রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৯ অপরাহ্ন

ই-পেপার

পাকুন্দিয়ায় মেয়েদের ভালবাসায় স্নিগ্ধ বাবা বাড়ির নাম “৩ কন্যার পিতৃ ঠিকানা”

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: রবিবার, ২২ নভেম্বর, ২০২০, ৩:৪৮ অপরাহ্ণ

মো. স্বপন হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার:

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার ১নং জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দিতে বাবা মেয়েদের ভালবাসায় সিগ্ধ হয়ে নিজ বাড়ির নাম রাখলেন ০৩ কন্যার পিতৃ ঠিকানা নামে। সম্প্রতি বিষয়টি সোশাল মিডিয়ায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গত কয়েক দিন পূর্বে ভয়েস অব পাকুন্দিয়া নামক ফেসবুক গ্রুপটিতে গ্রুপের একজন মেম্বার বাড়ির ছবিটি দিয়ে একটি পোস্ট দেন। তখন থেকে সোশাল মিডিয়ার ব্যক্তিবর্গ থেকে আসে নানা রকম মন্তব্য। তবে এবিষয়ে খুবই মর্মাহত প্রকাশ করেছেন উক্ত ভোক্তাভুগীর পরিবার। বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ভোক্তাভুগী স্বাস্থ্য বিভাগ কিশোরগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের ইপিআই টেকনিক্যাল পোস্টে থাকা মো. জাফরুল ইসলাম বলেন, আমি মেয়েদের প্রতি ভালবাসায় স্নিগ্ধ হয়ে বাড়িটির নাম “০৩ কন্যার পিতৃ ঠিকানা” দিয়েছি। তিনটা মেয়ে আমার তিনটা রত্ন। তাই আমি বাড়িটির এই নাম দিয়েছি।

 

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাড়িটা প্রায় ২০০ বছরের পুরানো। আমাদের বাড়ির একটা ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। তারাকান্দির প্রয়াত রাজনীতিবিদ মো. গোলাপ এমপির বাড়ি হিসেবেই জনসমাজে পরিচিত। সোশাল মিডিয়ার মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভয়েস অব পাকুন্দিয়া গ্রুপে বাড়ির নামটি নিয়ে বাজে মন্তব্যের বিষয়েও আমি মেয়েদের সাথে কথা বলেছি৷ আসলে প্রত্যেক মানুষের চিন্তা চেতনার সাথে মন্তব্যটা জড়িয়ে তাকে। তবে এই বিষয়ে আমার মেয়েরা কষ্ট পেলেও আমি তাদেরকে সমবেদনা প্রকাশ করে সান্ত্বনা দিয়েছে। মেয়েদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে মানসুরা ইসলাম মৌ। সে কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে মাস্টার্স পাশ করেছে। সে এখন বিবাহিত। মেঝো মেয়ে মাহদিয়া ইসলাম ইভা, সে কিশোরগঞ্জ গুরুদয়াল সরকারি কলেজে অনার্সে অধ্যয়নরত রয়েছে। আর ছোট মেয়ে মাহবুবা ইসলাম ইমু। সে কিশোরগঞ্জ সরকারি এস.ভি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রয়েছে। আমি আমার মেয়েদের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই। সোশাল মিডিয়ার মন্তব্যের বিষয়ে ভোক্তাভুগীর মেয়ে মানসুরা ইসলাম মৌ জানান, এটা আমাদের দাদার বাড়ী। আব্বু তার নিজের অংশে এই বাড়িটা করেছেন।

 

অর্ধেক বাড়িতে আব্বু সপ্তাহে একদিন/দুদিন গিয়ে থাকেন আর বাকিটুকু বাড়ি ভাড়া দিবেন। বাড়ির নাম আমার আব্বু নিজের পছন্দে রেখেছেন। তিনি আমাদের এবিষয়টি বলেছেন, আমাদেরও নামটা ভালো লেগেছে। তবে কিছুদিন পূর্বে ভয়েস অব পাকুন্দিয়া নামক গ্রুপের একজন মেম্বার তাদের নিজস্ব গ্রুপে আমাদের বাড়ির নামের অংশটুকু দিয়ে একটি পোস্ট দেয়। কিন্তু এই গ্রুপের কাউকে আমরা ডেকে নিয়ে ছবি তুলে পোস্ট করার জন্য বলিনি। এই ছবিটা যখন তোলা হয় তখন আমরা কেউ বাড়িতে ছিলাম না, এমনকি আমার আব্বুও না। আমি ফেইসবুকে এই পোস্টটি দেখে খুবই অবাক হয়েছি! তারচেয়েও বেশি খারাপ লেগেছে সোশাল মিডিয়ার মানুষের বাজে কমেন্ট দেখে যে, ওনার কি ছেলে নাই? সিল মারার কি দরকার? বিয়ের বিজ্ঞাপন! ইত্যাদি বিষয়ে তারা মন্তব্যে করে। মন্তব্যের বিষয়ে ভয়েস অব পাকুন্দিয়ার এডমিন এস.এম রায়হান জানান, যারা বাজে কমেন্ট করেছে তারা আসলেই না বুঝে কমেন্ট করেছে, ঐসকল কমেন্টরদারীদের মন্তব্যের পূর্বে ভাবা উচিত ছিলো। তবে তিনকন্যার বাবা যা করেছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে। আমি তিন কন্যার বাবাকে ধন্যবাদ জানাই কারণ এটির মাধ্যমে তিনি তার মেয়েদের প্রতি ভালবাসার পাশাপাশি সকল বাবাদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।

 

CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর