ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির কুতুবনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নয়নমূলক কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি মেয়াদ শেষ হলেও কোন প্রকার এডহক কমিটি না করে বিধিবহির্ভূতভাবে বহাল রয়েছে পূর্বের সভাপতি আঃ মজিদ । সেই সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক যোগসাজসে স্কুলের উন্নয়নের জন্য বরাদ্ধকৃত ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার লক্ষে স্থানীয় লিটনকে দিয়ে সামান্য রং করে দায়সারাভাবে কাজ করে উক্ত টাকা উত্তোলন করার পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও স্কুলের সিলিপের বরাদ্ধ ৫০ হাজার টাকারও কোন দৃশ্যমান কাজ দেখা যায়নি। তবে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও মিডিয়া পাড়ায় নাম গোপন রাখার শর্তে অনিয়ম ও দুর্ণীতির ফিরিস্তি নিয়ে ঘুরছে এলাকার বেশ কয়েকজন শিক্ষাবান্ধব সচেতন ব্যক্তি। তাদের অভিযোগ এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীর্ঘ ১০ বছর যাবত একই স্কুলে কর্মরত থাকায় ও তার নিজ বাড়ী স্কুলের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় শক্তি প্রয়োগ ও প্রভাব ঘাটিয়ে স্কুলের মেয়াদোত্তীর্ণ সভাপতির সাথে আতাত করে এসব অনিয়ম করে যাচ্ছেন। এমনকি নতুন ম্যানেজিং কমিটি গঠন বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুসারীদের নিয়ে কমিটি করার পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে। যাতে তাদের দিয়ে পূর্বের দূর্ণীতি ধামাচাপা দেয়া সম্ভব হয় এমনটিই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহানারা বেগমের মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে প্রথমেই ব্যস্ত আছেন দাবী করে বলেন, এ বিষয় এখন কোন কথা বলতে পারব না। পরবর্তীতে কোন কথা না শুনেই ফোন কেটে দেন তিনি।
এ ব্যাপারে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি আঃ মজিদ বলেন, “আমি দুই টাইম সভাপতি হিসেবে আছি। কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নতুন কমিটি বা এডহক কমিটি না হওয়ায় আমি এখনও দায়িত্বে আছি। স্কুল উন্নয়নের দেড় লক্ষ টাকার বরাদ্ধ পত্র পেয়ে স্থানীয় লিটনকে রংয়ের কাজ ঠিকা দিয়েছি এবং রং কিনে দিয়েছি। এখন টাইলসের কাজ বাকী রয়েছে। কাজ শেষ করে বরাদ্ধের টাকা উত্তোলন করব। এখানে কোন দূর্ণীতি নাই। তবে সিলিপের বরাদ্ধের ৫০ হাজার টাকার বিষয়ে কোন সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি তিনি।”
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সালেহা বেগম প্রথমেই জানান, “ঝালকাঠির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ স্কুলেরই কমিটির মেয়াদ নেই। করোনার কারনে এডহক কমিটিও গঠন করা হয়নি। কুতুব নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বরাদ্ধ ও উন্নয়নমূলক কাজের বিষয় জানতে চাইলে তিনি শুরুতেই প্রধান শিক্ষকের গুনকীর্তন শুরু করেন। এরপর তিনি জানান, স্কুলের উন্নয়নের জন্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্ধ পত্র দিয়েছি। হয়তো তারা বরাদ্ধ পত্র পেয়ে কাজ শুরু করেছে। এখনও কোন বিল দেয়নি। শতভাগ কাজ না হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধান শিক্ষক বরাদ্ধের কাজ করাতে পারবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রধান শিক্ষক কোনভাবেই কাজ করাতে পারবেন না। যদি করে থাকেন তা সম্পূর্ণ বেআইনী। আমরা যেহেতু এখনও বরাদ্ধের টাকা দেই নাই বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। সিলিপের বরাদ্ধের বিষয়ে বলেন, দৃশ্যমান কাজ না পেলে আমরা উভয়ের বরাদ্ধই স্থগিত রাখব। এ বিষয়ে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।”