মোঃ কামাল হোসেন যশোর থেকে:
যশোরের চৌগাছার ৬টি প্রাইভেট ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে ৪টিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে যশোর সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত শহরের এসব ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের শুরুতে চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হকের নেতৃত্বে অংশ নেন যশোরের সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ এবং চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার লাকি, চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তৌহিদুজ্জামান, যশোর সদর উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পার্থ প্রতিম লাহিড়ী, চৌগাছা থানার এসআই বাবুল আক্তারসহ পুলিশ। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অন্য একটি প্রোগ্রামে গেলে অন্যরা অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে শহরের কপোতাক্ষ ক্লিনিক, মায়ের দোয়া পাইভেট ক্লিনিক, বিশস ডায়গনস্টিক ও পল্লবী ক্লিনিককে লাইসেন্স নবায়ন না থাকা, সার্বক্ষণিক মেডিকেল অফিসার ও পর্যাপ্ত নার্স না থাকাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সব রকমের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়।
এসময় পল্লবী ক্লিনিকে ভর্তি ১৫ রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হয় এবং ক্লিনিকটির মালিক গ্রাম ডাক্তার মিজানুর রহমান ও ক্লিনিকের একজন্য মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট জাহিদুর রহমানের প্রেসকিক্রপশন প্যাডে ডাক্তার লেখার অপরাধে তাদের সতর্ক করাসহ তাদের প্রায় ২ হাজার প্রেসক্রিপশন প্যাড (চিকিৎসাপত্র) পুড়িয়ে দেয়া হয়। অভিযানকালে দেখা যায় মায়ের দোয়া প্রাইভেট ক্লিনিকের ঔষধ রাখার ফ্রিজে গোশত ও ব্লাড পাশাপাশি রাখা হয়েছে। ফ্রিজটির গোড়ায় অনেকগুলি ব্যাঙ লাফাচ্ছে। অপারেশন থিয়েটারের পাশের জানালা খোলা এবং রোগী রাখার বেডে ময়লা পড়ে রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্লিনিকটির সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া এসব ক্লিনিক গুলোকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে লাইসেন্স নবায়নসহ ডাক্তার ও নার্সদের কাগজপত্র প্রদর্শন ও যে ক্লিনিকে যে যে ত্রুটি রয়েছে তা সমাধান পূর্বক প্রদর্শন করতে হবে।
পরবর্তী পরিদর্শনের সময়ে নবায়নসহ সকল কাগজপত্র ও সার্বিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারলে ক্লিনিকগুলোকে স্থায়ীভাবে সিলগালা করে দেয়া হবে। এ বিষয়ে অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া যশোরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ বলেন, ৬টি ক্লিনিকের মধ্যে কপোতাক্ষ ক্লিনিক, বিশস ডায়াগনস্টিক, মায়ের দোয়া ক্লিনিক ও পল্লবী ক্লিনিককে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে কাগজপত্র হালনাগাদ ও ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবার পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই নির্দেশ না মানলে ক্লিনিকগুলিকে স্থায়ীভাবে সিলগালা করে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, পল্লবী ক্লিনিকে ভর্তি থাকা ১৫ জন রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তরের জন্য ৩দিন সময় দেয়া হয়েছে এবং তাদের দুজনকে ভুয়া ডাক্তার লেখার অপরাধে সতর্ক করে দেয়া হয় ও তাদের প্রেসক্রিপশন প্যাড (চিকিৎসাপত্র) পুড়িয়ে দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন নোভা এইড প্রাইভেট হাসপাতালের সার্টিফিকেটধারী নার্স সংকট রয়েছে এবং এছাড়া মধুমতি প্রাইভেট হাসপাতালের ইন্সপেকশন প্রক্রিয়াধীন থাকায় এই দুটির কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আগামী শনিবার উপজেলার অন্যান্য ক্লিনিকগুলিতেও অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।