শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

কথা বলতে বলতে প্রেম -মো: আলমগীর হোসেন

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১২ মে, ২০২০, ৫:০৩ অপরাহ্ন

গ্রামের সরল প্রকৃতির ছেলে হ্নদয় । গ্রামেই তার অন্য তিনটে ছেলের মত হেসে খেলে বেড়ে ওঠা । বাড়ীতে থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসারের অনেক কাজই নিজ হাতে করে। এইচএসসি পাশ করে জেলা শহরে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক কোসে ভর্তি হয়। কৃষক পরিবারের ছেলে হওয়ায় বাড়ীতে কিছু কাজের চাপ এবং টিউশনি করায়, সে বাড়ী থেকে লেখাপড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। লেখাপড়ার পাশাপাশি টিউশনি করে কারন যাতে করে খরচের জন্য পরিবারকে বেশি চাপ দিতে না হয়। এক মাসে তার টিউশনির একটু বেশি টাকা আদায় হওয়ায় সে সিদ্ধান্ত নেয় একটি মোবাইল ক্রয় করার। যেই কথা সেই কাজ। সে একটি মোবাইল ক্রয় করে । মোবাইল ক্রয়ের কথা বাড়ীতে বলতে সে খুব ভয় পাচ্ছিল ।

বাড়ীতে বড় রা কেউ বকে কি না? স্কুল কলেজে পড়াশোনা অবস্থায় শিক্ষকদ্বয় তাকে বেশ ¯েœহ করে একজন ভদ্রছেলে বলে ।কারন সে কখনো অন্য কতিপয় ছেলেদের মত ক্লাসের বাহিরে অযথা আড্ডা দিতো না। টিউশনি ও সংসারের কাজে চাপ থাকায় সে নিয়মিত কলেজে ক্লাস না করিলেও মাঝে মাঝে সহপাঠীদের নিকট হতে সাজেসন্স নিয়ে লেখাপড়া চালাতে থাকে। ১ম বর্ষ পরীক্ষা আসন্ন ভেবে সে টিউশনির ছাত্রদের ছুটি দিয়ে শহরের একটি ছাত্রাবাসে একটি সিট বুকিং নেয়।ছাত্রাবাসে থেকে সে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করিতেছে। প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত ও শিক্ষকদের নিকট হতে সাজেশন্স সংগ্রহ করে পড়তে থাকে। এভাবে ভালই চলছে ।একদিন সন্ধায় পড়ার টেবিলে পড়ারত অবস্থায় তার মোবাইলের স্কীনে অপরিচিত একটি নাম্বার ভেসে আসছিল। প্রথমত সে রিসিভ করিলনা । একটু পর আবার ফোন আসে।

তখন সে বিনয়ের সাথে ফোন রিসিভ করে বলে আপনি কে? অপর পাশ থেকে উত্তর আসে, চিনছ না আমি অমুক! হ্নদয় বলে অমুক টা আবার কে? মেয়েটি বলে আমি তোমার গ্রামের অমুক। তা ঠিক আছে , কি জন্য ফোন করেছো? মেয়েটি বলে এমনি ? কেমন আছো খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য । তুমি নাম্বারটা সেভ করে রাখো। এমনি মাঝে মাঝে কথা বলা যাবে কেমন? হ্নদয় একথা শুনে হ্নদয়ের ছোট্র হ্নদয়টা যেন হু হু করে কেপে উঠল। সে ভাবছে একজন মেয়ে তাকে ফোন করেছে! আবার ফোন করিবে , খোঁজ-খবর রাখবে। তার পর দিন সকাল আটটার সময় আবার ফোন আসে। অনেকক্ষন উভয়ের মধ্যে কথা-বার্তা হয় । হ্নদয় কলেজে না গিয়ে ভাবতে থাকে কেন সে আমার কাছে ফোন করছে? আমি তার কে?

এসব চিন্তা করতে করতে তার পড়াশোনার গতি একটু কমতে থাকে। মেয়েটির প্রতি চিন্তা-চেতনা বাড়তে থাকে। তারপর আবার হ্নদয় মনে মনে চিন্তা করে না এসব ভাবলে হবে না। তাকে ঠিকমত লেখাপাড়া করতে হবে। আবার একদিন কলেজ থেকে এসে দুপুরের খাবার শেষে বিছানায় শুয়ে পেপার দেখছে। এমন সময় তারে ফোনের স্কিনে ঐ নাম্বার ভেসে আসছে। তখন দ্রুত ফোন রিসিভ করে দুইজনই কুশলাদি আলাপ-আলোচনা করে। মেসের সবাই তাকে নিয়ে আলোচনা করতে থাকে । তাদের মধ্যে একটি সম্পর্ক হয়েছে । ফোনে মেয়েটি তাকে যমুনার পাড়ে ঘুরতে যায় কিনা ? জানতে চায় ।

সে জবাবে বলে না, সে যায় না। মেয়েটি বলে সেখানে গেলে অনেক আনন্দ পাবে। ঐদিন বিকেলে সে অন্যান্য ছাত্রদের সাথে যমুনার পাড়ে ঘুরতে যায়। সেখানে গিয়ে অনেক যুগল বন্দিদের দেখে তার মন হু হু করে । সে ভাবতে থাকে তার বন্ধুটি যদি আজ তার সাথে এভাবে ঘুরতো তাহলে বেশ ভাল লাগতো। এসব চিন্তা করতে থাকে। বিকেলে এসে সেই মেয়েটিকে ফোন করে বলে, এখন কি করছো, কেমন আছো, কি খাচ্ছো, কি ভাবছো বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করে। মেয়েটির বাড়ীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাকে দাওয়াত করিতো। দুজন একসাথে বিভিন্ন পার্কে ঘুরে বেড়াতো। প্রতিনিয়ত প্রায় সময়ই তারা মোবাইলে কথা বলতো । এভাবেই তাদের মধ্যে এক মধুর সম্পর্ক তৈরী হয় ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর