সাংবাদিকের করা তথ্য প্রযুক্তি আইনের দঃবিঃ ২৫, ২৯ ও ৩৫ ধারায় চার্জশীট ভুক্ত আসামী ঝালকাঠির এডভোকেট সাংবাদিক আক্কাস সিকদার ও মনির হোসেনের বিরুদ্ধে সমন জারী করেছে বরিশাল সাইবার ট্র্যাইব্যুনাল আদালত। বৃহস্পতিবার বরিশাল সাইবার ট্র্যাইব্যুনাল আদালতে পুলিশ ব্যুরে্যা অব ইনভেষ্টিগেশন পিবিআইর চার্জশীটের বিষয়ে শুনানী শেষে বিচারক গোলাম মোস্তফা দুই আসামীর বিরুদ্ধে এ সমনাদেশ প্রদান করেন।
বাদীর আইনজীবী সূত্রে জানাগেছে, সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে মামলার বাদী সাংবাদিক বশির আহম্মেদকে কৌশলে ডেকে নিয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের সহায়তায় প্রধান আসামী আক্কাস সিকদার মারধর করায়। এসময় প্রধান আসামী আক্কাস তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে মারধরের সেই দৃশ্যের ভিডিও ধারন করে।
সেদিন রাতেই আসামী আক্কাস নিজেস্ব ফেসবুক আইডিতে পোষ্ট দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে আক্কাসের সহযোগী অপর আসামী কথিত ব্লগার মনির হোসেন ১মে ২০২০ইং তারিখ একই ভিডিও মোবাইল দিয়ে তার ফেসবুক আইডির সহায়তায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
আসামীদের এহেন অপকর্ম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর দঃবিঃ ২৫, ২৯ ও ৩৫ ধারায় অপরাধ অভিযোগে সাইবার ট্র্যাইব্যুনাল আদালত (বাংলাদেশ) ঢাকায় ২০ আগষ্ট ২০২০ইং তারিখ নালিশী মামলা (নং-১৭২) দায়ের করলে তদন্তের জন্য বরিশাল পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
পিবিআইর উপপরিদর্শক রিয়াদ হোসেন অভিযোগ তদন্ত ও বিশেষজ্ঞ পরীক্ষ পূর্বক মতামত গ্রহন ও স্বাক্ষ্য প্রমান গ্রহন শেষে গত ২১ মার্চ ২০২১ইং তারিখ আসামী আক্কাস সিকদার ও মনির হোসেনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর দঃবিঃ ২৫, ২৯ ও ৩৫ ধারায় অভিযুক্ত করে চার্জশীট দেন।
এ বিষয়ে মামলার বাদী মো: বশির আহাম্মেদ খলিফা জানান, “আমাকে কথা শোনার জন্য ডেকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসী নিয়ে বেআইনীভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে আমার উপর আক্কাস সিকদারের নেতৃত্বে হামলা পরিচালনা করে উহার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেয়। মামলাবাজ আক্কাস সিকদার আমার সাথে থাকা মোবাইল ফোন, ক্যামেরা ও নগদ টাকা ছিনাইয়া নেয়। দ্বৈতপেশার উকিল কাম এডভোকেট মামলাবাজ আক্কাস সিকদার আমার নামে মিথ্যা সাজানো মামলা দিয়েও হয়রানি করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
এ মামলার আসামী আক্কাস সিকদার বলেন, “ আমি বশির আহাম্মেদ উপর হামলা করেছি ঘটনা সত্য। আমি তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পেয়েছি, এ কারনেই এ ঘটনা ঘটেছে।”
এ বিষয়ে ঝালকাঠি টেলিভিশন সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মোঃ আজমীর হোসেন তালুকদার বলেন, “আইন হাতে তুলে নেয়ার অধিকার কারো নেই। সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। আক্কাস সিকদার একজন আইনজীবি এবং সাংবাদিক পেশায় নিয়োজিত থেকে কাউকে অবৈধভাবে আটক করে জনসম্মুখে হামলা করা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা মোটেও ঠিক হয়নি। এটা আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়েছে, যা কোন নাগরিকের জন্যে কাম্য নয়। কেউ অন্যায় করলে তাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট সোপর্দ করা যেতে পারে কিন্তু নিজে আইন হাতে তুলে নিয়ে কাউকে নির্যাতন করা চরম বেআইনী কাজ। আক্কাস সিকদারের এহেন অন্যায় কাজের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।