সাতক্ষীরা তালা উপজেলার ১ নং ধানদিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের দিনমজুর শরিফুল ইসলামের মেয়ে (৮) নাবালিকাকে ধষনের অভিযোগ উঠছে। ঘটনাটি দক্ষিণ সারসা ও আশপাশের এলাকায় মানুষের মুখে মুখে বলতে শোনা গেছে।
মেয়েটি সারসা (দক্ষিণ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। ঘটনাটি গত ৬/১০/২৪ তারিখে ২ নং সারসা (দক্ষিণ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার পরে বাড়ি যাওয়ার পথে ঘটে। জানা যায়, দক্ষিণ সারসা গ্রামের শরিফুল ইসলামের নাবালিকা মেয়ে ৮ প্রতিদিনের ন্যায় স্কুল ছুটির পরে রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাড়ি যাতায়াত করেন। কুটিকাটা বাজারস্থ স্কুল থেকে মেয়েটির বাড়ি প্রায় হাফ কিলোমিটার দূরে। ঘটনার দিন ৬/১০/২৪ রবিবার স্কুল ছুটির পরে মেয়েটি তার বাড়িতে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে স্থানীয় ডাব ব্যবসায়ী হামিজুদ্দিন ৪৪(ছোট) মেয়েটিকে রাস্তা দিয়ে আসতে দেখে কদবেল খেতে দিবে বলে রাস্তার পাশে তার নিজস্ব বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে মেয়েটির সাথে অসামাজিক কাজ করে। ছোট্ট মেয়েটি ভয়ে ভিতস্থ অবস্থায় বাড়িতে যেয়ে তার মায়ের সাথে ঘটনা সব বলেন। তখন তার মা স্থানীয় দফাদার মোড়ে এসে হামিজ উদ্দিনের (ছোট) -র এমন ঘটনাটি অনেকের সাথে বর্ণনা দেন। স্থানীয় সাধারণ মানুষ বিষয় টি জানতে পেরে হামিজ উদ্দিন
ওরফে ছোটর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
পরবর্তীতে ৭/১০/২৪ সোমবার বিকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে দফাদর মোড়ে সালিশি বৈঠক বৈঠক বসে। সালিশে হামিদউদ্দিন ওরফে ছোট হাজির না হলেও ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে শর্তে আপোষ মিমাংশা হয়ে গেছে বলে স্থানীয়দের
মাধ্যমে জানা জায়। স্হানীয় বিএনপি নেতা রবিউল ইসলাম সালিসি বৈঠকের নেতৃত্ব দেন। উভয়পক্ষ ভুল বোঝা বুঝি হয়েছে বলে সবাইকে বিষয়টি চেপে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
অথচ ততক্ষণে এই ঘটনায় এলাকা সহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে মেয়েটিকে পক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সঠিক বিচার পাইনি বলে স্থানীয় অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। এ বিষয়ে মেয়েটির পরিবার গরিব হওয়ায় আইনি জটিলতায় যেতে সাহস পাচ্ছে না এবং স্থানীয় নেতাকর্মীর প্রভাবের ফলে তারা হামিজউদ্দিনের সাথে আপস মীমাংসা করে নেওয়ার জন্য রাজি হয়েছে। এ বিষয়ে মেয়েটির পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা এই প্রতিবেদকের সাথে কথা বলতে রাজি হননি। স্থানীয় সালিসে নেতৃত্ব দানকারী ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি রবিউল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এ ঘটনা আপনাদের কে বলেছে সেটা বলেন, আমরা স্থানীয়ভাবে মিটিয়ে নিয়েছি। কিভাবে মিটিয়েছি এটা জানতে চান না। লিখিত কোন কাগজ পত্র লেখালেখি করেছেন কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে, তিনি প্রশ্নটির জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান। এছাড়া অনেক সংবাদকর্মীদের সাথে তার কথা হয়েছে বলেও তিনি জানান। নাম না প্রকাশের শর্তে অনেকে বলেন, হামিজুদ্দিন (ছোট) এর আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন কিন্তু তখন কেউ মান-সম্মানের ভয়ে প্রকাশ না করেনি। এই ঘটনাটি প্রকাশ হলেও সঠিক বিচার পেলেন না ভিকটিম মেয়েটি। এমন একটি ঘটনা ঘটেছে অথচ তার সঠিক বিচার পাননি মেয়েটির পরিবার। এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে সমাজে বসবাস করবো কি করে। অর্থের বিনিময় হামিজউদ্দিন (ছোট) এত বড় একটা অন্যায় করেও মাপ পেয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তারা। এ বিষয়ে স্থানীয় সারসা (দক্ষিণ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক বলেন,
আমি ঘটনাটি বাজারে চায়ের দোকান থেকে শুনেছি,স্কুল ছুটি হওয়ার পরে বাড়ি যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটেছে। গত দুইদিন হলো মেয়েটি স্কুলে আসছে না আমরা তাকে দেখতে যাব সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ বিষয়ে ৭ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে, তিনি জানান ঘটনাটি শুনেছি আগামীকাল বিকালে দফাদার মোড়ে সালিশে মিটমাট হয়ে গেছে বলে জানতে পারি। এদিকে সুশীল সমাজ বলছেন এমন একটি ঘটনা স্থানীয় গোটা কয়েক নেতার কারণে ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে।
এভাবে চললে আমাদের ছেলে মেয়ে স্কুলে পাঠাবো কিভাবে। স্হানীয় প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে সঠিক তদন্ত করে দোষীকে শাস্তির আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার জন্য সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ মানুষ।