মোঃ কামাল হোসেন যশোর থেকে:
যশোরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক মাসুদ পারভেজ রাজুর (৩০) বাড়িতে বিষ নিয়ে অনশনে বসেছেন এক কলেজ ছাত্রী প্রেমিকা (১৮)। শুক্রবার বিকেল থেকে সদর উপজেলাধীন নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের শাখারিগাতী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। জানা যায়, প্রেমিকা উর্মি আক্তার (১৮) বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার উত্তর কাটাদিয়া গ্রামের হারুন হাউলাদারের মেঝ মেয়ে ও বরিশাল সরকারী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ব্যবসায়ী শিক্ষার ছাত্রী। এ ঘটনার পর থেকে প্রেমিক রাজু বাড়ি থেকে আত্নগোপনে রয়েছে। প্রেমিক রাজু শাখাঁরীগাতী গ্রামের পশ্চিম পাড়ার আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে এবং নিজ বাড়িতে গড়ে তোলা একটি কোচিং সেন্টারের পরিচালক। প্রেমিকা বলেন, আমার বড়বোনের স্বামী (দুলাভাই) স্থানীয় হিরো কোম্পানিতে চাকরির সূত্রে রাজুর বাড়ি থেকে ৩০ গজ দুরে একটি বাসাবাড়িতে ভাড়া থাকছেন গত কয়েকবছর।
২০১৮ সালের জুন মাসে আমি বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসলে রাজু আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। গত ছয় মাস আগে দ্বিতীয় দফায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসলে আবারও রাজু আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং বিয়ে করার আশ্বাস দেয়। আমার বাবা আমার বিয়ের জন্য পাত্র দেখে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করার পর রাজু আমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে করতে নিষেধ করে নিজেই বিয়ে করবে বলে আস্বস্ত করে। বিয়ের আসর জমার আগেই আমি বিয়েটি প্রত্যাখ্যান করি পরে রাজুর কথামত আমি গত শুক্রবার বরিশাল থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে বিয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হই। পথিমধ্যে একাধিক বার রাজুর সাথে আমার ফোনে আলাপ হলেও যশোরে আসার পরে রাজু পালিয়ে যায়।প্রেমিক বিয়ে না করলে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নেবেন বলেও জানান ওই কলেজছাত্রী। এ নিয়ে শুক্রবার বিকেল থেকে এলাকায় জনসাধারণের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ সময় প্রেমিক রাজুর বাড়িতে ভিড় জমান এলাকাবাসী। রাজুর পরিবার সূত্রে জানা যায় মেয়েটি তার ব্যাগে বিষের ট্যাবলেট ভর্তি একটি প্লাস্টিকের (Rex Antioxidant Tablet) লেখা বোতল সাথে নিয়ে এসেছে এবং ইতিমধ্যেই একবার আত্যহত্যার চেষ্টা করেছে।
বিষয়টি সমাধানে দফায় দফায় শালিশি বৈঠক হলেও আজ চতুর্থ দিনেও ছেলেপক্ষের পরিবার কোন সুষ্ঠু পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলে জানায় এলাকাবাসী। পলাতক থাকায় এ নিয়ে প্রেমিক রাজুর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। যানা যায় রাজু তার দুলাভাই মতিনের আশ্রয়ে রয়েছে। তবে রাজুর পরিবারের সদস্যরা বলেন রাজুর সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক নেই। তবে একই এলাকায় বোনের বাড়িতে কয়েকবার বেড়াতে আসেন মেয়েটি সে সুবাদে তাদের মধ্যে পরিচয় থাকতে পারে। যশোর সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের আলী জানান, বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে আলোচনা চলছে। দুই পক্ষে একটি শান্তিপূর্ণ মীমাংসার সময় নিয়েছে।