বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন

ই-পেপার

লামায় ধর্ষণ মামলার আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের লামায় স্বামীকে জেলে দিয়ে  স্ত্রীকে মারধর এবং ধর্ষণের ঘটনায়  অভিযুক্ত এক আসামি ছাড়া অন্য তিনজন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তারা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। অতিসাম্প্রতিক সময়ে সরেজমিনে অনুসন্ধান করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
 অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৬ সেপ্টেম্বর ২৫ ইং, রাত ২.৩০ মিনিট ঘটনায় লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের আটমাইল মুসলিম পাড়া (৬ নং ওয়ার্ড) বাসিন্দা আনসার আলীর পুত্র আশরাফুল ইসলাম এর স্ত্রী থানায় হাজির হইয়া এজাহার নামীয় ১. মোঃ আল আমিন (৩৬), পিতা চাঁন মিয়া, ২.আকবর হোসেন মেহেরাজ (৪২), পিতা -আনারুল হক, ৩. সাইফুল (৩৫),পিতা -মাজেদ আলী সরদার, এবং ৪.ইউছুপ রায়হান (৪৮),পিতা-মমিন গাজী সরদার অভিযুক্তগনণের মধ্যে ১ নং আসামী জেলে রয়েছেন। সেক্ষেত্রে ভূক্তভোগী একজন গৃহিণী। আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। আমার তিন সন্তানসহ বর্ণিত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আমার বসত বাড়িতে বসবাস করে আসছি। ঐ সময় আমার স্বামী কারাগারে আটক ছিল।
আসামীদের সাথে আমার স্বামীসহ শাশুর বাড়ির লোকজনের সাথে জায়গা জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একে অপরের বিরোধে মামলা মোকদ্দমা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামীরা প্রায় সময় আমাকে প্রত্যক্ষ -পরোক্ষভাবে আমার ক্ষতি করবে বলে হুমকি -ধামকি দিয়ে আসতেছিল। ২/৩ দিন আগে আমার বাড়ির পাশে সর্দারের দোকানে গেলে ১ নং আসামী আমাকে হুমকি দিয়ে বলে যে, আমি কিভাবে আমার স্বামীকে জেল থেকে মুক্ত করব দেখে নিব। গত ১৫.০৯.২০২৫ ইং রাত ১১ ঘটিকার সময় আমার সন্তানদের বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়ি। দুই ছেলে রাতে ঘুমানোর জন্য অন্য রুমে চলে যায়। আমি সবার শেষে চার বছরের শিশু সন্তান জন্নাতকে নিয়ে অন্য রুমে শুয়ে পড়ি।
১৬ সেপ্টেম্বর,২৫ দিবাগত রাত আড়াইটার দিয়ে ১-৪ নং আসামী আমার রুমের দরজা লাথি দিয়ে ভেঙ্গে প্রবেশ করে। দরজা ভাঙ্গার আওয়াজ শুনে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায় এরপর আমি প্রথমে মোবাইলের টচ লাইট জ্বালাই। মোবাইলের আলোতে দেখতে পাই পূর্বে বর্ণিত এজাহার নামীয় ১-৪ নং আসামী আমার খাটের পাশে দায়িয়ে আছে। ৩ নং আসামী সাইফুল আমার মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে ৪ নং আসামী রায়হানকে দেয়। তখন আমি চিৎকার করতে চাইলে সাইফুলের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমার মাথায় বারি মারলে কপালের ডাব পাশের মাথার উপর লেগে রক্তাক্ত জখমপ্রাপ্ত হইয়া ভীতস্ত্রস্থ হয়ে পড়ি। ২ নং আসামী আমার নাক মুখ চেপে ধরে,সাইফুল আমার হাত ধরে। ১ নং আসামী আল আমিন আমাকে খাট থেকে নামিয়ে মাটিতে শুয়ে ফেলে। সে আমার ইচ্ছার বিরোদ্ধে জোরকরে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় আমি বাধা দিলে আল আমিন আমার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় আঘাত করে। ২ ও ৩ নং আসামী সহযোগিতায় ১ নং আসামী আমাকে ধর্ষণকালে ৪ নং আাসামী আমার খাটের বালিশের নিচে রাখা গরু বিক্রির ৪০,০০০ চল্লিশ হাজার টাকা ও আমার কানে থাকা ৪ আনা ওজনের কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে রুমের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়।
একই তারিখ রাত আনুমানিক ৩ ঘটিকা সময় ১-৩ নং আসামী আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলে যে, এ বিষয়ে কাউকে জানাইলে আমাকে জানে মেরে লাশ ঘুম করে ফেলবে। আসামী চলে যাওয়ার পর রাত অনুমান ০৩.১৫ ঘটিজার সময় আমি আমার বাড়ির পাশে আমার ভাসুরের ঘরে গিয়ে আমার ভাসুর এবং শাশুড়ীকে ঘুম থেকে জাগিয়ে ঘটনার বিষয়ে বলিলে আমার ভাসুর এবং শাশুড়ী, সর্দার, স্থানীয় মেম্বার ও আশপাশের লোকজনদের ঘটনার বিষয়ে জানায়। তারা আমার বাড়িতে এসে আমাকে থানায় গিয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন। আমি আমার আত্মীয় -স্বজন,পাড়া প্রতিবেশিদের সাথে আলোচনা করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করি। এখনও অভিযুক্ত তিন আসামী ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী স্বামী আশরাফুল ও ভাসুর আবু হানিফ জানান, আমরা অসহায় হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। এটির আমরা সঠিক বিচার চাই।
দায়িদ্বপ্রাপ্ত তদ্ন্ত কর্মকর্তা সাব -ইন্সপেক্টর কাজল হালদার  বলেন, এ বিষয়ে ডিএনএ টেষ্টের জন্য নমুনা  ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সার্চসীট দাখিল করা হবে। এর মধ্যে ১ নং আসামী গ্রেফতার হয়েছেন। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর