বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

সাঁথিয়া নামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের আলোকে -মুফতি মাওলানা: শামীম আহমেদ 

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:১৫ অপরাহ্ণ

পাবনা জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী সাঁথিয়া উপজেলা। এই উপজেলার নামকরণ নিয়ে রয়েছে নানান কাহিনি, ইতিহাস ও জনশ্রুতি। প্রাচীন জনপদ হিসেবে সাঁথিয়া একসময় পরিচিত ছিল ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র হিসেবে। কিন্তু এই নাম “সাঁথিয়া” কীভাবে এল, সে বিষয়ে রয়েছে চমৎকার ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ।

একটি মত অনুযায়ী, প্রাচীন কালে এখানে “সাথী” নামে এক মহীয়সী নারীর বসবাস ছিল। তিনি ছিলেন দানশীল, ধর্মপরায়ণ ও সমাজসেবায় নিবেদিতপ্রাণ। মানুষের মুখে মুখে তাঁর নাম প্রচারিত হতে হতে স্থানটি “সাথীর আঙিনা” বা “সাথিয়া” নামে পরিচিত হয়ে ওঠে, যা সময়ের পরিক্রমায় “সাঁথিয়া” রূপ নেয়।

অন্যদিকে, ইতিহাসবিদদের আরেকটি মতে বলা হয়—“সাঁথিয়া” শব্দটি এসেছে “সাথ” বা “সাথে থাকা” অর্থ থেকে। প্রাচীন বণিকরা এ অঞ্চলে বিশ্রাম ও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের সময় এখানে “সাথীরা” নামে একে অপরের সঙ্গে মিলিত হতেন। সেখান থেকেই স্থানটির নাম হয় “সাথিয়া”, পরবর্তীতে “সাঁথিয়া”।

সাঁথিয়া শুধু নামেই নয়, ঐতিহ্যেও অনন্য। এখানকার লোকসংস্কৃতি, নৌকার গান, পল্লীগীতি, বাউল ঐতিহ্য ও কৃষিনির্ভর জীবনধারা এ জনপদের বৈশিষ্ট্য বহন করে আসছে যুগ যুগ ধরে। মুসলিম শাসনামলে এখানে ইসলাম প্রচারে ওলী-আওলিয়া ও আলেম-উলামাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, যা আজও স্থানীয় মসজিদ, মাজার ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রতিফলিত হয়।

সাঁথিয়া উপজেলার নাম যেন কেবল একটি ভৌগোলিক পরিচয় নয়, বরং এক ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার। এই নামের ভেতর লুকিয়ে আছে এক সময়ের সমাজ, সংস্কৃতি, মানুষের গল্প এবং তাদের পরম ভালোবাসার ইতিহাস।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর