টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে অবৈধ বালির মোকাম উচ্ছেদ করে বালি পরিবহন ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ৩ জনকে ৩মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার বিকালে সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া ইসলাম সীমা উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের নলীন বাজার সংলগ্ন বালির মোকামে অভিযান পরিচালনা করে এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- ফটিক মিয়ার ছেলে কবির হোসেন (৩২), জয়নাল ফকিরের ছেলে মাসুদ (৪০) ও শামছুল সরকারের ছেলে বিপুল (৪৫)।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অসাধু বালি ব্যবসায়ীরা যমুনা নদী থেকে বালি উত্তোলন করে নলীন বাজার সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে সড়ক দখল করে বালির মোকাম গড়ে তুলেন। এতে তারাকান্দি ভায়া ভূঞাপুর সড়কের ওই অংশে প্রতিনিয়ত যানজটের কারণে দুর্ঘটনায় অনেকেই আহত হয়েছেন। পথচারিরা চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হতেন।
মুক্তিযোদ্ধা নয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জু আনোয়ারা ময়না জানান, বিদ্যালয়টি যমুনার তীর ঘেঁষে অবস্থিত। সামনেই মহাসড়ক। তারাকান্দি সারকারখানার সারবাহী ট্রাক, ঢাকাগামী বাস সহ নানারকম যানবাহন চলাচল করে দিনরাত। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াতের পথও এটি। এই ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় নেই কোন স্পীড ব্রেকার। এছাড়াও সার্বক্ষণিক বালিবাহী ট্রাকে চলে বালি ওঠা নামার কাজ। বিদ্যালয়ের সামনে একটি সিঁড়ি বাঁধানো ঘাট থাকলেও তা এখন হারিয়ে গেছে বালির গ্রাসে । নিয়মিত লাকড়ি ও পাটকাটির বাজার বসা ও স্তুপ করে রাখা বালির কারণে গাড়ি চলাচলে, ওভার টেকিং এ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে রাস্তাটি। বাতাসে উড়ে আসা বালির কারণে নানাবিধ চোখের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। সংক্রমিত হচ্ছে তাদের ফুসফুস। বাড়ছে শ্বাসকষ্টের রোগী। এমতাবস্থায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পথচারীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা পূর্বক অনতিবিলম্বে লাকড়ির হাট ও বালি ব্যবসা কেন্দ্র স্থানান্তর এখন সময়ের দাবী।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া ইসলাম সীমা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা ২০১০ আইনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে বালি পরিবহন ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ৩ জনকে ৩মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড ও বালির মোকামটি উচ্ছেদ করা হয়েছে।