পাবনা জেলার ফরিদপুর ও সাঁথিয়া উপজেলায় যৌথ অভিযানে প্রায় ৪০ লাখ টাকার অবৈধ চায়না দুয়ারি জাল জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এই অভিযানে অংশ নেয় উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন।
অভিযান সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ফরিদপুর উপজেলার ডেমরা এলাকা এবং সাঁথিয়া উপজেলার রূপসী গ্রামে কয়েকটি ছোট কারখানায় অবৈধভাবে চায়না দুয়ারি জাল তৈরির কাজ চলছিল। এসব জাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাইকারি দরে বিক্রি করা হতো, যা স্থানীয় নদ-নদীর মাছ ধ্বংসে মারাত্মক ভূমিকা রাখছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সকালে দুটি উপজেলার প্রশাসন যৌথভাবে অভিযান চালায়। অভিযানে মোট ৫টি কারখানা থেকে প্রায় ৫৬,০০০ মিটার দৈর্ঘ্যের চায়না দুয়ারি জাল এবং জাল তৈরির বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করা হয়। পরে জব্দকৃত সব জাল ও সরঞ্জাম প্রকাশ্যে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। ধ্বংসকৃত জালের আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ফরিদপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল মোর্শেদ এবং সাঁথিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফ রায়হান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সুজিত কুমার মুন্সী, সাঁথিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা শামসুর রহমান, নাজির মো. জমির উদ্দিন সরকার, সেনাবাহিনী ও দুই উপজেলার পুলিশের কর্মকর্তারা।
প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা আশা করছেন, এ ধরনের নিয়মিত অভিযানের ফলে অবৈধ জাল উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ হবে, আর দেশের মৎস্যসম্পদ রক্ষা পাবে। তারা বলেন, চায়না দুয়ারি জালের কারণে ছোট মাছসহ জলজ প্রাণীর ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে নদীর মাছের প্রজননেও। এই অবৈধ জাল বন্ধে প্রশাসনের এমন অভিযান নিয়মিত হওয়া প্রয়োজন বলে মত দেন তারা।
অভিযান শেষে মৎস্য কর্মকর্তারা জানান, চায়না দুয়ারি জাল মাছের প্রজনন ও প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এই জাল নদীতে ছোড়া হলে ছোট মাছসহ ডিম ও পোনা ধ্বংস হয়ে যায়, ফলে ভবিষ্যতে মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ফরিদপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সানাউল মোর্শেদ বলেন, “আমরা দেশের জনগণের স্বার্থে এবং মৎস্যসম্পদ রক্ষায় নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছি। এ ধরনের অবৈধ কার্যক্রম যারা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”