বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

সলঙ্গার পাটধারী গণকবরটি সরকারি উদ্যোগে এখনও সংরক্ষণ হয়নি এখনও

কে,এম আল আমিন,সলঙ্গা প্রতিনিধি :
আপডেট সময়: রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

স্বাধীনতার ৫০ বছরেও সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার পাটধারী গ্রামের অন্ধপুকুর গণকবরটি সংরক্ষিত হয়নি।সংরক্ষনের অভাবে হারিয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধের এই শোক গাঁথা স্মৃতি চিহ্নটুকু। একাত্তরের নয় মাস দেশের বিভিন্ন স্থানে বধ্যভূমিতে গণহত্যা, লুট আর নারী নির্যাতনসহ হানাদার বাহিনী নির্মম নির্যাতন চালায়। ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল পাবনা জেলার কাশিনাথপুর ডাব বাগান নামক স্থানে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধে অর্ধশতাধিক হানাদার নিহত হয়। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে হানাদার বাহিনী ২৫ এপ্রিল সৈয়দপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে কাশিনাথপুরের উদ্দেশে যাত্রা করে। পথিমধ্যে বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল গোল চত্বরের অনতিদূরে চড়িয়া শিকার নামক স্থানে রাস্তায় ব্যারিকেডের মুখে তারা যাত্রা বিরতি করে। তারা সন্ধান পায় চড়িয়া শিকারের পূর্ব দক্ষিণ পাশে অন্য একটি কাশিনাথপুর গ্রামের। এ গ্রামকেই পাবনা জেলার কাশিনাথপুর মনে করে পাকিস্তান বাহিনী খুঁজতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি। তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার আলবদরদের সহযোগিতায় হানাদার বাহিনী সন্ধান পায় চড়িয়া মধ্যপাড়ায় ডা. শাজাহান আলী, ইয়াকুব আলী ও মোহাম্মাদ আলীসহ অন্যদের প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ঘাঁটি। এই ঘাঁটি তছনছ করে দিতে শুরু হয় হানাদার বাহিনীর নির্মম গণহত্যা। তারা চড়িয়া শিকারসহ আশপাশের ৩-৪টি গ্রামের প্রায় আড়াইশ মুক্তিপাগল মানুষকে আটক করে। পরে দুই লাইনে দাঁড় করিয়ে মেশিনগানের গুলিতে হত্যা করে। গণহত্যায় থানার পাটধারী গ্রামের গোলাম হোসেন খোন্দকার, আকদুর আলী খোন্দকার, আব্দুর রাজ্জাক খোন্দকার, আলতাফ হোসেন খোন্দকার, জয়নুল আবেদীন খোন্দকার, ময়দান ফকির, আমজাদ হোসেন তালুকদার, বাসু প্রামাণিক, আব্দুস ছামাদ আকন্দ, আব্দুর রশিদ আকন্দ, মোজদার আকন্দ, তাজু আকন্দ, মাহাতাব তালুকদার, খয়রুজ্জামান তালুকদার, আব্দুর কাদের তালুকদার, জোনাব মণ্ডল, মুকুল চৌধুরী, ফনি মীর, ননী মীর, তোমেজ খোন্দকার ও নুরুমিস্ত্রী সহ অনেকে শহীদ হন। এসব শহীদদের পাটধারী অন্ধপুকুর পাড়ে গণকবর দেয়া হয়। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এ শোক গাথা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি গণকবরটি সরকারী উদ্যোগে সংরক্ষন করা হয়নি। এলাকার সচেতন মহল দীর্ঘদিন ধরে এখানে এসব শহীদদের স্মরনে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানের দাবী জানিয়ে আসলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি। হাটিকুমরুল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন,স্বাধীনতার ৫০ বছর কিন্তু এখনো এই গণকবরটি কোনো শহীদের স্মৃতি রক্ষা করা হয়নি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি গণকবরটি সংরক্ষণ করে শহীদের স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করবেন যাতে আগামী প্রজন্ম এ স্মৃতি দেখতে পারে। মওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগিশ উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ছোহরাব আলী খান বলেন,২৫ এপ্রিল গণহত্যায় পাটধারীর ২৯ জন নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে পাক বাহিনী। এসব শহীদদের পাটধারী অন্ধপুকুর পাড়ে গণকবর দেয়া হয়। শহীদদের স্মৃতি আগামী প্রজন্মকে জানাতে এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ খুবই জরুরী। এ বিষয়ে সলঙ্গা থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা তোজাম্মেল হক মাষ্টার বলেন,পাটধারী গণকবরটি সংরক্ষন করে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করা খুবই প্রয়োজন।

 

#CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর