রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২১ অপরাহ্ন

ই-পেপার

সিলেটে বিলীন হয়ে গেছে বাঙ্গালির ঐতিহ্যের বিয়ের জন্য যানবাহন হিসেবে ব্যবহৃত পালকি 

কিবরিয়া আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার (সিলেট):
আপডেট সময়: শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ

গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পালকির ইতিহাস অজানাই রয়েগেছে তরুন প্রজন্মের কাছে।আশির দশকে পালকিই ছিলো বিবাহের বর ও বৌ বহনকারী একমাত্র  মাধ্যম। দিন বদলের ছোঁয়ায় সিলেট সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে একেবারে হারিয়ে গেছে গ্রামবাংলার অনেক সংস্কৃতি তার মধ্য অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পালকি। কয়েক দশক আগেও পালকিই ছিলো বর ও বৌ বহনের একমাত্র মাধ্যম যা আজ তরুন প্রজন্মের কাছে একেবারে অজানা রয়ে গেছে।  বাংলাদেশে পালকির ব্যবহার কখন থেকে  শুরু হয়েছিল বলা বাহুল্য । এদিকে হারিয়ে যেতে বসেছে  লাঙ্গল, জোয়াল,হারিকেন, মশাল, ঢেঁকি, ছাতা,লেম সহ বাঁশ ও বেত শিল্প। এদিকে মিসরীয় ও মায়া সভ্যতার চিত্রলিপিতে পালকির ছবি পাওয়া গেছে। দেশের সাহিত্য এবং সংস্কৃতিতেও বর্তমানে পালকির আছে এক বিশেষ মর্যাদা। যারা পালকি বহন করতো তাদের  বেয়ারা বলে। পালকি সাধারণত কাঠের  তৈরী  ছিলো।  কাঠমিস্ত্রীরা বিভিন্ন ধরনের কাঠ দিয় পালকি তৈরির করেতেন। আবহমান বাংলার ঐতিহ্য’র ধারক / বাহক ছিলো এই পালকি। গ্রাম বাংলার প্রকৃতির সাথেই যেন  বর্তমানে একেবারে  মিশে গেছে পালকি নামক বাহন। গ্রাম বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য পালকির প্রচলন উঠে গেছে সমাজ থেকে। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে আজকাল পালকির দেখা  কল্পনাতে রয়েগেছে । পালকির বিয়ের  উৎসব মহা উৎসবের ছিলো। বর্তমান সময়কার ছেলে/মেয়ের কাছে এগুলো রুপকথার গল্পের মতো মনে হয়।
বাস্তবতার নিরিখে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় মানুষ এখন অতি সৌখিনতা অবলম্বন করার ফলে প্রাচীন ঐতিহ্যগুলোকে হারাতে বসেছে।আমাদের বর্তমান প্রজন্মের উঠতি বয়সী তরুন ও শিশুদের কাছে এগুলো সম্পর্কে অজ্ঞতা   রয়েছে। ইঞ্জিন চালিত  যানবাহন বাড়ার সাথে সাথে দিনদিন বদলের অতলে হারিয়ে গেছে  পালকির মতন পশুচালিত যানবাহনগুলোও ।
 যেমন, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি  ইত্যাদি ইত্যাদি। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের স্বপ্ন লালনে  মানুষ যাতায়াতে বাহন হিসাবে বিভিন্ন ধরনের কার লাইটেস,সিএনজি সহ অত্যাধুনিক যানবাহন সহ  ব্যাটারিচালিত গাড়ি ব্যবহার করছে। বর্তমানে কেউ কেউ হেলিকপ্টার নিয়েও বর সেজে বিয়ে বাড়িতে যেতে দেখা  যায়।
বর্তমানে পালকি আমাদের অতীত ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে ইতিহাসের পাতায় চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে রয়ে গেছে। পালকির স্থান হয়েছে এখন বিভিন্ন জাদুঘরে। সভ্যতা এবং বাস্তবতার কথা চিন্তা করলে পালকিকে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে আমাদের নতুন প্রজন্ম যাতে পালকির কথা ভুলে না যায় সেদিকে সচেতন মহলের সুদৃষ্টি  একান্ত প্রয়োজন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর