পাবনার চাটমোহর উপজেলার সমাজ বাজারে অবস্থিত জারিফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রথমবারের মতো সফলভাবে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি নবজাতকের জন্ম দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকালে দক্ষ চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতক দুজনই সুস্থ আছেন।
প্রসূতি মা স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রে ঝুঁকিতে থাকায় চিকিৎসকদের পরামর্শে সিজার অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা ব্যবহার করে নিরাপদভাবে অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন হয়।
অস্ত্রোপচারটি পরিচালনা করেন ডাঃ মাহজাবিন মাইশা, তিনি এমবিবিএস ডিগ্রিধারী এবং স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি সেবায় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তিনি পেইন অ্যান্ড অবস্টেট্রিক কেয়ার ও সিসিডি (ব্যাচড) কোর্স সম্পন্ন করেছেন এবং নিরাপদ সিজার ও নরমাল ডেলিভারি পরিচালনায় অভিজ্ঞ।
ডাঃ মাহজাবিন মাইশা বলেন, “প্রসূতি মা ও নবজাতকের সুস্থতাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। সঠিক সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সঠিক চিকিৎসা প্রয়োগ করায় আজকের সিজার সফল হয়েছে। মা ও সন্তান দুজনই বর্তমানে স্থিতিশীল আছেন — এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।”
সাংবাদিক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলপন, গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রসারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে জারিফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার। চাটমোহর উপজেলার গ্রামীণ এলাকায় এখনো অনেক পরিবার শহরের উন্নত চিকিৎসা সেবা থেকে দূরে থাকে। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা দেখা দিলে সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশী। স্থানীয়ভাবে নিরাপদ প্রসূতি সেবা এবং অপারেশন সুবিধা না থাকায় অনেক সময় রোগীদের দূরের জেলা বা মেডিকেল প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়, ফলে খরচ ও ঝুঁকি বাড়ে।
এ বাস্তবতায় জারিফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সফল সিজার অপারেশন এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি এনে দিয়েছে। এখন গ্রাম পর্যায়েই দক্ষ চিকিৎসক, অভিজ্ঞ নার্স এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের মাধ্যমে নিরাপদ প্রসূতি সেবা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক মোঃ মানিক হোসেন বলেন,
“চাটমোহরের মানুষকে যেন দূরে যেতে না হয়, চিকিৎসা সেবা যেন তাদের কাছে আসে — এ লক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। গ্রামীণ মানুষের আস্থা অর্জনই আমাদের বড় সাফল্য।”
স্থানীয়দের মতে, “এলাকায় আগে সিজারসহ জটিল প্রসূতি সেবা পেতে দূরে যেতে হতো। এখন কাছেই নিরাপদ চিকিৎসা সেবা পাওয়ায় মানুষের কষ্ট কমবে এবং জরুরি সময় জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা বাড়বে।”