পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের কাশিপুর থেকে পাটুলীপাড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট এবং খোয়া-বালু না দিয়েই রাস্ত তৈরির অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। রাস্তায় এমন নিম্নমানের কাজ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দেখেও দেখছে না।
উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের মাধ্যমে জানা যায়, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ১কটি ৮০ লক্ষ ৯৯ হাজার ৩২৫ টাকাব রাদ্দের ৩.৪৭ কিঃ মিঃ কাজ পান বরেন্দ্র লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক আবুল হোসেন। এই রাস্তাটিতে পুরাতন কার্পেটিং ভেঙ্গে বেড তৈরি করার পর তার উপর প্রথম ১ কিঃ মিঃ ২ ইঞ্চি নতুন খোয়া ও বাকি রাস্তায় ৩ ইঞ্চি নতুন খোয়া দিয়ে বেড করে ২৫ মিলি কার্পেটিং ও রাস্তার পাশ দিয়ে ৩ ফিট মাটি দিয়ে রাস্তা নির্মাণের এ কাজ বাস্তবায়ন করার কথা। কিন্তু এ কাজ করছে ঈশ্বরদী উপজেলার মায়া এন্টার প্রাইজ এর মালিক সৈকত নামের এক ঠিকাদার।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তায় ব্যবহার করা হয়েছে নিম্ন মানের ইট ও বরাদ্দ কৃত নতুন খোয়া না দিয়ে রাস্তার কাজ করছে ঠিকাদার। রাস্তার পাশে ৩ ফিট মাটি দেওয়ার কথা থাকলেও নাম মাত্র মাটি দিয়ে চলছে রাস্তা নির্মাণ। রাস্তার পাশে মাটি না থাকায় রাস্তার হাইজিং অনেক জায়গায় হেলে গেছে এবং রাস্তার মাঝ খানে নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিতেই রাস্তার মাঝ খানে পানি জমে রয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তার পাশে মাটি না থাকায় অনেক জায়গায় এখনি রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। মাটি না দিলে বছরের বৃষ্টিতেই রাস্তা ভেঙ্গে যাবে। আবার রাস্তার মাঝে নিচু হওয়ায় পানি জমে রয়েছে। পানি জমে থাকলে কার্পেটিং নষ্ট হয়ে যাবে। তারা আরো বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী অফিসারের সাথে যোগসাজসে এ অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে ঠিকাদার। অবিলম্বে রাস্তায় বরাদ্দকৃত খোয়া, রাস্তার পাশে পরিপূর্ণ মাটি দিয়ে নতুন করে রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
কাশিপুর গ্রামের শাহআলম বলেন, রাস্তায় নতুন খোয়া না দেওয়ায় রাস্তার মাঝে নিচু হয়েছে একটু বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকে এঅবস্থায় কাজ করলে সরকারের টাকা জলে ফেলানো হলো।
পাটুলীপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান সরকার বলেন, এতো নিম্নমানের কাজ হলে অল্প দিনেই রাস্তা নষ্ট হয়ে যাবে। উপজেলা প্রকৌশলীকে ম্যানেজ না করে এতো অনিয়ম করা ঠিকেদারের সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে মায়া এন্টার প্রাইজ মালিক ঠিকেদার সৈকত আলী বলেন, নতুন খোয়া ৩ ইঞ্চি করে ১ কিঃ মিঃ এবং বাকি রাস্তায় ২ ইঞ্চি খোয়া দিতে বলেছে এখন আপনারাই বলেন এই ২ ইঞ্চি খোয়া কিভাবে দিব। রাস্তার মাঝের নিচু আমরা কার্পেটিং করার সময় ঠিক করে দিচ্ছি। রাস্তার পাশদিয়ে কিছু জায়গায় মাটি দিয়েছি বাকি অংশে কার্পেটিং শেষে দিব। মাটি ৩ ফিটের জায়গায় ১ থেকে ১.৫ ফিট কেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন কালকে আমি এসে আপনার সাথে সামনা সামনি কথা বলছি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোছাঃ আফরোজা খাতুন বলেন, আমার অফিসের লোক সবসময় কাজ বুঝে নিচ্ছে। আমি নিজেও মনিটরিং করেছি সুন্দর কাজ চলছে। রাস্তার পাশ দিয়ে খুব ভাল মাটি দিয়েছে এতে কোন সমস্যা নাই। বরাদ্ধ কৃত নতুন খোয়া যথারিতি দিয়েছে কোন সমস্যা নাই ঠিকেদার খুব ভাল। স্থানিয়রা আপনাদের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তিনি আরো বলেন, আপনারা সাংবাদিক এসব বুঝবেন না আমি ইঞ্জিনিয়ার খুব ভাল জানি কোথায় কতটুকু কি দিতে হবে ।