যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত হলেও ডাক্তার সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভয়নগর উপজেলার রোগীসহ যশোর সদরের একাংশের, নড়াইল, মণিরামপুর ও খুলনার ফুলতলা উপজেলার রোগীরা ও ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন। সেই জন্যই অস্বাভাবিক ভাবে সারা বছরই রোগীদের চাপ থাকে। হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে বহির্বিভাগে ৬০০ জন চিকিৎসা সেবা নেওয়ার পাশাপাশি গড়ে প্রতিদিন ৪০ জন রোগী ভর্তি হন যাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য রয়েছেন মাত্র ১১ জন চিকিৎসক। চিকিৎসক সংকটের কারণে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা। তাদের স্বাস্থ্য সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত গুটিকয়েক চিকিৎসক। সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে ও জরুরি বিভাগে প্রচুর সংখ্যক রোগীর লাইন। মেডিকেল অফিসার সংকটের কারনে বহির্বিভাগে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা চিকিৎসা দিচ্ছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা যায়, নির্ধারিত বেডের পাশাপাশি মেঝেতে এবং করিডরে বিছানা পেতে রোগীরা চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী জানান, হাসপাতালে সবসময় রোগীর ভিড় থাকে। চিকিৎসক দেখাতে হলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রোগীদের অভিযোগ এখানে ডাক্তার কম থাকায় তারা ঠিকমতো চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না। হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগী অভিযোগ করেন দু’দিন ধরে ভর্তি আছি কিন্তু এর মধ্যে একদিন ডাক্তার এসে দেখে গেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সেবিকারা জানান, ডাক্তারের সংকট আছে। কিন্তু রোগীদের নিয়মিত সেবা প্রদান অব্যাহত রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা। কিন্তু বিপুল সংখ্যক রোগীকে সেবা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে। জানা যায়, ১৯৭৮ সালে ৩৫ শয্যা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ২৯ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১১ জন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলিমুর রাজীব বলেন, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত অনেক চিকিৎসক প্রশিক্ষণ এবং ডেপুটেশনের জন্য অন্যত্র অবস্থান করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে একজন নতুন চিকিৎসক যোগদান করবেন। অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট নিয়ে যশোর সিভিল সার্জন ডাঃ মাহমুদুল হাসান বলেন, চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজি মহোদয় বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করছি সেখান থেকে অনুমতি পেলে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।