বেলাল হোসাইন,খাগড়াছড়ি:
খাগড়াছড়ির রামগড়ে নির্মাণাধীন দৃষ্টিনন্দিত, আর্ন্তজাতিক মানসম্পন্নতায় তৈরী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ ঘুরে দেখতে সীমান্তবর্তী মহামুনি এলাকায় প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত পর্যটক। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ এই সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে সাবেক মহকুমা শহর রামগড়ের আকাশে দেখা দিচ্ছে আলোর রেখা।এ সেতুকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে অার্থ – সামাজিকভাবে অগ্রগতির আশার আলো দেখেছিলেন স্থানীয়রা।তাই উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাকা সেতুটি একনজর দেখার জন্য ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। কিন্তু নিরাপত্তার কথা ভেবে সেতুর উপরে উঠতে বাধা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এই বহুল প্রতীক্ষিত সাফল্য দেখার জন্য প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, মাইক্রোসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে শত শত লোক ছুটে আসছেন নান্দনিক এই সেতুটি দেখতে রামগড়ের সীমান্তবর্তী মহামুনি এলাকায়। তবে নিরাপত্তার কারণে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) প্রকল্প এলাকাসহ স্বপ্নের সেতুর ভেতরে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়না। সেতু দেখতে ঢাকা থেকে আসা শিল্পী নামের এক পর্যটক বলেন, তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন।রামগড়ে তার পৈতৃকনিবাস।অনেক আগেই এই সেতু নির্মাণের খবর শুনে আনন্দিত হয়েছিলেন।স্বপ্নের এই সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হওয়ার পর সেতুটি দেখতে তর সইছিল না তাঁর।
তাই ছেলে এবং মেয়েকে সাথে নিয়ে সেতু দেখতে চলে এসেছেন। সেতু দেখতে আসা আরেক পর্যটক রামগড়ের স্থানীয় বাসিন্দা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাওহীদা ফেরদৌস বৃষ্টি বলেন,রামগড় পর্যটনের শহর।এই শহরের বুকে এমন একটি দৃষ্টিনন্দন সেতু শহরের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিবে।তিনি আরো যোগ করেন,রামগড়ে স্থলবন্দর চালু হলে দুই দেশের বাণিজ্য, পর্যটন,কর্মসংস্থান বাড়বে। উন্মোচিত হবে অর্থনীতির নতুন দ্বার। রামগড় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার ফারুক জানান,সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের পর স্থল বন্দরের কার্যক্রম চালু হলে খুলে যাবে আঞ্চলিক বানিজ্যের নতুন দুয়ার। এই স্থলবন্দর চালু হলে বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্যঘাটতি কমবে বলেও আশা করেন তিনি। রামগড় উপজেলা নির্বাহি অফিসার মু.মাহমুদ উল্লাহ মারুফ জানান,সেতুতে দর্শনার্থীদের ভিড় করার কথা তিনি শুনেছেন।সেতুটি সীমান্তবর্তী এলাকায় পড়ায় পরবর্তী মাসিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈঠকে সেতুর চারপাশে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি তুলে ধরবেন প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০১৫ সালের ৬ জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু -১ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
খাগড়াছড়ির রামগড়ে মহামুনি এলাকায় প্রায় ১০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করে মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণের ব্যয়ভার বহন করছে ভারত সরকার। ৪১২ মিটার দৈঘ্যের সেতুটি নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৮২ দশমিক ৫৭ কোটি রুপি। নির্মাণকাজ শেষ হলে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সাবব্রুম মহকুমায় সংযোগ স্থাপিত হবে। ভারত সরকারে অর্থায়নে নির্মিত সেতুটি চালু হলে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ত্রিপুরা রাজ্যসহ মেঘালয়, আসাম, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হলে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী সেতুটি উদ্বোধন করবেন।
CBALO/আপন ইসলাম