রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৩ অপরাহ্ন

ই-পেপার

অনুপ্রেরণা – মো: আলমগীর হোসেন

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: সোমবার, ১১ মে, ২০২০, ১০:১২ অপরাহ্ণ

কৈশোরে মানুষের জীবন হয় দুরন্তপনা। বন্ধুদের সাথে অহেতুক আড্ডা দেয়া। ভবঘুরে বেড়ানো । কলেজে ক্লাস ফাকি দেয়া । কলেজে যাওয়ার বাসভাড়ার টাকা নিয়ে মোবাইলে লোড দেয়া । বাজারে সময় কাটানো , বাজারের প্রতিটি দোকানে বসে আড্ডা দেয়া কত কি ? এসব হয় তাদের , যাদের পিছনে তদারকির লোকের অভাব থাকে অথবা রাজনৈতিক নেতাদের দ্বারা একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের কারনেও হয়ে থাকে। এসব করিলে লেখাপড়া একদম ভেস্তে যায় । জীবনের শেষ তার ভাল হয়না বললেই চলে । গ্রামের ছেলে সবুজ বাজারে রাজনৈতিক নেতা কর্মী ও সম বয়সীদের সাথে আড্ডা লিপ্ত থাকতো। ইউনিয়ন পরিষদে তার যাতায়াত ছিল । একদিন ঘুড়কা পুরাতন ইউনিয়ন পরিষদ ভবন চত্বরে ছাত্র সংগঠনের একটি কর্মী সভায় রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক এক নেতা তার বক্তব্যে বলেন, ছাত্ররা তোমরা নিয়মিত মসজিদে নামাজ পড়িবে। মসজিদে অবস্থান করবে। এতে সমাজে তোমাদের অবস্থান ভাল থাকবে । সৃষ্টিকর্তা তোমাদের ভালবাসবেন। তখন তিনি লোকজনের বেশ বাহবা পেয়েছিলেন । অনেক ছাত্ররা তাহার নিকট হতে অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করেছে। সবুজ নেতার বক্তব্য শুনে প্রতিজ্ঞা করে সে নিয়মিত নামাজ পড়িবে। তারপরও অন্যান্য কর্মকার্ন্ড চলতে থাকে। বেশ কিছুদিন পর ঐ রাজনৈতিক নেতা চান্দাইকোনায় এক আওয়ামীলীগ নেতার মায়ের জানাযা অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময়, ঘুড়কা বাজারে সবুজ কে বলে যাবে নাকি? সবুজ হ্যাঁ বলে নেতার গাড়ীতে উঠে বসে। চান্দাইকোনা যাওয়ার পথে, সবুজকে জিজ্ঞাসা করে, এই সবুজ তুই এখন কি করিতেছিস? তখন সবুজ বলে আপনার সাথে চান্দাইকোনা যাইতেছি। তখন নেতা বলেন না লেখাপড়া বা চাকুরীর খোজখবর এসবের খবর কি? তখন বলে কলেজে ঠিকমত যাওয়া হয়না ।চাকুরী-বাকুরীর কোন ধান্দা তার নেই । এভাবেই চলবে। তখন নেতা বলেন দেখ সবুজ ! আমি ৫০ বছর রাজনীতি করে কি পেয়েছি? জননেত্রী আমাকে চেনেন বিধায় একটু মুল্যায়ন পাই। তোর এভাবে চললে হবেনা । ভবিষ্যতে অন্ধকার দেখবি। ভালভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যায় । চাকুরীর জন্য প্রস্তুতি নেয় । কোন প্রয়োজনে লাগলে আমি তোকে সহায়তা করিব। তাহার এসব কথা শুনে সবুজ যেন আকাশ হতে পড়ে। এভাবে কোন নেতা তাকে পূর্বে কখনও উপদেশ দেয়নি । যার কারনে তারমত অনেক সবুজ স্থানীয় রাজনীতিতে জীবন যৌবন শেষ করে শেষ জীবনে হতাশা দেখছে । কেউবা রাজনীতিক প্রতিহিংসায় জীবন বলি হয়ে যায়। পরের দিন থেকে বাজারে আর সবুজ কে বাজারে দেখা যায়না । সে কোন এক আত্বীয়ের মাধ্যমে প্রাইভেট একটি কোম্পানীতে চাকুরী নেয় । চাকুরীর পাশাপাশি মাস্টার্স কোর্স সম্পন্ন করে। সেএখন ভালভাবে জীবন-যাপন করিতেছে।যদি ঐ নেতার পরামর্শ না শুনত তাহলে তার জীবন অন্ধকারেই পড়ে থাকতো। তাই প্রত্যেক রাজনৈতিক নেতাদের ভাবা উচিৎ নিজের ছেলেদের মত অন্যের ছেলেদের লেখাপড়া শেষ করে বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এসে রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে প্রবেশের পরামর্শ দেয়া ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর