শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১২:১২ অপরাহ্ন

ই-পেপার

সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঐতিহ্যবাহী মন্দিরগুলো

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০, ১২:১৬ অপরাহ্ণ

তাড়াশ সিরাজগঞ্জ:
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরের মন্দিরগুলো সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের উপক্রম হচ্ছে। মন্দিরগুলোর জায়গা বেদখল হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টদের প্রতি মন্দিরগুলো রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ সচেতনমহল।

জমিদার আমলে তৎকালীন জমিদার বনওয়ারী লাল রায় বাহাদুরের সময়ে গোবিন্দ মন্দির, শিবমন্দির, ত্রিদল মঞ্চ, গোপাল মন্দিরসহ ৬-৭টি মন্দির নির্মিত হয়। মন্দিরগুলো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা অর্চনার পাশাপাশি তীর্থস্থানের মর্যাদা নিয়ে এখনও অধিষ্ঠিত। কথিত আছে, মন্দিরগুলোর কারণে সারা বিশ্বের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তাড়াশ গুপ্ত বৃন্দাবন খ্যাত। কিন্তু যথাযথ সংস্কারের অভাবে ধ্বংস হতে বসেছে এগুলো।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ১১০৫ বঙ্গাব্দে তাড়াশে ২ একর ৬ শতক জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত গোবিন্দ মন্দিরটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গোবিন্দ মন্দির। বর্ণিল কারুকার্যে গড়া এ মন্দিরে চলনবিল অঞ্চলের সনাতন ধর্মের লোকেরা পূজা করে থাকেন। এছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় এ মন্দির। কিন্তু মন্দিরটির বর্তমান অবস্থা নাজুক। তবে স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে সম্প্রতি কিছু সংস্কার করে মন্দিরটি রক্ষার চেষ্টা করছেন।

একই অবস্থা ১১০০ বঙ্গাব্দে নির্মিত শিবমন্দিরের। টেরাকোটায় সমৃদ্ধ ১৭ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মিত মন্দিরটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত যাদের সন্তান হয় না তারা এ মন্দিরে পূজা দিয়ে সন্তান প্রার্থনা করেন। কিন্তু বর্তমানে পাশাপাশি দুইটি শিবমন্দির শ্রীহীন হয়ে পড়ছে। টেরাকোটাগুলো ওঠে যাচ্ছে। সংস্কারের অভাবে ৪০০ বছরের পুরনো শিবমন্দির ধ্বংস হতে বসেছে।

এদিকে ১৩৩৯ বঙ্গাব্দে ৮ শতক জায়গার ওপর প্রতিষ্ঠিত নির্মিত ত্রিদল মঞ্চ মন্দিরটির পলেস্তারা ও ইট-সুরকি খুলে পড়ে যাচ্ছে। এখানে রশিক লাল বিগ্রহ স্থাপন করে নিত্য পূজা দেওয়া হতো। ঝুলন উৎসবে এপার-ওপার বাংলার মনীষীরা ভিড় জমাতেন এ মন্দিরে। সংস্কারের অভাবে মন্দিরটি ধ্বংসের দ্বারপ্রাান্তে রয়েছে।

একই অবস্থা ১৩০০ সালের গোড়ার দিকে নির্মিত উপজেলার বিনোদবিহারী ও গোপাল মন্দিরের। মাসব্যাপী ঝুলন উৎসব, দুগ্ধ স্নান উৎসবসহ নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে হাজারো মানুষের তীর্থস্থানে পরিণত হয় এ মন্দিরগুলোতে।

এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা সনাতন সংস্থার সভাপতি সনজিত কর্মকার বলেন ‘বিভিন্ন সময়ে সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিকট মন্দিরগুলো সংস্কারের জন্য লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। দ্রুত মন্দিরগুলো সংস্কার করে হাজারো ধর্মালম্বীদের পুজা অর্চনা করার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানাই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর