এম এস শবনম শাহীন:
ঈদেও শুটিং বন্ধ থাকায় বিভিন্ন প্রক্রিয়াতে শুটিং হয়েছে নতুন নাটকের। কিন্তু ঈদের পরে শুটিং শুরু হওয়ার পর অনেকেই ফিরছেন ক্যামেরার সামনে। মে মাসের মাঝামাঝিতে যখন একদিনের জন্য শুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয়- নাটক পাড়া সরগরম হয় বটে। কিন্তু বাস্তবতার বিচারে আবার একদিনের মাথায় শুটিং বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা বোঝার জন্য প্রতিদিনের খবরই যেখানে যথেষ্ট সেখানে শুটিং-এর প্রয়োজনই নেই বলে এক অভিনয় শিল্পী মন্তব্য করেন। এবং প্রকৃত দৃশ্য বিশ্লেষণ করে সংগঠনগুলো শুটিং বন্ধ করে দেয়। তবে ঈদে নাটকের শুটিং থেমে থাকেনি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘরে বসেই নাটকের নির্মাণে এগিয়ে এসেছিলেন পরিচালকরা। ঘরবন্দি সময়ের গল্প সিরিজ নির্মাণ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সাত পরিচালক। তাদের মাঝে অন্যতম সাফায়েত মনসুর রানা বলেন, “বিষয়টি কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।” সরেজমিনে দেখা গেছে – যেসব পরিবারের একাধিক সদস্য নাট্যজগতের সঙ্গে জড়িত তাদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব হয়েছে।
মাসুম বাশার, মিলি বাশারের পরিবার তাদের মধ্যে অন্যতম। বাসায় শুটিং করে নাটক নির্মাণে এগিয়ে এলেও সংশ্লিষ্ট আরও অনেক কলা-কুশলী আছেন যারা কার্যত কর্মহীন হয়ে পড়েন। ওদিকে সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর- সকলের কথা মাথায় রেখে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয় নাটকের শুটিয়ের ওপর থেকেও। ফলে শুরু হয়েছে নাটকও। তরুণ অভিনেত্রী সাফা কবির শুটিং শুরু হওয়া নিয়ে বলেন, “আমরা যারা অভিনয়ের ওপরেই নির্ভরশীল তাদের আসলে একটু একটু করে হলেও কাজ শুরু করতেই হবে।” এক্ষেত্রে তিনি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যা যা দরকার – সবই পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান। সাফা কবির নিজে অনেক আগে থেকেও করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতন হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। তিনি মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকেই বাসায় অবস্থান করছিলেন। তবে সম্প্রতি শুটিং শুরু করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। ওদিকে নাটকের শুটিং-এ ফিরেছে চ্যানেলগুলোও। দীপ্ত টিভির ধারাবাহিক ‘মান অভিমান’ নাটকের শুটিং শুরু হয়েছে ৩ জুন থেকে । করোনাভাইরাসের কারণে গত দুইমাস মাস শুটিং বন্ধ ছিলো। দীপ্ত টিভির আশুলিয়ায় অবস্থিত নিজস্ব শুটিং হাউজে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে কার্যক্রম চলছে। শুটিং ইউনিটের কলাকুশলী শুটিং সেটে লকডাউনে থেকে কাজ করছেন। শিল্পীদের জন্যও থাকার ব্যবস্থা আছে। প্রধান গেটে জীবাণু নাশক ফুট-বাথ রাখা হয়েছে ।
শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে প্রতিদিন শুটিং শুরু করা হয়। শুটিং-এর ক্রু মাস্ক ব্যবহার করছেন এবং শুটিং এর সময় একসঙ্গে সব ক্রুকে রাখা হচ্ছে না। যখন যার প্রয়োজন তাকেই রাখা হচ্ছে। নিজস্ব ক্যানটিনে খাবারের ব্যবস্থা আছে। যেখানে খাবারের মানের ওপর বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে দীপ্ত টিভির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তারা আরও জানায় যে, শুটিং শুরু হওয়ার পর পর্যবেক্ষণ করতে গিয়েছিলেন দীপ্ত টিভির সিইও ফুয়াদ চৌধুরী-সহ দীপ্ত টিভির অন্যান্য কর্মকর্তারা। নানা রকমের স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুটিং শুরু হলেও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত ছাড়া উপায় নেই বলে জানান অনেক অভিনয় শিল্পী। তবে অনেকেই এখুনি ক্যামেরার সামনে ফিরছেন না বলেও জানান।