সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

করোনার স্থবিরতার পর পাহাড়ে রাজনীতি কোন পথে

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৯:১১ পূর্বাহ্ণ

নির্মল বড়ুয়া মিলন, রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি:

সমতল এবং পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার রাজনীতিতে পার্থক্য রয়েছে ব্যাপক। তার মধ্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বেশ কিছু ভিন্নতাও রয়েছে।

এ জেলায় জাতীয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি (এরশাদ), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাসদ (মার্কবাদি) সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে।

এ জেলায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল), সংস্কারপন্থি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক), বাঙ্গালী গণ পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমধিকার আন্দোলন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসি বাঙ্গালী সংগঠন, পার্বত্য নাগরিক কমিটি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে। এ সব আঞ্চলিক সংগঠনের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল), সংস্কারপন্থি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা) ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক) স্বসস্ত্র গ্রুপ বা অস্ত্রধারী সদস্য আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

রাঙামাটি জেলায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীকে হারানোর পরও করোনার স্থবিরতায় অনেকটাই সুবিধা জনক অবস্থায় আছে।
এ জেলায় আওয়ামীলীগ এবং দলটির অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী গুলিতে মারা গেছে। যদিও এসব হত্যার দায়ভার কেউ ¯^ীকার করেনি।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাঙামাটি-২৯৯ আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছেন।
আওয়ামীলীগ ও দলটির সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি ত্রান সহায়তার পাশাপাশি নিজেদের অর্থে করোনা কালিন কর্মহীনদের মধ্যে ত্রান সহায়তা বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছে।

করোনা কালিন ত্রাণ বিতরণ একাধিক অনুষ্ঠানে রাঙামাটি-২৯৯ আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার আঞ্চলিক দলের মধ্যে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ, অবৈধ উদ্ধার ও চাঁদাবাজি বন্ধের কথা বার বার বলেছেন কিন্তু উনার এই দাবি মাঠ পর্যায়ে তেমন কোন গুরুত্ব পাচ্ছে না বা প্রতিফলন লক্ষ্য করা যায়নি।
এদিকে জেলা আওয়ামীলীগের স্থানীয় পুরাতন ত্যাগী নেতা-কর্মীরা অনেকটাই হতাশ, এসব ত্যাগী নেতা-কর্মীরা বলছেন, রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের প্রতিটা ক্ষেত্রে ৬টি পরিবারের লোকজন এবং বহিরাগত, হাইব্রিডসহ অনুপ্রবেশকারী বা আওয়ামীলীগে নতুন যোগদানকারীরা গুরুত্ব পাচ্ছে বেশী।

রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা বহিরাগত, অনুপ্রবেশকারী বা আওয়ামীলীগে নতুন যোগদানকারীদের তালিকা প্রনয়ন করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনার ঘোষণা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগে বড় ধরনের লবিং গ্রুপিং না থাকলেও সাংগঠনিক পদ-পদবী এবং ক্ষমতা নিয়ে ৬ পরিবারের লোকজন ২ ভাগে বিভক্তির বিষয়টা অনেকটাই পরিস্কার।

এ ক্ষেত্রে দু’গ্রুপই সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদারের পক্ষে কথা বলেন।রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হাজী কামাল উদ্দিন ও বর্তমান সাধারন সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বরের সমর্থকদের মধ্যে এবং দলটির অঙ্গ সংগঠন বা সহযোগি সংগঠনের কোন্দল লেগেই আছে। আগষ্ট মাসের শেষ সপ্তাহে কৃষক লীগের একজন অনুপ্রবেশকারীকে বহিস্কার করেছে। ডিসেম্বরে রাঙামাটি পৌরসভার নির্বাচন এবং রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পরিচালনা পরিষদ নতুন ভাবে গঠনের উদ্যোগে সক্রিয় উপজেলা ও জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ।

রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দলে আগের মত মূল্যেয়ন নাই কারণ প্রতিটি নির্বাচনে আগে দলের নেতা-কর্মীরা ভোটের সময় দলীয় প্রার্থীর জন্য মাঠে কাজ করা লাগতো এখন তো দলীয় নেমিনেশন পেলেই এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলর বিনা ভোটে জয়ী হয়ে যান। তাছাড়া বহিরাগত, অনুপ্রবেশকারী বা আওয়ামীলীগে নতুন যোগদানকারীরা জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত সক্রিয়। এরা সকল উন্নয়ন মুলক কাজের ঠিকাদারী এখন হাইব্রিডদের হাতে চলে গেছে। তিনি হতাশার সুরে বলেন “রাজনীতি এখন চলে গেছে ব্যবসায়ীদের হাতে”। ছাত্র জীবন থেকে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে জনগণের সেবার জন্য রাজনীতি করে এসেছি কিন্তু হাইব্রিড বা ব্যবসায়ীরা দলের নাম ব্যবহার করে টাকার পাহাড় গড়ে তুলছেন। মিটিংয়ে গেলে দেখি কম বয়সী ছেলেরা চেয়ার নিয়ে সামনের সারিতে বসে থাকে আমরা পিছনে বসে থাকতে হয় এজন্য অনেক সময়ে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান বা প্রোগ্রাম ছাড়া মিটিংয়ে যাই না। এ নেতা আরো বলে “ক্ষমতা বলে কিছুই নাই” সব হচ্ছে দায়িত্ব পালন করা। তাছাড়া মাঠে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকলে ক্ষমতাসীন দলে শৃক্সখলা থাকেনা বলেও জানান এ ত্যাগী নেতা।
এ ব্যাপারে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জমির উদ্দিন বলেন, রাঙামাটিতে জননেতা দীপংকর তালুকদার এমপি’র নেতৃত্বে দল ঐক্যবদ্ধ, বাহির থেকে হয়তো অনেকেই অনেক কথা বলেন, আমাদের দলে কোন কোন্দল নাই, হয়তো দ্বিমত থাকতে পারে।

রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগে বা দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনে বহিরাগত, অনুপ্রবেশকারী বা আওয়ামীলীগে নতুন যোগদানকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে যারা আওয়ামীলীগে যোগদান করেছেন তাঁরা রাজনীতি করুক, কোন সমস্যা নাই, তবে কেউ যেন বিশৃংখলতা করে দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে না পারে আমাদের জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ সজাগ রয়েছে।রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নতুন পরিচালনা পরিষদ গঠনের বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, আমাদের দলীয় ফোরামে এধরনের কোন বিষয়ে আলোচনা হয়নি।

রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচন ও ইউপি নির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ হচ্ছে অনেক বড় একটি রাজনৈতিক দল, এ দলে অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মীরা রয়েছে একাধিক প্রার্থী থাকতে পারে, কিন্তু দলীয় ফোরামে আলোচনা করে যে কোন একজনের অধিক প্রার্থী থাকবেনা।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি রাঙামাটি জেলা কমিটির বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে হারিয়েছে। বিএনপির জেলা, থানা ও পৌরসভাসহ সকল সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নিজেদের অর্থে করোনা কালিন কর্মহীনদের মধ্যে ত্রান সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।শত-শত মামলার কারণে অনেক বিএনপির নেতা-কর্মী জেলে এবং পালিয়ে বেড়েচ্ছে। গায়েবি মামলার কারণে দলীয় কার্যালয় ছাড়া রাঙামাটি জেলার বিএনপির কর্মসূচি সীমিত রয়েছে।

রাঙামাটি জেলার বিএনপির সাংগঠনিক ভিত জমবুত। র্দীঘ দিন ধরে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতার বাইরে থাকা এ দলটি বিভিন্ন কারণে বেশ কয়েক ভাগে ভিভক্ত রয়েছে গ্রুপিং-লবিং। পরিক্ষীত নেতা বলে পরিচিত বর্তমান জেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহ্ আলম এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ দেখা গেলেও এ জেলায় এ দলে এডভোকেট দীপেন দেওয়ান, সাবেক উপ-মন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান ও কর্ণেল (অবঃ) মনিষ দেওয়ানের সমর্থক বা গ্রæপ রয়েছে। জেলায় বিএনপিতে ত্যাগী নেতা-কর্মীরা উপদলে বিভক্ত এটা পরিস্কার। বেশ কজন বিএনপির পুরাতন ত্যাগী নেতা-কর্মীরা ক্ষোভে এবং মামলার ভয়ে দল পরির্বতন করে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগে যোগদান করেছে।

সর্বশেষ কেন্দ্রীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে রাঙামাটি জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর-২০২০) রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যালয় থেকে স্কাইপের মাধ্যমে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মার্চ মাসে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও এপ্রিলের ২০ তারিখের মধ্যে রাঙামাটি জেলা বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। স্কাইপে বৈঠকে রাঙাামাটি উপজেলা ও পৌর বিএনপির ১২টি ইউনিটের সভাপতি ও সম্পাদকগন উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।
কিন্তু সেই বৈঠকে রাঙামাটি জেলা বিএনপির একটি অংশকে বাদ দিয়ে তারেক রহমান এই স্কাইপ বৈঠক করায় স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বৈঠকে জেলার কাউন্সিলের বিষয়ে সিদ্ধান্তে ও তাকে কিছু অবগত না করায় অপমানবোধ করছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট দীপেন দেওয়ান।

জানা যায়, ওয়ান ইলেভেনের সময় চাঁদপুর জেলা যুগ্ম জজের চলতি দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে রাঙামাটি ফিরে বিএনপিতে যোগ দেন এডভোকেট দীপেন দেওয়ান। দলে যোগ দিয়ে তৃণমূল নেতাদের সুসংগঠিত করে সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন, বর্তমানে দলের কেন্দ্রীয় সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তার মতো একজন নেতার মতামত না নিয়ে জেলা বিএনপি নিয়ে স্কাইপে বৈঠক করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছেন সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি।

এদিকে এডভোকেট দীপেন দেওয়ান গত বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর-২০২০) নয়াপল্টনে প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে দফতরের দায়িত্বে থাকা রিজভী আহমেদের সাথে দেখা করে দলীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ চেয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, যেভাবে কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে এটা আমাদের জন্য অপমানজনক। এ সিদ্ধান্ত বাতিল না হলে আমার আর এ দল করা হবে না, আমিসহ জেলার আরও অনেক নেতাকর্মীও পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। তারা আশা করছেন সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনা করে দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক জেলার কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে।

কেন্দ্রীয় বিএনপিতে দায়িত্বে থাকা এডভোকেট দীপেন দেওয়ান জানান, ২০০৭ সালে তারেক রহমানের অনুরোধে আমি সরকারি চাকুরি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দিই, এরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি, দলের দুর্দিনে দলের সাথে থেকে রাজনীতি করে আসছি, এসময় অনেক ঘাত প্রতিঘাত পার করতে হয়েছে আমাকে। আমি কেন্দ্রীয় নেতা ও জেলার সাবেক সভাপতি স্কাইপ বৈঠকে আমার অংশগ্রহণ না থাকার কথা নয়। কিন্তু রাঙামাটি জেলা বিএনপির মধ্যে একটি মহল আমাকে না জানিয়ে ষড়যন্ত্রমুলক মিথ্যা তথ্য দিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে বৈঠক করে। যা কখনো আমি আশা করি না।

বিএনপি ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এডভোকেট দীপেন দেওয়ান বলেন, দলের সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব ও দফতরের দায়িত্বে থাকা রিজভী ভাইয়ের সাথে দেখা করেছি, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। উনি আশ্বস্থ করেছেন, আমাদের কথা বলিয়ে দেবেন। আমি আশা করি তাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বললে তিনি বুঝবেন। তিনি হয়তো কিছুটা অন্ধকারে আছেন, তাই কথা বলতে চেয়েছি। আর যদি এভাবে চলতে থাকে, দল যদি আমাদের গুরুত্ব না দেয়, তাহলে দল করার বিষয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।

এবিষয়টি নিয়ে রাঙামাটি জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি হাজী শাহ আলম বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাঙামাটি জেলা, উপজেলা এবং পৌর বিএনপির সভাপতি, সাধারন সম্পাদকদের সাথে স্কাইপে বৈঠক করেছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতা রাখার সুযোগ ছিলোনা, কারন এডভোকেট দীপেন দেওয়ান তো কেন্দ্রীয় নেতা, তিনি কেন্দ্রে থাকবেন।

হাজী শাহ আলম আরো জানান, ২০১৫ সালে জেলা কাউন্সিল হলেও ২০১৬ সালে অনুমোদন পায়, আমাদের কমিটির মেয়াদ এক বছর আগেই শেষ হয়। কাউন্সিল সম্পন্ন করতেই আমরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে স্কাইপে বৈঠক করি। ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে জেলা বিএনপির বৈঠকে উপজেলাগুলোর সম্ভাব্য কাউন্সিলের তারিখ চুড়ান্ত হবে। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে জেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান সভাপতি হাজী শাহ আলম।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে এডভোকেট দীপেন দেওয়ান বিএনপিতে যোগ দেয়ার পর ২০০৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন এডভোকেট দীপেন দেওয়ান, সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন হাজী শাহ আলম। ২০১৫ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত কাউন্সিল থেকে নিজের সমর্থকদের নিয়ে বের হয়ে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবিতে নির্বাচন বর্জন করেন এডভোকেট দীপেন দেওয়ান। ওই কমিটিতে সভাপতি হাজী শাহ আলম ও সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন দীপন তালুকদার দীপু।

রাঙামাটিতে ২০১৫ সালে কমিটি গঠনের পর থেকে বিএনপির দুই গ্রুপ আলাদা-আলাদা ভাবে দলীয় কর্মসুচী পালন করে আসছে।
জামায়েতে ইসলাম বাংলাদেশ রাঙামাটি জেলায় বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
জামাত রাঙামাটিতে মামলা, হামলায় ও নিজেদের মধ্যে দলীয় কোন্দলের কারণে আগের অস্থিত¦ হারিয়ে ফেলেছে, এ দলটি তাদের দলীয় কার্যালয়ে সীমিত পরিসরে দলীয় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
এ দলটি রাঙামাটি-২৯৯ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের প্রার্থী দেয়ার পর কিছু -কিছু দলীয় কর্মসূচি লক্ষ্য করা গেলেও বর্তমানে এ দলটির তেমন কোন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছেনা।

জাতীয় পার্টি (এরশাদ) রাঙামাটি জেলায় বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি। রাঙামাটিতে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) লঙ্গল প্রতীক নিয়ে রাঙামাটি-২৯৯ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের প্রার্থী দেয়ার পর সংদস সদস্য প্রার্থী এডভোকেট পারভেজ গ্রুপ এবং সাবেক জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হারুন মাতব্বর গ্রুপের মধ্যে কোন্দল চরম পর্যায়ে পৌঁছে। করোনা পরিস্থতির মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের মৃত্য বার্ষিকীও পালন করেছে আলাদা ভাবে।
জেলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি হারুন মাতব্বরের একটি কমিটি (পুরাতন কমিটি) এবং এডভোকেট পারভেজ (আহবয়ক কমিটি বা সন্মেলন প্রস্ততি কমিটি) এর একটি কমিটি রয়েছে।
তবে যে কোন সময়ের চেয়ে এডভোকেট পারভেজ এর নেত্বেতে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) রাঙামাটি জেলায় সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন এডভোকেট পারভেজ গ্রুপের জেলার জাতীয় পার্টির কমিটির নেতা চন্দন বড়ুয়া।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রাঙামাটি জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে এ বাম দলটির গুত্বপূর্ণ নেতা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও তবে কাউকে হারায়নি।

রাঙামাটিতে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি কোদাল প্রতীক নিয়ে রাঙামাটি-২৯৯ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জুঁই চাকমাকে প্রার্থী দেয়ার পর থেকে মুলতঃ রাঙামাটিতে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যক্রম লক্ষ্য করা গেছে।
বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসের মধ্যে আর্থিক সংকটের কারণে কেবলমাত্র তাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা পরিচালনা করেছে।

তবে বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসের মধ্যে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি কোদাল প্রতীক নিয়ে রাঙামাটি-২৯৯ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী জুঁই চাকমার নেত্বতে গণতদারকি কমিটি গঠন করেছে রাঙামাটি জেলায়।
করোনাকালিন রাঙামাটি জেলায় গণতদারকি কমিটি গঠন করায় অনেক কর্মহীন মানুষের উপকার হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ।

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যক্রম জেলায় সীমিত কেন ? জানতে চাইলে রাঙামাটি-২৯৯ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহনকারী সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী রাঙামাটি জেলা কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় সংগঠক জুঁই চাকমা বলেন, আমাদের পার্টির জেলা কমিটির পক্ষ থেকে কোন কর্মসূচি হাতে নিলে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন থেকে আমাদের প্রোগ্রাম করার অনুমতি দেওয়া হয়না। কেন অনুমতি দেয়া হলো না তার ব্যাখ্যাও জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন দেন না। আমাদের পার্টি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নিবন্ধীত একটি রাজনৈতিক দল। এ জেলার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সৌজন্যতা পর্যন্ত দেখাতে কার্পণ্য বোধ করেন। করোনাকালিন বা তার আগে থেকে সরকারের অপকর্মের কথা যারা বলেছেন তাদের বিরুদ্ধে একটি মহল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, বাড়ি-ঘরে হামলা, ইয়াবা পকেটে দিয়ে মামলা, ক্রস ফায়ার, না হয় গুম হতে হচ্ছে।

এত কিছুর পরও আমরা করোনাকালিন নিজেদের জীবনের ঝঁকি নিয়ে সাধারন জনগণের কথা মাথায় রেখে অনলাইনে সভা করেছি এবং স্থানীয় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে কথা বলেছি।তিনি বলেন, করোনাকালিন রাঙামাটি জেলার আইন শৃক্সখলা প্রশ্নবিদ্ধ, ক্ষমতাসীন দলের ভুমিকা এখনো রহ্যজনক।বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির মধ্যে দলীয় কোন কোন্দল আছে কি-না জানতে চাইলে এ বাম নেতা জুঁই চাকমা বলেন, আমরা নীতি আদর্শের রাজনীতি করি, আমরা দল বা পার্টি হিসাবে ছোট হতে পারি আমাদের মন-মানুষিকতা ছোট নয়। যাদের হালুয়া রুটি আছে, তাদের মধ্যে গ্রুপিং-লবিং কিংবা উপদল বা কোন্দল দেখা দেয়, আমরা সাধারন খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের জন্য রাজনীতি করি নিজেদের আখের গোছাতে নয়। আমি এবং আমার পার্টির নেতা-কর্মীরা রাজনীতির মাধ্যে জনসেবা করি, রাজনীতির নামে আমরা জনগণের রাষ্ট্রিয় সম্পদ লুট-পাট করি না।বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি (সিপিবি) রাঙামাটি জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।

জানা গেছে, তারা তাদের দলীয় পরিসরে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।বাসদ (মার্কবাদি) পার্টি রাঙামাটি জেলায় বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বোধিসত্ব চাকমাকে হারানোর পর জেলায় তাদের সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম নামমাত্র রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) রাঙামাটি জেলায় বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) রাঙামাটি জেলায় করোনাকালিন কোন ধরনের ত্রান কার্যক্রম পরিচালনা করিতে দেখা যায়নি। এমন কি এ আঞ্চলিক দলটির পক্ষ থেকে কোন ধরনের বিবৃতি পর্যন্ত গণমাধ্যমে প্রেরণ করেনি।
রাঙামাটিতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ, জাতীয় পর্যায়ের বিরোধী দল বিএনপি, কিন্তু এ জেলায় মুলতঃ বিরোধী দল হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল)। করোনাকালিন এ আঞ্চলিক দলটি একেবারেই নিরব, দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা রয়েছেন শতভাগ হোম কোয়ারেন্টিনে।

রাঙামাটি শহরের দলের সক্রিয় নেতা-কর্মীরা কোয়ারেন্টিন পালন করছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যান্ত এলাকায় গিয়ে, জানা গেছে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করে সংগ্রামী জীবণ যাপন করেছে।
করোনাকালিন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) এর নিরব থাকার কারণটি রাজনৈতিক কৌশল অথবা দলটির বন্ধু সংগঠন ক্ষমতাসীন দলের সাথে বুঝাপড়ার অংশ হতে পারে বলে স্থানীয় বিজ্ঞমহল ধারনা করছেন।
কিন্তু এ আঞ্চলিক দলটির নিরবতা এবং বিগত ৯ মাসের মধ্যে আগের মতো কোন কর্মসূচি না দেয়াতে রিতিমত স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে! পাহাড়ে রাজনীতি কোন পথে যাচ্ছে ?
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) দলটির একজন কেন্দ্রীয় নেতা তার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, মামলা, হামলা, গুম, অপহরণ, ধর্ষণ, ক্রাসফায়ার,ক্ষমতাসীন দল ও তাদের প্রশাসন দ্বারা সৃষ্টিকৃত সন্ত্রাসীদের কারণে পিসিজেএসএস-মূল এর নেতা-কর্মীরা সরে আছেন। তাছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে যে হারে মিডিয়া সন্ত্রাস চলছে পিসিজেএসএস-মূল তা গভিরভাবে পর্যাবেক্ষণ করছে, তাদের দলীয় কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে চলছে বলে তিনি দাবি করেন।
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) রাঙামাটি জেলায় বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) রাঙামাটি জেলার সংগঠক শান্তিদেব চাকমা জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসনের মদদে সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত ইউপিডিএফ নেতা-কর্মীদের ওপর গায়েবী মামলা, অস্ত্র দ্বারা হামলা, গুম, অপহরণ, ক্রাসফায়ার করে হত্যা, ইউপিডিএফ নারী নেতা-কর্মীদের ওপর ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটছে।
তার দাবি সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থা উপজেলা পর্যায়ের জুনিয়র নেতাদের দিয়ে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক) নামের সংগঠন তৈরী করে আমাদের জুম্মদের ভিতর বিভেদ সৃষ্টি করেছে, এরা তো লোভি, লোভে পড়ে নিজস্ব জণগোষ্ঠীর মানুষকে গুলি করে মারছে, এদের ভুল একদিন, না একদিন এরা বুঝতে পারিবে, একদিন হয়তো তাদের মধ্যে সচেতনতা ফিরে আসবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) এবং ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) এর মধ্যে আগের মত লড়াইয়ের সংবাদ শোনা যায়না কেন ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের উভয় সংগঠনের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে, যার-যার এলাকায় সে সাংগঠনিক কাজ করবে। তিনি এবং তার সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কেমন আছেন জানতে চাইলে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) কেন্দ্রীয় নেতা ও রাঙামাটি জেলার সংগঠক শান্তিদেব চাকমা বলেন “আমরা খুব কষ্টে আছি”।
সংস্কারপন্থি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক), বাঙ্গালী গণ পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমধিকার আন্দোলন ও পার্বত্য নাগরিক কমিটি রাঙামাটি জেলায় বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এসব সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম এ জেলায় সীমিত পরিসরে চলছে বা রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসি বাঙ্গালী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা ইউছুফ আলম রাঙামাটিতে বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাস চলাকালিন অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

তবে পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসি বাঙ্গালী সংগঠনের কার্যক্রম এখন চোখে পড়ার মত বা উল্লেখযোগ্য তেমন নাই।
এদিকে নবগঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের রাঙামাটি জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
তবে ইদানিং রাঙামাটি জেলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক কার্যক্রম তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বান্দরবান জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং আক্রান্ত হয়েছেন এবং গুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে হারিয়েছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় জেলায় উল্লেখযোগ্য করোনাকালিন কর্মহীনদের মাঝে ত্রান সহায়তা প্রদান করেছেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলায় জাতীয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে। এ জেলায় জাতীয় পর্যায়ের মাত্র ২টি রাজনৈতিক দল সক্রিয়।
এছাড়া বান্দরবানে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল), বাঙ্গালী গণ পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমধিকার আন্দোলন, মগ পার্টি (প্রশাসনের চাপে বিলুপ্ত), পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসি বাঙ্গালী সংগঠন ও পার্বত্য নাগরিক কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ জেলায় নতুন হিসাবে আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছে।

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতা বীর বাহাদুর উশৈসিং বান্দরবান-৩০০ আসনের সংসদ সদস্য এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী।
বান্দরবান জেলা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কমিটিতে তিনি কোন বড় পদবীর কেউ নয়, বীর বাহাদুর হচ্ছেন জেলার কমিটির একজন সদস্য, তার পরও বান্দরবানের অভিবাবক খ্যাত এই নেতা ৬ বারের এমপি, ২ বার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন, ১ বার পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এবারে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের চট্টগ্রাম বিভাগের ২ বারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে কেন্দ্রীয় নেতার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বান্দরবান পার্বত্য জেলাকে একটি অন্যতম আধুনিক জেলায় পরিনত করেছেন এছাড়া সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সমানভাবে জনপ্রিয় একজন নেতা বীর বাহাদুর এমপি বলে দাবি করেন তার অনুসারীরা।

বান্দরবান জেলা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কমিটিতে বড় ধরনের কোন কোন্দল না থাকলেও জেলা আওয়ামীলীগের নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, আর এ আভিযোগ করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক কাজী মো. মুজিবুর রহমান, তিনি বলেন, জেলা আওয়মীলীগ সভাপতি ক্যশৈহ্লা মারমা বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১, আবার ২০০৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত একই ব্যক্তি বান্দরবান পার্বত্য জেলা ক্ষমতা আখড়ে আছেন, ১শত জনের চাকুরী হলে ৯৫ জন ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীর সম্প্রদায় ভুক্ত লোকজন চাকুরী পায়, আত্মীয় করণের কারণে দলের ত্যাগী বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের লোকজন চাকুরী পায় না। একজন মানুষ ছাড়া কি বান্দরবান আওয়ামীলীগে আর ২য় জন কেউ না ? অন্যায়ের প্রতিবাদ করিলে অথবা সত্য কথা প্রকাশ করিলে দলে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়।
এবিষয়ে বান্দরবান জেলা আওয়মীলীগ সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এবিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি।
তবে বান্দরবান জেলা আওয়মীলীগের গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ৭ জানুয়ারী-২০১৫ সালে রাজার মাঠে বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে হামলা করা হয়, ঐ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালিন সভাপতি এইচ এম বদিজামানসহ ২০ জন ছাত্রলীগ নেতা আহত হয় এ ঘটনার মদদ দাতা হিসাবে তৎকালিন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কাজী মো. মুজিবুর রহমানকে জেলা কমিটির সভা করে অনাস্থার মাধ্যমে বহিস্কার করা হয়েছে।

এবিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক কাজী মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ৭১ জন সদস্যের ভিতর ৬৯ জন সদস্য আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রধান করেছে, এটা আমার বিরুদ্ধে গভির ষড়যন্ত্র করা হয়ে। দলের তৃর্ণমুলের নেতা-কর্মীরা আমার সাথে ছিলো,আছে এবং থাকবে আমি আশাবাদি। কিছু কিছু নেতা দলের নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি আর অনিয়মের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছে, আর দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীরা ঠিকমত দু’বেলা খেতে পায় না, সাধারন মানুষের জন্য কথা বলায় আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি একজন ভাল মানুষ, মন্ত্রী তৃর্ণমুল পর্যায়ের অনেক বিষয় আছে খবর নিতে পারেন না, মন্ত্রী তিন পার্বত্য জেলার দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বান্দরবানে একটি মহল ফায়দা লুটছে।
দলের নাম ভাঙ্গিয়ে মো. শাহেদ গংরা অপকর্ম করার কারণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তাদের ছাড় দেয়নি ঠিক তেমনি এরাও ছাড় পাবেনা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা হাত থেকে বলেন আওয়ামীলীগ নেতা কাজী মো. মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল-বিএনপি’র বান্দরবান জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বান্দরবানে বিএনপিতে প্রকাশ্যে কোন্দল রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে, এদের মধ্যে একটি গ্রুপে নেতৃত্বে রয়েছে বান্দরবান স্থানীয় সরকার পরিষদের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান সাচিংপ্রু জেরী এবং অপর গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ম্যামাচিং মারমা।

বান্দরবান জেলায় বিএনপির দলীয় কার্যক্রম অনেকটাই সীমিত পরিসরে চলছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) বান্দরবান জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
বান্দরবানে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) বিগত দিনে সাংগঠনিক ভাবে শক্ত অবস্থানে থাকলেও আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের হত্যার দায়ে পিসিজেএসএস-মূল এর কেন্দ্রীয় নেতাসহ জেলা ও উপজেলার গুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে ডজন খানিক মামলা দায়ের পর বেশী ভাগ নেতারাই এখন জেলখানায় আছে।
করোনাকালিন বান্দরবানে আওয়ামীলীগ এবং দলটির অঙ্গসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মী অস্ত্রধারীদের হাতে নিহত হয়। এসব নেতা-কর্মী হত্যাকান্ডের সন্দেহের তীর পিসিজেএসএস-মূল এর দিকে।

আর যে সব পিসিজেএসএস-মূল এর নেতা-কর্মী জামিনে মুক্তি পেয়ে বাইরে আছে তারাও এলাকা ছাড়া বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
দলীয় ভাবে করোনাকালিন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) এর অবস্থান বান্দরবানে অনেকটাই অগোছালো এবং নেতৃত্ব শূণ্য অবস্থায় বলে জানা গেছে।
বান্দরবানে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) এর অবস্থান ছিলো এখন নাই।
বান্দরবানে বর্তমান সময়ে বাঙ্গালী গণ পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমধিকার আন্দোলন, মগ পার্টি (প্রশাসনের চাপে বিলুপ্ত) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসি বাঙ্গালী সংগঠনের কোন কার্যক্রম নাই।
তবে এ জেলায় বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক কাজী মো. মুজিবুর রহমান নেত্বত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক কার্যক্রম শক্তিশালী হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি জেলায় জাতীয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে।
এ জেলায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল), সংস্কারপন্থি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক), বাঙ্গালী গণ পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমধিকার আন্দোলন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসি বাঙ্গালী সংগঠন, পার্বত্য নাগরিক কমিটি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম রয়েছে।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনসহ সহযোগী সংগঠনের খাগড়াছড়ি জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে কোন নেতা-কর্মীকে হারায়নি বলে দলটির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করেছেন।
খাগড়াছড়ি-২৯৮ আসনের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি জেলা ও উপজেলায় করোনাকালিন দুস্থ ও কর্মহীনদের ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. জাহিদুল আলম এবং সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার মধ্যে দলীয় অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহন ও বাস্তবায়ন নিয়ে মত বিরোধ রয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাথে যুক্ত আছেন এধরেনের একজন আওয়ামীলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়েছেন, সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. জাহিদুল আলম সাহেব দলের নীতি নির্ধারকদের সিদ্ধান্ত মানতে চান না, খাগড়াছড়ি থেকে যখন কল্পরঞ্জন চাকমাকে দলীয় মনোনয় দিয়ে ছিলেন তখন মো. জাহিদুল আলম কেন্দ্রীয় নেতাদের এ সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছেন, যখন আবার তেজেন্দ্রল লাল ত্রিপুরাকে দল মনোনয়ন দিয়েছে তখনও তিনি বিরোধীতা করে নিজেই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে খাগড়াছড়িতে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন, এবার যখন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন তখন তিনি দলের নীতি নির্ধারকদের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেন, সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. জাহিদুল আলম দলের মুল স্রোতের সাথে মিশে থাকতে চান না।
ইতোমধ্যে উভয়ের মত বিরোধ পরিহার করে সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. জাহিদুল আলমকে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা কমিটিতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এ দিকে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দিদারুল আলম বলেন, খাগছড়িতে দলে কিছু ভুল বুঝাবুঝি রয়েছে, এটা বড় ধরনের নয়, সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার নেতৃত্বে আমরা সকলে এখন ঐক্যবদ্ধ, সমস্যা থাকলে আলাপ আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমধান করা হবে।
খাগড়াছড়িতে জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগে এবং দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনে বহিরাগত, অনুপ্রবেশকারী বা আওয়ামীলীগে নতুন যোগদানকারী জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগসহ অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন কমিটিতে আছে বলে তিনি ¯^ীকার করেন, তিনি বলেন, আমরা এবিষয়ে আমাদের দলের করণীয় কি ? সে বিষয়ে এমপি সাহেবের সাথে কথা বলেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীরা এখনো বহালতবিয়তে আছে, তবে এদের বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়নি।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নতুন পরিচলনা পরিষদ গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি এখনো দলের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে রয়েছে, জেলা কমিটিতে জেলা পরিষদের পরিবর্তন কিংবা নতুন করে জেলা পরিষদের পরিচালন পরিষদ গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
চলিত বছরের ডিসেম্বর মাসে পৌরসভা নির্বাচন এবং তার পর ইউপি নির্বাচন বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, নির্বাচন আসলেই দলের ত্যাগী নেতা-কর্মী এবং অনুপ্রবেশকারীরা মনোনয়ন চাইবে, জেলা ও উপজেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ অবশ্যই তারা তাদের নেতা-কর্মীদের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন।
খাগড়াছড়ি জেলা শহরে আঞ্চলিক দল সমুহের অবস্থান কি ? জানতে চাইলে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দিদারুল আলম বলেন, পৌরসভা এলাকায় আঞ্চলিক দল সমুহের তেমন কোন অবস্থান নাই, এসব আঞ্চলিক দল সমুহের প্রভাব উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে। জেলা সদরে এসব দল থেকে নির্বাচনে কোন প্রার্থী জয়ী হতে পারেনি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল-বিএনপি খাগড়াছড়ি জেলায় বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।

দলটির পক্ষ থেকে জেলায় করোনাকালিন ত্রান সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে বিএনপি সাবেক সংসদ সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রয়ী নেতা আব্দুল ওয়দুদ ভুয়ার নেত্বত্বে ঐক্যবদ্ধ।
তবে দলটির দলীয় কার্যালয়ে বাইরে কোন ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি মিলেনা বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি’র একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা তার নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আরো জানান, এ জেলায় বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা ক্ষমতাসীদের দ্ধারা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হচ্ছে গায়েবী মামলার কারণে অধিকাংশ নেতা-কর্মী আজ ঘর-বাড়ি ছাড়া, এর বাইরে আর বেশী কিছু বলতে তিনি রাজি হয়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) খাগড়াছড়ি জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) এর ঘাঁটি বলে পরিচিত খাগড়াছড়ি জেলায় এ আঞ্চলিক দলটি জেলা শহরে অস্থিত্ব সংকটে তবে এ জেলায় মাত্র ২/১ উপজেলা পর্যায়ে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এর কারণ হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-মূল) ভেংগে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল), সংস্কারপন্থি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা), ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক) দল-উপ দল খাগড়াছড়ি জেলায় সৃষ্টি হয়েছে।

এ জেলায় বছরের বেশীর ভাগ সময়ে উল্লেখিত দল-উপ দল সমুহের মধ্যে আদিপত্য বিস্তার ও শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় দলের সদস্যরা লিপ্ত হয় এছাড়া চাঁদাবাজি, অপহণ, গুম ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা এ জনপদে প্রতিনিয়ত ঘটছে।
ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) খাগড়াছড়ি জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
খাগড়াছড়িতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) প্রসিত বিকাশ খীসার নেত্বত্বে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম শক্তিশালী থাকলেও এই পার্বত্য চুক্তি বিরোধী আঞ্চলিক দলটি ভেংগে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক) নামের আরেকটি সংগঠন সৃষ্টি হলে ইউপিডিএফ-মূল এর কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ে এবং ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাতা প্রসিত বিকাশ খীসা আত্মগোপনে চলে যায়।

অনেকটাই পরিস্থিতির শিকার হয়ে পিসিজেএসএস-মুল এর ন্যায় ইউপিডিএফ-মূল সংগঠনটিও খাগড়াছড়ি জেলা শহরে তাদের অফিস ঘুটিয়ে নেয়। তবে খাগড়াছড়িতে উপজেলা পর্যায়ে ইউপিডিএফ-মূল এর সদস্যরা সক্রিয় রয়েছে। করোনাকালিন এ আঞ্চলিক দলটির পক্ষ থেকে ভুমি রক্ষা, নারী ধর্ষণ, হত্যাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
সংস্কারপন্থি বলে পরিচিত পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা) খাগড়াছড়ি জেলায় বৈশিক মহামারী করোনা ভাইরাসে তাদের একজন গুত্বপূর্ণ সাবেক গেরিলা নেতাকে হারিয়েছেন।
খাগড়াছড়িতে সংস্কারপন্থি পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা) গ্রুপের অবস্থা অত্যান্ত ভাল ক্ষমতাসীন দলের সাথে এই আঞ্চলিক দলের সর্ম্পক থাকার কারণে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন তাদের দলীয় নেতা-কর্মীরা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-এমএন লারমা) গ্রুপের প্রথম সারির বেশীর ভাগ নেতার মৃত্যুতে এ দলটি নেতৃত্ব শূণ্যতায় ভুগছে।

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক) খাগড়াছড়ি জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।
প্রতিপক্ষের অভিযোগ, একটি মহলের ছত্রছায়াতে খাগড়াছড়ি জেলা শহরে ও কয়েকটি উপজেলায় এবং রাঙামাটি জেলার কয়েকটি উপজেলা পর্যায়ে এ দলটির কার্যক্রম চলছে।
মুলতঃ ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-মূল) প্রসিত বিকাশ খীসার গ্রুপ ভেংগে বা ভাগ হয়ে এই ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক) সংগঠনটি সৃষ্টি হয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা শহরে ভিতর ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রোটিক ফ্রন্ট গণতান্ত্রিক (ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক) তাদের দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে এবং ৪টি আঞ্চলিক দলের মধ্যে ইউপিডিএফ- গণতান্ত্রিক এ জেলায় বর্তমান সময়ে সবচেয়ে ভাল আবস্থানে রয়েছে।
বাঙ্গালী গণ পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমধিকার আন্দোলন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসি বাঙ্গালী সংগঠন ও পার্বত্য নাগরিক কমিটি নামের সংগঠন সমুহ খাগড়াছড়িতে এক সময়ে তাদের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় থাকলে বর্তমান সময়ে নিশক্রয় অবস্থায় রয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলায় বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাসে গুত্বপূর্ণ কোন নেতা-কর্মীকে হারানো তথ্য পাওয়া যায়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল নাগরিকের অধিকার সংরক্ষণ করে সময়পযোগি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি রিভিউ করার দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতা কাজী মো. মুজিবুর রহমান।
খাগড়াছড়ি জেলায় এবং এ জেলার প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। পার্বত্য এলাকায় নতুন ভাবে গঠিত এ সংগঠনটি পার্বত্য এলাকার বাঙ্গালীদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে, করোনাকালিন এ আঞ্চলিক সংগঠনটি পক্ষ থেকে অপহরণ ও হত্যার বিষয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সাংগঠনিক কার্যক্রমের তৎপরতা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় উল্লেখযোগ্য বলে স্থানীয়দের ধারনা।

জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক দল সমুহের নিজেদের মধ্যে কোন্দল গ্রুপিং-লবিং প্রকাশ্যে বা গোপনে লেগেই আছে, জাতীয় রাজনৈতিক দল সমুহের মধ্যে দুরত্ব বেড়েছে এবং আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল সমুহের মধ্যে দুরত্ব বেড়েছে সর্বশেষ ক্ষমতাসীন দলের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সম্পাদনকারী আঞ্চলিক দলের সাথে দুরত্ব বেড়েছে। এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মানুষ আর বাঙ্গালী সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে দুরত্ব বেড়েছে (রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) করোনাকালীন স্থবিরতার পর পার্বত্য জেলায় রাজনীতি সংকট পরিস্কার, লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে পাহাড়ে রাজনীতি কোন পথে ?

 

#CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর