নওগাঁর রাণীনগরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে রেশমা বিবি (৪০) ও তার ছেলে রিমন হোসেন (১৭) প্রতিপক্ষের বেধড়ক মারপিটে গুরুত্বর আহত হয়েছে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। এ ঘটনায় ভোক্তভোগি রেশমা বাদি হয়ে রাণীনগর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রেশমা বিবির স্বামী আব্দুস সালাম একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। তার নামে গুয়াতা মৌজায় প্রায় ৮ শতাংশ জমি রয়েছে। ২০২৪ সালে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ছামছুজ্জামান মাত্র ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় জমিটি নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নেন, যদিও জমিটির প্রকৃত বাজারমূল্য ছিল প্রায় ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ছামছুজ্জামান জমিটি স্থানীয় আরেক ব্যক্তি রিপনের কাছে হস্তান্তর করে। এতে প্রতারিত হয়ে ভুক্তভোগী পরিবার আদালতে মামলা দায়ের করে। এছাড়াও জমি উদ্ধারের জন্য ২০২৪ সালের নভেম্বরে রেশমা বিবি নওগাঁ সেনা ক্যাম্পে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, ওই জমি আত্মসাতের জন্য ছামছুজ্জামান তার সহযোগী সাজ্জাকুলের বাড়িতে আব্দুস সালামকে আটকে রেখে সাজ্জাকুল রেশমাকে মোবাইল ফোনে কুপ্রস্তাব দিয়ে বলে আমার প্রস্তাবে রাজি হলে স্বামীকে বাড়ি ফেরত দেওয়া হবে, অন্যথায় তাকে আটকে রাখা হবে। রেশমা তার প্রস্তাবে কর্নপাত করে না।
এক পর্যায় গত ১৬ আগস্ট সকালে ছামছুজ্জামান ও তার সহযোগী এনামুল হক জোরপূর্বক ওই জমিতে ধান রোপণের চেষ্টা করে। এ সময় রেশমা বাধা দিলে ছামছুজ্জামান তার চুল ধরে মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর এনামুলসহ কয়েকজন এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায়ে ছামছুজ্জামানের হাতে থাকা লাঠি দিয়ে রেশমার মাথায় আঘাত করলে রেশমা গুরুতর জখম হন। মাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে ছেলে রিমনকেও মারধর করে, এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিলাফোলা ও রক্তাক্ত জখম হয়।
তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা মা–ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। তবে হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকে প্রকাশ্যে স্বাক্ষ্য দিতে সাহস পাচ্ছে না।
রেশমা বিবি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তারা জমি আত্মসাৎ করেছে। এখন আবার সেই জমি দখল করতে এসে আমাকে ও আমার ছেলেকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমি সেনা ক্যাম্পও থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি ন্যায়বিচার চাই।
এব্যাপারে অভিযুক্ত ছামছুজ্জামান ও তার সহযোগী এনামুল হক এর ফোন নাম্বার বন্ধ থাকায় তদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হাফিজ মোঃ রায়হান বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধের ঘটনায় আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।