সবুজ শ্যামল গায়ের শ্যামলা বর্ণের এক ছোট্র ছেলে । লেখাপড়ায় বেশ ভাল, কিন্ত মনের ভিতর কত কষ্ট যন্ত্রনা চেপে আছে? ক্লাস বিরতীর সময় সব শিশুরা মাঠে হুড় হুড় করে বল নিয়ে ছুটে চলে । কিন্ত নয়ন ক্লাসেই বসে থাকে । অন্য শিশুরা আইসক্রীম কিনে খায় । সেখানেও নয়ন কে দেখা যায় না। কারোর সাথেই সে একদম চলাফেরা করে না । সে সময় এক ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল । অনেক কৃষকের জমির ধান ফসল তলিয়ে এক রকম কষ্টে দিন কেটেছে । নয়ন দের ও সেরকম হয়েছিল । নয়নের বাবা একজন সরকারী কর্মচারী ছিল । গ্রাম থেকে শহরে চাকুরী করার সুবাদে নয়নের বাবা মি: রহমান নয়নের জন্মের ০১ বছর পূর্বেই ১ম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে শহরে আর একটি বিবাহ করেন। ১ম স্ত্রীর অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন বোধ করেন নি । কারন নয়নের জন্মের পূর্বের বছর নয়নের মা কঠিন রোগে অসুস্থ্য হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। তখন তার উন্নত চিকিৎসা না নিয়ে , বাড়ীর ছোট ভাইদের স্ত্রী সহ কিছু বিতর্কিত মানুষদের উৎসাহে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। বৃদ্ধ শাশুরীর অনুরোধে মি: রহমান তার অসুস্থ্য স্ত্রীকে নাম মাত্র চিকিৎসা করাতে থাকেন। নয়নের মায়ের অসুস্থ্যতার মধ্যেই অভাগা নয়নের জন্ম হয় ।
যেখানে তার মাই ছিল অবহেলিত, সেখানে নয়ন আর কি পেতে পারে । শিশু নয়ন অসুস্থ্য মায়ের কোলে মানুষ হতে থাকে। নয়ন বেশির ভাগ সময় অনাদরে মাটিতে পড়ে থাকতো ,যার কারনে একবার এক বছর শিশুর দেহের উপর ২০/৩০ কেজি ও জনের মিষ্টি কুমড়া চাল হতে ছিড়ে পড়ে । যার কারনে তার হাটা শিখতে আরো এক বছর পিছে যায় । নয়ন যে অন্য শিশুদের সাথে মিশতে পারে না কারন তার অন্তরে এক কষ্টের বেদনা চেপে আছে । নয়নের বড় চার টা ভাইবোন রয়েছে , তারা সোনার চামুচ মুখে নিয়ে জন্ম নিয়েছে । যার কারনে তারা পিতার অত্যাধিক আদর সোহাগ পেয়ে থাকে। নয়নের বাবার শহরে বাড়ী ছিল । সেখানে বড় দুই ভাইকে নিয়ে ভাল স্কুলে ভর্তি করে দেয় , তাদের ভাল ভাল পোশাক কিনে দেয় । কিন্ত নয়ন কে দেয় নি । নয়ন কে লেখার পড়ার খরচ দেয়া হয় নি। নয়ন যখন হাই স্কুলে পড়ে , তখন টিশনি করে সে তার লেখাপড়ার খরচ কোন রকম জুটিয়েছে । জেলা শহরে কলেজে পড়ার সময়, আত্বীয়রা বিরক্ত হওয়ায়, তার জীবনে মসজিদের বাড়ান্দায় এবং রেল লাইনের প্লাটফর্মে ঘুমানোর মত ঘটনা ঘটেছে । সে আজ ও অবহেলিত!
CBALO/আপন ইসলাম