যিনি সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি তার পরিশ্রম, সাহস, ইচ্ছাশক্তি, একাগ্রতা ও প্রতিভার সমন্বয়ে সাধারণ মানুষের সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই উল্লেখযোগ্য উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রেখে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। সর্বোপরি গরিব মেহনতি মানুষের প্রকৃত জনদরদী হিসেবে তিনি উপজেলায় ব্যাপক পরিচিতি ও জনপ্রিয়তার মাধ্যমে মানবতার ফেরিওয়ালা নামে খ্যাতি লাভ করেছেন।
বলতেছিলাম কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দত্ত এঁর কথা। তিনি ১১ নভেম্বর ২০১৮ সালে যোগদান করে সততা ও নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
উপজেলার হতদরিদ্র, অসহায় মানুষের উন্নয়নে তাঁর নিরন্তর প্রয়াস সচেতন মহলে প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে কর্মস্থলে নিজের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি।
ব্যক্তি জীবনে তিনি অত্যন্ত সৎ ও সময়নিষ্ঠা, সদা হাস্যোজ্জ্বল ও সাদা মনের মানুষ। তাঁর মাঝে কোনো অহংকার নেই। নিরহংকারী এই মানুষটি দলমত নির্বিশেষে আজ সকলের কাছে প্রিয়। মানবতার ফেরিওয়ালা নামে খ্যাত। সর্বোপরি কাজ করছেন অসহায়, হতদরিদ্র ও সাধারণ মানুষের কল্যাণে।
তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য সম্প্রতি এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে ট্যাগ অফিসার হিসাবে দায়িত্বে থাকাকালীন প্রচন্ড জ্বর ও মাথাব্যথা নিয়ে পরীক্ষা দিতে এসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া এক পরীক্ষার্থী পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। ঐ পরীক্ষার্থী পাকুন্দিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ও পৌর সদরের লক্ষীয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। অসুস্থ পরীক্ষার্থীর এমন পরিস্থিতিতে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দুই জন ডাক্তারকে ডেকে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের মাধ্যমে আলাদা কক্ষে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেন তিনি।
এছাড়াও গত ৬ নভেম্বর ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে অংশ নেন মোছাঃ তানিয়া সুলতানা দিপা। তার সঙ্গে ছিল মাত্র দুই দিনের নবজাতক শিশু। এ বিষয়টিও তাঁর নজরে আসলে পরীক্ষার্থীকে তার নবাগত শিশুর জন্য ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। এতেও ব্যাপক প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
শুধু তাই নয় উপজেলার হোসেন্দী পশ্চিম আতকাপাড়া গ্রামের মোছাঃ সুরমা আক্তারের বিবাহের যখন মাত্র চার মাস ঠিক তখনই হঠাৎ বজ্রপাতে মারা যান তার স্বামী। মৃত্যুর সময় দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল সুরমা। খবর পেয়ে আবারও মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দেন এই কর্মকর্তা। তাকে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে ভিডাব্লিউ’র আওতায় এনে দুই বছরের জন্য চালের কার্ড করে দেন এই মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দত্ত।
ইতোমধ্যে তিনি এসব কাজের জন্য সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মতাদর্শের মানুষের কাছে একজন দক্ষ, পরিশ্রমী হিসাবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। ভোক্তাভুগীর সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে একজন সফল ও জনপ্রিয় মহিলা অফিসার হিসেবে সর্বশ্রেণির মানুষের অন্তরে স্থান করে নিয়েছেন।
করোনা পরিস্থিতিতেও দিন রাত নিরলস ভাবে পরিশ্রম করে উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রতিটি কাজ অতি দক্ষতার সহিত সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন।
তিনি যেসব সেবা দিয়ে প্রশংসা খুঁড়িয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
১. আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি: দরিদ্র মহিলাদের খাদ্য নিরাপত্তা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ভিজিডি (VGD) কর্মসূচী, যেখানে মহিলাদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা। এছাড়াও, বিভিন্ন আয়বর্ধক কর্মসূচীতে মহিলাদের যুক্ত করা। ২. মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি: গর্ভবতী মা ও শিশুদের জন্য ভাতা প্রদান করা। এর জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ বা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করে আবেদন করতে হয়। ৩. বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম: নারী উন্নয়ন ও লিঙ্গ সমতা আনয়নের জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম, যেমন- যৌতুক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, জন্ম নিবন্ধন ও বিবাহ নিবন্ধন, এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দিবস পালন করা। ৪. প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ: মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ প্রদান করা। এর মধ্যে সেলাই প্রশিক্ষণ, বিউটিফিকেশন প্রশিক্ষণ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ৫. আইন ও অধিকার বিষয়ক সহায়তা: নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠন, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, বাল্যবিবাহ বন্ধ করা এবং নারীদের অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন আইনি সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করা। ৬. তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র: মহিলা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য ও পরামর্শ প্রদানের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তথ্য কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাওয়া যায়।
এছাড়াও মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম, মহিলা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিবন্ধন প্রদান মহিলা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে বাংলাদেশ মহিলা কল্যাণ পরিষদের অনুদান বিতরণ (বামকপ), জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক কার্যাক্রম। এসব সেবার পাশাপাশি, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে থাকে, যা নারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখে।