রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫ অপরাহ্ন

ই-পেপার

বাঙালির মুক্তির দূত বঙ্গবন্ধু

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: বুধবার, ১২ আগস্ট, ২০২০, ৪:১৬ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগস্ট আমাদের শোকের মাস। বেদনার মাস। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের ওই দিনে স্বাধীনতাবিরোধী কুচক্রী মহল এবং সামরিক বাহিনীর একদল বিপথগামী সদস্যের নৃশংসতায় বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ ১৮ জন শাহাদতবরণ করেন। ৪৫তম জাতীয় শোক দিবসে আমি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যসহ যারা ওইদিন শাহাদতবরণ করেছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। জাতির পিতার দূরদর্শী, সাহসী ও ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে বাঙালি জাতি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য। আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, নিজস্ব পতাকা ও জাতীয় সঙ্গীত। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু যখন সমগ্র জাতিকে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে নিয়োজিত, তখনই স্বাধীনতাবিরোধী কুচক্রীরা তাকে হত্যা করে।

 

এর মধ্য দিয়ে তারা বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করার অপপ্রয়াস চালায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল- অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রাষ্ট্রকাঠামোকে ভেঙে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করা। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ইতিহাস থেকে তার নাম মুছে ফেলার এবং বাংলাদেশের রাজনীতি পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে বাদ দেয়া সম্ভব হয়নি। ইতিহাসের যিনি স্রষ্টা, বাঙালি জাতির জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিয়ে যিনি এক অসাধারণ ইতিহাসের নির্মাতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি ও পরিচিতি অর্জন করেছেন, তার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার মতো ধৃষ্টতা ক্ষমার অযোগ্য। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ দুটি নাম, একটি ইতিহাস। এক ও অভিনব সত্তা। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পথিকৃৎ। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট গঠন, আটান্নর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ছেষট্টির ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ এ দেশের সাধারণ মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের সামনে থেকে জাতিকে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু। রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে সাধারণ সংগ্রাম করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠাই ছিল তার স্বপ্ন।

 

আমাদের দায়িত্ব বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া। তা হলেই আমরা চিরঞ্জীব এ মহান নেতার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারব। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে তার সুযোগ্যকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্র্য নিরসন ও সামাজিক উন্নয়নেও অর্জন এখন লক্ষণীয়। দারিদ্র্য ৬০ থেকে ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে ধাবমান। ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নসহ আর্থসামাজিক প্রতিটি সূচকে এ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ জাতি গড়ার পথে জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমি আহ্বান জানাই- বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হৃদয়ে ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করতে হবে এবং সব ষড়যন্ত্রকারীকে প্রতিহত করে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হবে। আর সেটাই হবে জাতির পিতার প্রতি আমাদের শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধাঞ্জলি।

অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম : উপাচার্য, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর