বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৯:২০ অপরাহ্ন

ই-পেপার

পাবনার আটঘরিয়ায় ন্যায্য মুজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আদিবাসী নারী শ্রমিক

মাসুদ রানা, আটঘরিয়া:
আপডেট সময়: শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১, ৩:৫১ অপরাহ্ণ

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার শ্রীকান্তপুর গ্রামের মানবেতর জীবনযাপন করছেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আদিবাসী (বুনো) সম্প্রদায়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও আজও আদিবাসী (বুনো) জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ব্যবস্থা, কর্মজীবন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে লেশমাত্র পরিবর্তন হয়নি। ৩৫টি আদিবাসী পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে ৩০টি পরিবারের নারীরাই অন্যের জমিতে মজুরের কাজ করেন।

আর এ সংকটময় জীবন যাপন যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে পড়েছে আদিবাসী (বুনো) পল্লীর মানুষের। দেশের উন্নয়ন কল্পে নারীদের ভূমিকা দেখে যে কেউ এক বাক্যে বলতে বাধ্য, নারী শ্রমিক সমাজ উন্নয়ের হাতিয়ার। কেনোনা দেশে বা বিদেশে নারী শ্রমিকের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই যাচ্ছে।

বর্তমানে পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলার শ্রীকান্তপুর গ্রামের নারী শ্রমিকদের কদর বেড়েই চলছে। দারিদ্রতা, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সংসারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে নারীরা বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়ছে। নারী শ্রমিকদের কদর বেড়ে গেলেও ন্যায্য মুজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা।

আদিবাসী নারী কৃষি শ্রমিকেরা বাবা-মায়ের ঘর ছেড়ে স্বামীর সংসারে আসার পর থেকেই মাঠে শ্রমিকের কাজ করেন। আদিবাসী মেয়েদের জীবনে কখনও সুখ আসেনি। যা খানিকটা ছিল তা বিয়ের আগে।

তবে নারীরা আশপাশের গ্রাম ছাড়া খুব বেশি দূরে মজুর খাটতে যান না। পুরুরা পার্শ্ববর্তী জেলা সিরাজগঞ্জ, তারাশ,নাটোর, নওগাঁসহ উত্তরেও কাজ করতে যান। এক-দেড় মাস মজুর খেটে ফিরে আসে।

আদিবাসী নারীরা প্রধানত ধানের চারা লাগানো, নিড়ানো, ধান কাটা, পেঁয়াজ-রসুন লাগানো, তোলা- এসব কাজ করেন। বিশেষ করে ধানের চারা রোপণে নারী শ্রমিকদের চাহিদা বেশি। তারা খুব যতœ করে চমৎকার সারি সারি চারা বসান। বাজে কাজে সময়ও নষ্ট করেন না। কিন্তু এত সুন্দর যাদের কাজ, সময়ে যারা এত মিতব্যয়ী, তাদের পুরুষ শ্রমিকদের চেয়ে অনেক কম পারিশ্রমিক দেওয়া হয়- জানালেন, ফুলতুলি। তার গলায় ঝরল অভিমান- ‘আমাগের কাম ভালো নাগে, কিন্তুক ট্যাক্যা বেশি দিবি ন্যা।’

ফুলতুলির মেয়ে সুলেখা জানালেন, বর্তমানে পুরুষ মজুররা দিনে পান কমপক্ষে ৫শ’ টাকা। আর তাদের দেওয়া হয় আড়াইশ’ থেকে ৩শ’ টাকা। দিনের আয় দিনেই খরচ হয়ে যায়। অভাবের সংসারের দিন এইভাবেই কাইট্যা যায়।’

শ্রীকান্তপুর বেতেপাড়া মাঠে সরোজমিনে গিয়ে কিছু নারী শ্রমিকদের ধানের চারা লাগাতে দেখা যায়। এরা হলেন, সুলেখা, ফুলতুলি, নীলমণি, সীমা, নিস্তারাণী, শিশুরাণী,সারর্থী রাণী, আবেন রাণী, সাথী,ফণীতা, ফুলো মালা, দিপালী রাণী,শান্তি রাণ, মেনোকা বালা। আর এদের কাজ দেখভাল করছেন, শ্রী-দিলীপ সিং, শ্রী-সুখিল সিংসহ প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর