শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

সাঁথিয়া বেগুনের বাম্বার ফলন ও ন‍্যায‍্য মৃল‍্য পাওয়ায় কূষকদের মুখে হাসি

শামীম আহমেদ,নিজস্ব  প্রতিবেদকঃ
আপডেট সময়: শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ

বেগুনের বাম্পার ফলন ও ভাল মূল্য পাওয়ায় পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলাধীন ধুলাউড়ি  ইউনিয়নের কৃষকেরা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন ও কৃষকদের ঘরে ঘরে আনন্দ পরিলক্ষিত হয়েছে |

সূর্যালোক বেগুনের গায়ে পড়তেই ঝিকিমিক করে উঠে। মৃদু বাতাসে হঠাৎই দোল লাগে গাছগুলোতে। ঝুলে থাকা ছোট গাছের এসব বেগুনের দল হালকাভাবে দুলতে থাকে। এ দোলখাওয়া বেগুনগুলোকে নিয়েই কৃষকের স্বপ্ন।কৃষক তখন পরম যত্নে দিবস শুরুর পরিচর্যায় ব্যস্ত উঠে উঠেন। গাছের শুকনো পাতাগুলোকে গাছ থেকে তুলে ফেলে দেওয়া, পানি স্প্রে, ওষুধ প্রয়োগ, নিড়ানো, নানা জাতের সার দেওয়াসহ নানা ধরনের যত্নআত্তির কাজগুলো চলতেই থাকে।
সরজমিনে দেখা গেছে যে সবজি চাষে বিখ্যাত বলে পরিচিত ধুলাউড়ি  ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি বিল ও মাঠে মাঠে যে দিকে তাকাই চারিদিকে শতশত বিঘা জমিতে বেগুনের আবাদ হয়েছে । বিশেষ করে ধুলাউড়ি, বারোআনী  রামকান্তপুর  রাউতি আলোকদিয়ার  নাড়িয়াগদাহ, ধোপাদহ হলুদঘর ছোট পাইকশা বড়,পাইকশা,গোপালপুর, , ঘুগুদহ জোরগাছা  উৎরাইল, নালীপর্বত,বরাট,পাইকরহাটি, কড়িয়াল দঃপাড়া, আতোরশোভা, কল্যাণপুর, মানপুর, হুইখাখলী এলাকার বিভিন্ন মাঠে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বেগুনের ব্যাপক আবাদ হয়েছে । এদিকে বেগুন চাষে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি এ জনপদের মানুষের আয়ও বেড়েছে। ভাগ্যের পরিবর্তনও করে নিয়েছেন অনেকেই। পাল্টে গেছে জীবন-যাত্রার মানও।

কৃষকেরা সকাল বেলায় বেগুন উত্তোলন করে নিয়ে এসে সুন্দর করে পরিষ্কার করে গ্রামের নির্ধারিত স্থানে নিয়ে আসেন সেই স্থান হতে পাইকারী ব্যাপারী (ক্রেতারা) কৃষকদের নিকট হতে বেগুন ক্রয় করে গাড়ীতে বোঝাই করে রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন শহরে প্রেরণ করেন । এতে করে কৃষকেরা যেমন লাভন হচ্ছে তেমনি এই করোনা কালিন সময়ে তাদের কষ্ট অনেকটা লাগব হচ্ছে ।

বারোআনী  গ্রামের আদর্শ কৃষক মো: আবুল হাসেম খান জানান যে, এ বছর বেগুনের ফলন ভাল হওয়ায় বেগুন বিক্রয় করে আমরা এলাকার সকল কৃষকগণ লাভবান হচ্ছি । তিনি আরোও বলেন প্রতি বিঘা জমি হতে সাপ্তাহে ২বার বেগুন উত্তোলন করা হয় এবং সাপ্তাহে প্রতি বিঘা জমি প্রায় ১৭ হতে ২৫ মন বেগুন উত্তোলন করা হচ্ছে ।

রামভদ্রবাটি গ্রামের বেগুন চাষী মোঃ শাহজাহান সেক জানান যে সুন্দর আবহাওয়া যথা সময়ে পর্যাপ্ত পরিচর্যা করার ফলে বিগত বছরের চেয়ে এ বছর বেগুনের ফলন ভাল হয়েছে ও বাজার মুল্যও বেশ ভাল এবং প্রতি মন বেগুন ১০০০ টাকা হতে ১২০০ টাকা দরে বিক্রয় করা হচ্ছে এতে করে আমরা সকল কৃষকগণ বেশ আর্থিক লাভবান হচ্ছি ।

পাইকারি ব্যাপারী (ক্রেতা) মোঃ খালিদ হাসান (মিলু) জানান যে, আমরা সরাসরি কৃষকদের নিকট হতে বেগুন ক্রয় করার ফলে খরচের পরিমান কিছুটা হলেও কম লাগছে , যার হলে সহজে মাল ঝামেলাহীন ভাবে শহরে প্রেরণ করা সম্ভব হচ্ছে । এতে করে আমরা ত্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষই লাভবান হচ্ছি |

সাঁথিয়া  উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা  জানান যে এই সাঁথিয়া উপজেলায়  প্রায় ৩০০০ হেক্টর জমিতে পাপলকিং, মেটাল সীড,মালিক’স বীজ এই তিন ধরনের বেগুন কৃষকেরা আবাদ করেছেন | বেগুনের সবচেয়ে ক্ষতিকর পোকা হল বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা। ক্ষুদ্র লাল মাকড় প্রধান শত্রু। এছাড়া কাঁটালে পোকা বা ইপলাকনা বিট্ল, জাব পোকা, ছাতরা পোকা, বিছা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, থ্রিপস, কাটুই পোকা ইত্যাদি বেগুনের ক্ষতি করে থাকে কোন পদ্ধতিতে এসব পোকা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এব্যাপারে তিনি সরাসরি ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে উক্ত সমস্যা সমাধান করে থাকেন । বেগুনের ঢলে পড়া ও গোড়া পচা দু’টি মারাত্মক রোগ। প্রায় বেগুন ক্ষেতেই এ রোগ দেখা যায়। ফল পচা রোগেও অনেক বেগুন নষ্ট হয়। বীজতলায় ড্যাম্পিং অফ রোগ চারার মড়ক সৃষ্টি করে। এ ছাড়া মোজেইক, ক্ষুদে পাতা, শিকড়ে গিঁট ইত্যাদি রোগও বেগুন ফসলের যথেষ্ট ক্ষতি করে থাকে এবিষয়ে তিনি কৃষকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পরামর্শ প্রদানে করে থাকেন |এছাড়া কৃষকদেরকে রাসানিক সারের পরিবর্তে জৈব সার প্রয়োগের মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করার জন্য পরামর্শ প্রদান করেন ও পাশাপাশি ফসলের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে চাষীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সচেতন করা হচ্ছে ফলে চাষীরা উপকৃত হচ্ছে এমনটা তিনি জানান |

 

#CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর