শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০১:০১ অপরাহ্ন

ই-পেপার

বাংলাদেশের মানুষ ভুলে গেছে উপমহাদেশের জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার মাইলফলক যশোরের সন্তান রাধা গোবিন্দের নাম

তথ্য সংগ্রহে শেখ আলী আকবার সম্রাটঃ
আপডেট সময়: বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ

রাধা গোবিন্দের নাম শুনেনি যশোরের বকচরের অনেকে। পড়শীরাও তাঁকে চেনে না। যশোর শহরের অনেকে তাঁর নাম জানে না। তিনি সারাজীবন চাকরি করেছেন যশোর কালেক্টরেটে। সেখানকারও অনেকেও জানে না তার বাড়ি কোথায়। তাঁর বাড়ি আছে বকচরে। এখন কেউ সেখানে থাকেন না। চলে গেছেন ভারতে। রাধা গোবিন্দ যশোরের সন্তান। নক্ষত্র প্রেমিক। সারা পৃথিবীর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা রাধার পথ ধরে এগোচ্ছে। ভারত বলছে-রাধা আমাদের। সেখানে তার জন্ম-মৃত্যু দিন পালন হচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকায় তাঁর কাজ নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। রাধা গোবিন্দ উপমহাদেশের জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার মাইলফলক। যশোরবাসী তা জানেনা। ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে যশোর শহরের বকচরে তাঁর জন্ম। যশোরে পড়াশোনা। যশোর কালেক্টরেটে ছোট চাকরি করতেন। সারাদিন পরিশ্রম করে রাতে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন নক্ষত্রের নতুন রুপ। পাড়া প্রতিবেশীদের ডেকে দেখাতেন। ২৫ টাকা দিয়ে দুরবীন কেনেন বেতনের টাকা জমিয়ে। বহু নক্ষত্র রহস্যের উদঘাটন করে তিনি কলকাতায় বন্ধুদের কাছে লিখে পাঠাতেন। তাঁর পত্রগুলো প্রকাশ হতো কলকাতার পত্রিকায়।

 

কলকাতার ওই চিঠি প্রকাশ হতো ইউরোপ-আমেরিকার জার্নালে। কলকাতার যুগান্তর, মডার্ন রিভিউ, সান্সে এন্ড কালচার, সায়েন্স রিপোর্ট, আজকাল, অন্বেষা, আনন্দবাজার, শনিবারের চিঠিসহ বহু পত্রিকায় তার নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত খবর ছাপা হয়েছে। রাধার সূত্র ধরে অনেকে তারার দুরত্ব এবং সৃষ্টি রহস্যের অনেক তথ্য জানতে পেরেছেন। এসব খবর জানার পর ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে আমেরিকার হাভার্ড অবজারভেটরি নামের সংস্থা রাধাকে একটি মুল্যবান দূরবীণ উপহার দেয়। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে ফান্স সরকার রাধাকে ‘অফিসার ডি একাডেমি রিপাবলিক ফ্রানসেজ’ খেতাবে ভূষিত করেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে রাধা ভারতে চলে যান তাঁর ছেলেদের কাছে। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বারাসাতে ছেলেদের কাছে দেহত্যাগ করেন। তাঁর স্মৃতিরক্ষার জন্য ‘রাধা গোবিন্দ চন্দ্র স্মৃতিরক্ষা সমিতি’ নামে একটি সংগঠন প্রতি বছর তাঁর জন্ম-মৃত্যু বার্ষিকী পালন করেন।

 

ইন্ডিয়ান এষ্টনমিক্যাল সোসাইটি, বিড়লা ইন্ডাষ্টিয়াল এন্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম এ দুটি সংগঠন রাধা গোবিন্দকে নিয়ে কাজ করছে। বারাসাথে রাধার স্বজনদের কাছে নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের মুল্যবান দলিলপত্র রয়েছে। রাধা চন্দ্রের ৪ ছেলে। কোন কন্যা নেই। বড় ছেলে কালিদাস সাইকেলের দোকানের সাধারণ মেকানিক ছিলেন। দ্বিতীয় পুত্র দুর্গাদাস, সাধারণ চাকুরে ছিলেন। তৃতীয় পুত্র তারাপদ, ঘড়ির মেকানিক ছিলেন। চতুর্থ পুত্র বৈদ্যনাথ, রেশনের দোকানের কর্মচারি ছিলেন। এখন কেউ বেঁচে নেই।

 

CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর