অনলাইন ডেস্ক:বাংলা সোশ্যাল সাইট হলো গুজবের কারখানা। কেউ একজন গুজব ছড়ালেই হলো, বাকিরা কোনো যাচাই বাছাই না করেই তা বিশ্বাস করে এবং পোস্ট করে ছড়িয়ে দেয়। টালিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও এই ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই তার মৃত্যুর গুজবে ভরে যায় সোশ্যাল সাইট। যদিও সর্বশেষ পাওয়া খবরে সৌমিত্র চট্টপাধ্যায় চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। তার নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছে।
বেলভিউ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে কলকাতার শীর্ষ দৈনিক আনন্দবাজার জানিয়েছে, কিছুটা হলেও আগের থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারিরীক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আজ সন্ধ্যায় হাসপাতালের পক্ষ থেকে সৌমিত্রর সর্বশেষ অবস্থা জানানো হয়। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সেখানে ভর্তি অশীতিপর এই অভিনেতা। পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যনার্জী আজ এই কিংবদন্তি অভিনেতাকে দেখতে বেলভিউ হাসপাতালে যাচ্ছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আজ মঙ্গলবার মিডিয়াকে জানিয়েছে, আগের মতোই করোনার চিকিৎসা চলছে সৌমিত্রের। গত কয়েক দিন ধরে যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছিল, তা অপরিবর্তিত আছে। এখনও পর্যন্ত দুই বার প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়েছে। সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। শরীরে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের তারতম্য আছে। তবে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে আছেন তিনি।
আজ নতুন করে এই প্রবীণ অভিনেতার ইকো, ইসিজি এবং রক্তপরীক্ষা করা হয়। নতুন করে এমআরআইও করা হয়। বুধবার নতুন করে করোনা পরীক্ষাও করা হবে। সঙ্কট যদিও কাটেনি, তবে সৌমিত্রের অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তিনি চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে। নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছে তাকে। আগের চেয়ে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সৌমিত্র চট্টপাধ্যায়ের কন্যা পৌলমী বসু বলেন, ‘আগের চেয়ে ভাল আছেন বাবা। খানিকটা স্থিতিশীলও। ১ শতাংশ হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আজ সকালে বাই-প্যাপ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে বাবাকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখার কথা ভাবছেন না চিকিৎসকরা।’
নোভেল করোনায় সংক্রমিত সৌমিত্রকে গত মঙ্গলবার বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সেই থেকেই চিকিৎসাধীন তিনি। শুক্রবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সোমবার হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, সৌমিত্রের প্রস্টেটের পুরনো ক্যান্সার ফিরে এসেছে। ছড়িয়ে পড়েছে ফুসফুস এবং মস্তিষ্কে। সংক্রমণ ঘটেছে মূত্রথলিতে। তার পরেই সৌমিত্রকে বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়।
শ্বাসকষ্ট প্রবল না হলে রোগীকে সাধারণত বাইপ্যাপ বা নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। সে ক্ষেত্রে নাকে-মুখে মাস্ক লাগিয়ে বাড়তি চাপে রোগীর ফুসফুসে অক্সিজেন-যুক্ত বাতাস পাঠানো হয়। করোনা রোগীদের অনেকের ক্ষেত্রেই নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশন পদ্ধতি কাজ করেছে। সোমবার রাত থেকে সৌমিত্রকে সে ভাবেই রাখা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে কাজ না হলে সরাসরি তাকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেটরে রাখার ভাবনা হচ্ছিল। যেখানে রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস পুরোপুরিই যন্ত্রনির্ভর। তবে সেটার প্রয়োজন হয়নি।