পাবনার ভাঙ্গুড়ায় মুক্তিযোদ্ধাসহ ৫৬ পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে কোটি টাকার সম্পদ লুটপাটসহ বসতভিটা,জমি-জিরাত ও পুকুর অবৈধ দখলের অভিযোগের উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার খাঁনমরিচ ইউনিয়নের দাসবেলাই গ্রামে।
জানা যায়, গত ২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর সকাল ১১ টার দিকে উপজেলা দাসবেলাই গ্রামে সরকারি খাস পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয় এতে এক পক্ষের বাপ ছেলে নিহত হয়। নিহতর স্ত্রী শিউলি বেগম বাদী হয়ে ১৮ জনের নামে ভাঙ্গুড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কয়েক দিনের মধ্য ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ ১ নং আসামীসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে এবং কিছু দিনের মধ্যেই মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমানসহ সকল আসামীরা আত্মসমর্পণ করে ৪ জন ব্যতীত সকলেই জামিনে আসে। কিন্তু বাদি পক্ষের কিছু লোভী আত্মীয় সজন হত্যা মামলাকে পুঁজি করে অসৎ উদ্দেশ্যে আসামিদের পবিরারের নারী ও শিশুসহ সকল লোকজনকে প্রাণনাশের হুমকিসহ বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বাপ দাদার পৈত্রিক বসত ভিটা ছাড়তে বাধ্য করেন।
এ সুযোগে ঐ গ্রামের মিরাজের পুত্র মোঃ আমজাদ হোসেন ও আজাহার আলীর পুত্র মোঃ লিটনের নেতৃতে মোসলেমের ছেলে আব্দুল গফুর, মিরাজের ছেলে ফরজ, মতলেবের ছেলে মজনু, আব্দুর হামিদের ছেলে ইউনুছ, মহিরের ছেলে মনি তাদের আত্মীয় সজনদের সহযোগিতায় ৫৬ পরিবারের ঘরে থাকা নগত টাকা পয়সা, সোনা রোপা, ধান, চাল, পাট, সরিষা ও ঘড়ের আসবাপ পত্র, জানালা, দরজা ও কয়েক টি পুকুরের মাছ ধরে বিক্রয়সহ প্রায় ১ কোটি টাকা সম্পদ লুটপাট করেছে। এছাড়াও প্রায় ২শ বিঘা আবাদী জমি পতিত পরে রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই মুক্তিযোদ্ধাসহ আসামিদের ৫৬ পরিবারের ২১১ জন নারী পুরুষ ও শিশু নিয়ে বিভিন্ন আত্মীয় সজনদের বাড়ি বাড়ি ও রাস্তা ঘাটে মানবতার জীবন যাপন করছে। লুটপাটের ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে পাবনা জুডিশিয়াল আদালতে ১৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা করেন। লুটপাটের ঘটনা জানা জানি হবে বলে ঘটনার ৭ মাস পেরিয়ে গেলেও নিজ বসত ভিটায় আসতে দেওয়া হচ্ছেনা এই পরিবার গুলোকে।
কিছু দিন পূর্বে ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বাকিবিল্লাহ, ভাঙ্গুড়া পৌর সভার মেয়র মোঃ গোলাম হাসনাইন রাসেল, সহকারী পুলিশ সুপার(চাটমোহর সার্কেল) সজীব শাহরিন, ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন ও খানমরিচ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান উপস্থিত থেকে উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে বাড়িতে উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও পারেননি। মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ২১১ জন নারী পুরুষ ও শিশু তাদের বসত ভিটায় গিয়ে শান্তিপুর্ণ ভাবে বসবাস করার দাবি জানিয়েছে সরকারের কাছে।
অভিযুক্ত আমজাদ হোসেন ও আশরাফ আলী কাছে এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমরা কাউকে বাড়িতে আসতে মানা করি নাই। এতোদিন আসামিদের ঘর বাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত আমরা তো ঘড় রেখেছি। বাড়ির মালামাল কে নিয়েছে আমরা জানি না।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আসাদুর রহমান বলেন, আমি চাই হত্যা কারিদের বিচার হোক। কিন্তু আসামিদের পরিবার ও আত্মীয় সজনদের নিজ বাড়িতে শান্তিপুর্ণ ভাবে বসবাস করার সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, লুটপাটের ঘটনায় পাবনা জুডিশিয়াল আদালতে একটি মামলা করেছে তা এখন তদন্তধীন আছে। নিজ বাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
#আপন_ইসলাম