেগমের নেতৃত্বে তাদের শতাধিক সমর্থকরা আজিজ ফকির ও মজিবর বেপারীর তিনটি বসত ঘরে হামলা চালায়। এতে স্বাক্ষ্য দেয়া অন্যান্য পরিবারের নারীসহ কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।

হামলায় গুরুত্বর আহত হয়ে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বার্থী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ ফকিরসহ চারজন। তার (আজিজ) মেয়ে বিএম কলেজের অনার্স শেষবর্ষের ছাত্রী তাসলিমা আক্তার বলেন, হামলাকারী সাদ্দাম হাওলাদার, ছালাম সরদার, করিম সরদার, রিয়াজ সরদার, রানা হাওলাদার, নজরুল ইসলাম ও তয়ন বেপারীসহ তাদের শতাধিক লোকজনে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তিনটি বসত ঘরে নারকীয় তান্ডব চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে সর্বস্ত্র লুট করে নিয়েছে। তিনি আরও জানান, এ হামলা ও নারী ঘঠিত ঘটনাটি ধামাচাঁপা দিতে একটি পথের বেড়া সরানোকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের অপপ্রচার করা হচ্ছে।

ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা করিম লস্কর বলেন, আমার ভাই কাদের লস্করের দেওয়া পুকুর পাড়ের যাতায়াতের পথে বেড়া সরিয়ে ফেলাকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা আজিজ ফকিরের সমর্থক মজিবর বেপারীর সাথে রানা হাওলাদারের বাগ্বিতন্ডা হয়। এনিয়ে আজিজ ফকির ও তার লোকজনে প্রথমে তার (করিম) সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। পরবর্তীতে উভয়গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন জানান, হামলা ও সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণ করে। পরবর্তীতে পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

#চলনবিলের আলো / আপন