শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

অভয়নগরে অবৈধভাবে মূল্যবৃদ্ধি করার জন্য সিগারেট সিন্ডিকেট বেপরোয়া, ভোক্তারা বিপাকে

মোঃ কামাল হোসেন, অভয়নগর(যশোর):
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:০৩ অপরাহ্ণ

যশোরের অভয়নগরে মূল্যবৃদ্ধি করার জন্য হঠাৎ বিড়ি-সিগারেটের সংকট তৈরি করেছে, অসাধু সিগারেট কোম্পানির ডিলারসহ অসাধু সিন্ডিকেট। উপজেলার ছোট-বড়ো বাজার ঘুরে দেখা যায়, একই চিত্র। মোঃ রমজান হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী নওয়াপাড়া নূরবাগ সিগারেট বিক্রেতার কাছে ৩০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে ৫টি ডার্বি সিগারেট চাইলে দোকানী আরো ৫ টাকা দাবি করেন। এই নিয়ে দোকানীর সাথে রমজান হোসেনের মধ্যে তুমুল তর্ক চলে। শেষমেশ তাকে আরো ৫ টাকা দিতেই হয়। এমন ঘটনা শুধু রমজান হোসেনের সাথেই নয়। এ চিত্র অভয়নগর উপজেলার সকল অঞ্চলে বিরাজ করছে। সরেজমিনে সকল বাজার ঘুরে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধির প্রমাণ পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অসাধু ডিলারও মজুদকারীদের সিন্ডিকেটের জন্য সিগারেটের বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কিছু অসাধু পাইকারের অতি মুনাফার লোভে সিগারেটের বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। এর ফল ভোগ করছে সাধারণ খুচরা ক্রেতারা। হঠাৎ করে সিগারেটের মূল্যবৃদ্ধি তাদের জীবন যাত্রার ব্যয়ের ওপরও চাপ সৃষ্টি করছে। উপজেলার নওয়াপাড়া বড়ো বাজার, বউবাজার, চেঙ্গুটিয়া, ভাঙ্গাগেটসহ সকল বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্যাকেট প্রতি সিগারেটের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পযন্ত বেড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে। তবে ভোক্তাদের কাছে অতিরিক্ত দাম নিলেও সরকার এখান থেকে কোন টাকাই পাচ্ছে না। পুরো অর্থই চলে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের হাতে। এর মাধ্যমে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে। উল্টো চলতি অর্থবছরে সরকারি রাজস্ব আদায়ের উধ্বগতির লাগাম টেনে ধরার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এব্যাপারে সিগারেট কোম্পানির সেলসম্যানদের সাথে কথা হলে তারা জানান, কোম্পানির ডিলারেরা সিগারেট দিচ্ছেনা। ফলে খুচরা দোকানে আমরা সিগারেট চাহিদা অনুযায়ী দিতে পারছিনা। এবং মূল্যবৃদ্ধি রাখা হচ্ছে। আমাদের কিছু বলার নেই উপর থেকে যে ভাবে বলে আমাদের সেভাবে কাজ করতে হয়। সূত্রে আরো জানা গেছে সিগারেট সিন্ডিকেট করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করার নেপথ্যে রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তারা বাজারকে অস্থিতিশীল করে রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। নওয়াপাড়া নূরবাগ এলাকার খুচরা দোকানী সিরাজ মিয়া বলেন, বাজারে সিগারেট পাওয়া যাচ্ছে না। যদি দশ প্যাকেট চাই তাহলে দেওয়া হচ্ছে দুই প্যাকেট। কারণ জানতে চাইলে একটাই কথা ‘সিগারেট নাই’। আবার যা পাই তাও বেশী দামে ক্রয় করতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই বেশী দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। নওয়াপাড়া বড়োবাজারে ব্যবসায়ী সাহাবুদ্দিন বলেন, আমাদেরও কিছু করার নেই। পাইকার সিগারেট মজুদ করে রাখছে। তাই আমরা খুচরা ব্যবসায়ীদেরও চাহিদা অনুযায়ী দিতে পারছিনা। দামের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বেশী দামে ক্রয় করছি, তাই বেশী দামে বিক্রি করছি। সূত্রে আরো জানা যায়, প্রতিবছরই বাজেটের সময় ঘনিয়ে আসলে বাজারে সিগারেটের দাম বেড়ে যায়। এবার বেশী আগেই একটি সিন্ডিকেট বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আগামী বাজেটে সিগারেটের দাম নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। গুজবের ওপর ভিত্তি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিগারেটের বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে এবং সরকারের রাজস্ব আদায়কে বাধাগ্রস্ত করছে। এবিষয়ে শেখ সিগারেট, কেমেল, এলডি সিগারেট কোম্পানির ডিলার আনন্দ বাবু, জানান, আমাদের সিগারেটে কোন সমস্যা নেই আমরা ঠিক ভাবে সিগারেট মার্কেটে সাপ্লাই দিচ্ছি এই অনিয়ম গুলো করছে বৃটিশ কোম্পানি তারা সম্ভবত সিগারেটের দাম বাড়াবে। যে কারনে বাজারে এমন সমস্যা হচ্ছে। এব্যাপারে বৃটিশ টোবাকোর কোম্পানির নওয়াপাড়া অফিসের ম্যানেজার নিতাই বলেন, আমরা কোন সিগারেট কম দিচ্ছি না। ব্যবসায়ীরা অবৈধ মুনাফা নিতে গোডাউনে সিগারেট মজুদ করে কোম্পানির উপর দোষারোপ করছে। আমার কর্মীরা কেউ সিগারেট বাজারে কম দিলে তথ্য প্রমাণ পেলে তার কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর