শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০৩:২৩ অপরাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
অভয়নগরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত  নওয়াপাড়ায় ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির পক্ষ থেকে চাউল বিতরণ অনুষ্ঠিত  অভয়নগরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রাজ্জাকের সহযোগিতায় বিএনপি নেতা আফজালের দৃষ্টান্ত  ঘিওরে ব্যবসায়ীকে দাড়ি ধরে টানাটানির ও মারধরের আসামি গ্রেফতার  বান্দরবানে পাহাড় কাটায় আটক ১, সাংবাদিকের ওপর হামলা পাকুন্দিয়ায় জমকালো আয়োজনে কুমরী গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের মেগা ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত ভারুয়াখালী বসতভিটার দখল নিতে হামলা,গুরুতর আহত ৪, হুমকির মুখে মিনুআরা’র পরিবার পাকুন্দিয়ায় হাসনা হাবিব ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালিত

ভাঙ্গুড়ায় দুর্বৃত্তদের আগুনে নিঃস্ব ৭ পরিবার, অভিযোগ নিতে নারাজ পুলিশ

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫, ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

ঘর মানে শুধু টিন আর কাঠ নয়, সেখানে থাকে কারো শৈশব, কারো স্বপ্ন, কারো শেষ সম্বল। আর সেই ঘরই যদি একদিনের মধ্যে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়, তাহলে ওই মানুষের হৃদয় কতটা পোড়ে তা অন্য কারো বোঝার সাধ্য নেই। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের বৃদ্ধমরিচ গ্রামের কাজিপাড়ার শাহাদত হোসেনের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে ঘটে গেছে এমনই এক ট্র্যাজেডি। শাহাদত হোসেন কাজিপাড়ার মৃত বদিউজ্জামানের ছেলে। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকৃতি জানায় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শাহাদতের পরিবার।

জানা গেছে, গত ৯ জুন দিবাগত রাতে খানমরিচ ইউনিয়নের চন্ডিপুর সিকেবি আলিম মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী ও মসজিদের মোয়াজ্জেন আব্দুল গণিকে ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। পরদিন (১০ জুন) সকালে এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শাহাদতকে হত্যাকারী সন্দেহ করে পুলিশে সোপর্দ করে গ্রামবাসী। পরে গ্রামের কিছু লোক মব তৈরি করে শাহাদতের বাড়ির সদস্যদের মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। এরপর শাহাদতসহ তার ছয় ভাই ও বোনের ঘরে একযোগে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট শেষে অগ্নিসংযোগ করে। দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে আগুন। আগুনের শিখায় মুহূর্তেই ছাই হয়ে যায় এক পরিবারের সাতটি শাখার শত বছরের জীবনের অর্জন। আজ তারা খোলা আকাশের নিচে, খাবার ও নিরাপত্তাহীন অবস্থায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমরা মোট সাত ভাইবোন। আমাদের ঘরের নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণ, আসবাবপত্র, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ প্রায় কোটি টাকার সম্পদ দুর্বৃত্তরা মব তৈরি করে লুট করে নিয়ে গেছে। এরপর আগুনে সব জ্বালিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে দুইদিন ঘোরায়। পরে বলে, আদালতে যান। আমরা এখন রাস্তায় পড়ে আছি, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচার হয়।

ভুক্তভোগী পরিবারের আরেক সদস্য খাদিজা খাতুন বলেন, আমার স্বামীসহ আরো দুই দেবর প্রবাসে থাকে। তাদের দেওয়া সমস্ত স্বর্ণালংকারসহ টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। তারপর বাড়িতে আগুন দিয়ে নিঃস্ব করে দিয়েছি আমাদেরকে। কিন্তু থানায় গিয়েও কোন বিচার পাচ্ছি না, আমরা এখন কোথায় যাব? কার কাছে যাবে?

তবে ভুক্তভোগীদের বলা অভিযোগ অস্বীকার করে ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যার ঘটনায় মূল দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জীবন ও সম্পদের এমন ভয়ানক ক্ষতির পরেও পুলিশি সহায়তা না পাওয়ায় পরিবারগুলো চরম হতাশ। প্রশাসনের নীরবতায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভুক্তভোগী পরিবার এবং এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক এবং ক্ষতি গ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর