বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪২ অপরাহ্ন

ই-পেপার

সাতক্ষীরার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় ভেড়িবাঁধ নির্মাণে উপকূলবাসীর মাঝে স্বস্তি

এম ইদ্রিস আলী, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: 
আপডেট সময়: সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:১৯ অপরাহ্ণ
Oplus_16908288

সাতক্ষীরার দ্বীপ ইউনিয়ন  গাবুরায় ৫০ টি প্যাকেজের আওতায় টেকসই মজবুত  ভেড়িবাঁধের মেগা প্রকল্পের ৫০% কাজ শেষ হয়েছে বাকি ৫০% কাজ ২০২৬ সালের শেষ হতে মার্চ এপ্রিল পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।‌‌
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগে নদী ভাঙ্গনের মত নানা সমস্যায় ভুগছে উপকূলীয় জনপদ সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। নদী বেষ্টিত এই দ্বীপ ইউনিয়নের মানুষকে পুনর্বাসন করতে সরকার হাতে নিয়েছে প্রায় ১০২০.১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুল প্রতীক্ষিত টেকসই বাঁধ নির্মাণ মেঘা প্রকল্প। এলাকার মানুষদের জন্য প্রকল্পটি নতুন এক আশার আলো হয়ে উঠেছে। বাঁধ নির্মাণ শুধু দুর্যোগ প্রতিরোধই করবে না, প্রকল্প টি দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনৈতিক, পর্যটন শিল্প, সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়নের পথ সুগম করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মেঘা প্রকল্পের আওতায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে উপকূলীয় মানুষের যেমন বাসস্থান, মৎস্যঘের রক্ষা পাবে তেমনি পর্যটন শিল্পের দুয়ার খুলতে শুরু করেছে। বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হলে সড়ক পথে সুন্দরবনে পর্যটক এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া এই অঞ্চলে গড়ে উঠবে নতুন আধুনিক রিসোর্ট, রেস্তোরা সহ পর্যটন নির্ভর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এতে করে উপকূলের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির হবে ঘুচবে বেকারত্ব। জানা যায়, ২০০৯ সালের ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের মানুষের জীবনে এক বিভীষিকাময় অধ্যায় নেমে আসে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ইউনিয়নের পাউবো’র বেড়িবাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। প্রাণ হারায় বহু মানুষ। গৃহহীন হয় পড়ে সহস্রাধিক পরিবার। গাবুরার জনপদ পরিণত হয় এক বিশাল লোনা পানির জলাভূমিতে। এরপর একে একে ঘূর্ণিঝড় মহাসেন, রোয়ানু, আম্পান, ইয়াস ও সিত্রাং প্রতিটি দুর্যোগের সময়ই বেড়িবাঁধ ভেঙে গাবুরা ইউনিয়ন বারবার প্লাবিত হয়েছে। বছরের পর বছর দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা এই উপকূলীয় মানুষ আজ নতুন করে আশা ও নিরাপত্তার আলো দেখতে পাচ্ছেন। পাউবো কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন টেকসই বাঁধ নির্মাণের মেঘা প্রকল্প ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখাতে পাচ্ছে।
২০২৪ সালে ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানলেও গাবুরা ইউনিয়নের কোথাও বেড়িবাঁধ ভাঙেনি। এলাকার মানুষজন ছিল নিরাপদে, অক্ষত ছিল বাড়িঘর। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে প্রথমবারের মতো গাবুরার বাসিন্দারা বুঝতে পেরেছেন একটি দৃঢ় ও পরিকল্পিত বাঁধ তাদের জীবন কতটা পরিবর্তন করতে পারে।
গাবুরা ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরেই নদীভাঙন ও প্লাবনের শিকার। টেকসই বাঁধ নির্মাণের ফলে উপকূলীয় ভাঙনের ঝুঁকি কমে এসেছে এবং মানুষজন আর ঘরবাড়ি হারানোর আতঙ্কে থাকবে না। বাঁধ টি মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী ভাবে নির্মিত হচ্ছে যাতে এটি আগামী কয়েক দশক ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে সক্ষম। সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকার জনমানুষের মাঝে প্রকৃতির  তান্ডবলীলা প্রতিনিয়ত জাগ্রত। অতীতের হারিকেন, সিডর, আইলা, বুলবুল, ইয়াস, ফনি নামীয় জ্বলোচ্ছাস এবং ঘুর্ণিঝড়ের মুহুর্ত বারবার পার করেছে।
সম্পদ আর জীবন হানির বিভিষিকাময় স্মৃতি নিয়ে জীবন যাপন করে চলেছে। সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকার হৃদয় স্পর্শী, মর্মান্তিক ঘনঘটা যেমনটি শঙ্কিত করে চলেছে অনুরুপ ভাবে উপকুলীয় এলাকায় টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মান কাজ শুরু হওয়ায় আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে। দেশের সর্ব দক্ষিনের  শ্যামনগর উপজেলার সর্বাপেক্ষা ঝুকিপূর্ণ ও প্রকৃতির হিংস্রতায় বারবার ক্ষত বিক্ষত ইউনিয়ন এই গাবুরা, সুন্দরবনের কোলঘেষে বঙ্গপোসাগরের অদুরের গাবুরাকে দ্বীপ ইউনিয়ন ও বলা হয়। ইতিহাস খ্যাত গাবুরা বহুবারই জলস্রোত এবং ঘূর্ণিঝড়ে লন্ড ভন্ড হয়েছে। এখানেই শেষ নয় চারিদিকে লবনাক্ত পানি বেষ্টিত, আর আগ্রাসী পানির রাক্ষুসে ছোবলে সারা বছরই অস্তিত্ব হুমকির মুখে দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা। গাবুরার প্রকৃতির শক্তির কাছে অসহায় জনসমষ্টির প্রত্যাশা ছিল স্থায়ী তথা টেকসই ভেঁড়িবাঁধ নির্মানের মাধ্যমে গাবুরাকে রক্ষা করা। বানের স্রোতে এই ইউনিয়নের ফসলিজমি, চিংড়ী ঘের ডুবে নদী আর সাগরের সাথে একাকার হয়েছে। গবাদিপশু ভেসে গেছে। হাজার মানব সন্তান আশ্রয়হীন হয়েছে। কঠিন, কঠোর জীবন সংগ্রামের পর মানব সন্তানরা আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু প্রতিনিয়ত, প্রতিমুহুর্তে চোখে মুখে আতঙ্ক, আমাবশ্যার কালোমেঘের ঘনঘটার মত প্রকৃতির অসীমক্ষমতা মোকাবিলা করার সাধ্য তাদের নেই। দিনে দিনে গাবুরার মানুষ যেমন সর্বস্ব হারিয়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর প্রানন্তকর প্রচেষ্টা চালিয়েছে অনুরুপ ভাবে বসতবাড়ী, সর্বপরি ভূ-খন্ড বিলীন হয়েছে। আশাবাদী, খুশি, নতুন ভাবে বাঁচবার, বসবাসের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে গাবুরা বাসি ইতিমধ্যে গাবুরা রক্ষায় হাজার কোটি টাকার অধিক ব্যয়ে মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। পঁয়তালি­শ হাজার জনগোষ্ঠীর গাবুরা অপরুপ সৌন্দর্য্যরে অধিকারী কিন্তু ছিল প্রাণহীন, নানান ধরনের বিপদের আশঙ্কা কিন্তু বাস্তবতা হলো হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গাবুরা রক্ষায় মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়ায় দ্বীপ ইউনিয়নটির জন মানুষের সীমানা পেরিয়ে সর্বত্র উদ্বাস, উৎসব আর আনন্দের ছোয়া। মহাকাজ প্রত্যক্ষ করতে ইতিমধ্যে গাবুরার দুর্গম এলাকা ও নির্মানাধিক কর্মযজ্ঞ পরিদর্শন করেছেন গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সহ পদস্থ কর্মকর্তাগন।
গত বছরে গাবুরার জনপদ তথা গাবুরাকে রক্ষা করতে এক হাজার বিশ কোটি টকার কাজ শুরু হয়। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের গাবুরা রক্ষার টেকসই বাঁধ নির্মান পরিদর্শনের পর জন মানুষের মাঝে কাজের গুনগত মান নিয়ে ও আশার সঞ্চার হয়েছে। এলাকা বাসি জানান সচিব গাবুরার জেলেখালী ও নেবুবুনিয়া সহ অপরাপর দুর্গম এলাকায় শুরু হওয়া মেগা প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করতে এবং কাজের গুনগত মান সরেজমিন প্রত্যক্ষ করেছিলেন। সে সময় তিনি নদীর মধ্যভাগে স্থাপনকৃত কার্গোতে অবস্থান নিয়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগের পরিমান, গুনগতমানে যাচাই করেন। পানি সম্পদ সচিব পাঁচ নম্বর পোল্ডারের অধিকতর ঝুকিপর্ণ দুর্গাবাটিক এলাকা পরিদর্শন করেন। তখন তিনি বলেছিলেন, কার্যদেশ অনুযায়ী সঠিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে।
গাবুরার অধিবাসিদের সুদিন আসছে, মেগা প্রকল্পটি পয়তালি­শ হাজার জনসমষ্টির গাবুরার জন্য আর্শীবাদ। শ্যামনগরের গাবুরা বাসি আগামী দিনের প্রকতির রুদ্র রোষ হতে বাঁচতে চলেছে।
এদিকে প্রতিবেদক সরেজমিনে ঘুরে দেখে বলেন, নদীভাঙনের ঝুঁকি কমার পাশাপাশি এলাকায় জমির চাহিদা ও মূল্য বাড়তে শুরু করেছে। টেকসই বাঁধের কারণে নিরাপদ বসবাস নিশ্চিত হচ্ছে, স্থানীয় বাসিন্দারা আরও স্থায়ী ঘরবাড়ি নির্মাণে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এতে স্থানীয় নির্মাণ খাতেও গতি আসবে এবং নতুন ব্যবসা ও পেশার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, “আইলার সময় আমরা অনেক কিছু  হারিয়েছি। তখন ঝড় জলোচ্ছ্বাস হলে মনে হতো আমাদের মৃত্যু নিশ্চিত কিন্তু বাঁধ নির্মাণে বেচে থাকার আশা সঞ্চার হচ্ছে সবার মাঝে। এখন কোনো ভয় লাগেনা। এখন মনে হয় সত্যিই কিছু একটা বদলেছে।
স্থানীয় নারী প্রতিনিধিরা জানান, “আগে পানির জন্য কয়েক কিলোমিটার হেটে পানি আনতে হত। বর্তমানে টেকসই বাঁধ হওয়ায় গ্রামেই সুপেয় পানি পাচ্ছি এটি আমাদের জীবনের বড় প্রাপ্তি।
স্হানীয় জনসাধারণ জানান, বাঁধের নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে গাবুরা ইউনিয়নের পাশেই থাকা সুন্দরবন হয়ে উঠেছে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। ইতিমধ্যে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। স্থানীয় হোটেল, রিসোর্ট, খাবার দোকান ও নৌবিহার কেন্দ্রিক ছোট ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে, তরুণদের কর্মসংস্থানে সৃষ্টি হওয়ায় বেকারত্ব লাঘবে ভূমিকা রাখছে। গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম মাছুদুল আলম জানান, মেঘা প্রকল্পটি গাবুরার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ায় গাবুরাবাসীর মনে স্বস্তি ফিরেছে। ইউনিয়নের মানুষ এখন খুবই নিরাপদবোধ করছে। প্রল্পটি এই এলাকার মানুষদের জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে।
গাবুরা টেকসই বেড়িবাঁধ প্রকল্পের তত্তাবধানকারি “সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড” পাউবো বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সালাউদ্দিন জানান, এই প্রকল্পে ২৮ কিলোমিটার টেকসই বাঁধ, ৮ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ, ৫টি নতুন স্লুইচ গেট, ১১টি ইনলেট এবং ৮টি খাল পুনঃখননের কাজ শেষ হয়ে গেছে। সব কয়টি পোল্ডারের কাজেরগতি মিলিয়ে বর্তমান গাবুরা মেঘা প্রকল্পের ৫০% কাজ শেষ হয়েছে বাকি ৫০% পার্সেন্ট কাজ শেষ হতে ২০২৬ সালের মার্চ এপ্রিল মাস পর্যন্ত লাগতে পারে ‌।‌‌ বর্তমানে কাজের রক্ষণাবেক্ষণের মত টুকটাক কাজ চলছে। ইতিমধ্যে এই এলাকার মানুষ এই প্রকল্পের সুফল পেতে শুরু করেছেন।
এদিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,পূর্বে সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার একটি দুর্গম দ্বীপ ইউনিয়ন ‌‘গাবুরা’তে চলাচলের মাধ্যম মোটরসাইকেল কিংবা নৌকা সীমাবদ্ধের ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো।
দ্বীপ ইউনিয়নটিতে এই প্রথমবারের মতো ইঞ্জিনচালিত ভ্যান মটরভ্যান চলাচল শুরু হয়েছে।
তবে ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলার পর থেকে গাবুরার অনেক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ, পাকা সড়ক কিংবা উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে যোগাযোগব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চলাচল শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইউনিয়নবাসী।
ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, প্রথম ধাপে হরিষখালী থেকে সোরা ব্রিজ পর্যন্ত ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চালু করা হয়েছে। এরপর পার্শ্বেমারী ও চাঁদনীমুখা পর্যন্ত এই সেবা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। সদ্য বিদায়ী শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রনি খাতুন বলেন, আমি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে শ্যামনগর উপজেলা বাসীর সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। গাবুরার মতো দুর্গম এলাকায় ইঞ্জিনচালিত যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভালো কাজের সকল উদ্যোগে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে ভবিষ্যতেও হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর