নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী দিনের নেটওয়ার্ক সংযোগ সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ শিল্পকে এগিয়ে নিতে নিজেদের প্রথম মোবাইল টাওয়ার নকশা কেন্দ্র স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে শীর্ষস্থানীয় আঞ্চলিক ও সমন্বিত টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবা কোম্পানি ইডটকো গ্রুপ (ইডটকো)। ‘সেন্টার অব ডিজাইন এক্সিলেন্স’ (কোড) নামের এই টাওয়ার নকশা কেন্দ্রটি স্থাপন করা হচ্ছে ঢাকাতেই। একটি টেকসই টেলিযোগাযোগ শিল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইডটকো গ্রুপের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ‘কোড’কে একটি দক্ষ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে কর্মরত ইডটকোর দক্ষ ও মেধাবী প্রকৌশলীদের অংশগ্রহণে একটি ‘ভার্চ্যুয়াল টিম’ গঠন করা হচ্ছে। রোববার (২৬ জলাই) এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাশ্রয়ী মূল্যে টেকসই নকশা সমাধান গড়ে তোলার প্রতি জোর দেওয়ার পাশাপাশি প্রত্যেক বাজারের নিজস্ব চাহিদার কথা মাথায় রেখে সমাধান তৈরির লক্ষ্যে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে এই কোড।
ইডটকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রিকি স্টেইন বলেন, বাংলাদেশ ইডটকোর দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার এবং যে মেধা ও দক্ষতা আমাদের রয়েছে, সেগুলোই আমাদের কার্যক্রম পরিচালনার স্তম্ভ। অপরিসীম সহযোগিতা এবং অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমাদের স্থানীয় মেধাবীরা ইডটকোর অন্যান্য বাজারের জন্য অভিনব সব টাওয়ার নকশা তৈরি এবং টেকসই প্রযুক্তিগত সমাধান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ‘তাদের তৈরিকৃত অভিনব সমাধানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘স্মার্ট ল্যাম্প পোল’, সম্প্রতি যেটি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে স্থাপন করা হয়েছে। ‘কোড’ দলের করা নকশায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাথে যৌথ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত এই উদ্যোগটি একটি কার্যকর ও টেকসই সমাধান তৈরির ক্ষেত্রে ইডটকোর ভূমিকা তুলে ধরেছে, যা বাংলাদেশের টেলিযোগযোগ শিল্পে অবদান রাখবে। ’ ‘কোড’ এর মাধ্যমে আরও বেশ কয়েকটি প্রকল্প সফলতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করেছে ইডটকো। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- নিজেরা নকশা তৈরি করা এবং সাশ্রয়ী টাওয়ার সাইট স্থাপন, যা টাওয়ারের গুণগত মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্মাণ ব্যয়সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচ কমাতে সক্ষম হবে।
কয়েক মাসের মধ্যেই ‘কোড’ টাওয়ার শক্তিশালীকরণ সমাধান বাস্তবায়ন করেছে, যা সাইটের ওপর থেকে অতিরিক্ত চাপ কমিয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হলে মোবাইল টাওয়ারগুলো স্থানান্তর করতে হতো। ইডটকোর অন্যতম উল্লেযোগ্য কাজ হলো- প্রথমবারের মতো উচ্চ মানসম্পন্ন টাওয়ার স্থাপনের নিজস্ব নকশা তৈরি করা। এর মাধ্যমে টাওয়ারের গুণগত মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি এর নকশায় বাইরের জনবলের ওপর ইডটকোর নির্ভরতা কমানো, যথার্থ ও পরিমিত বাজেট এবং ব্যয় সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর সঙ্গেও যৌথ উদ্যোগে কাজ শুরু করেছে ‘কোড’। বিদ্যমান ১৫টি ‘ব্যাম্বো টাওয়ার’ (বাঁশ দিয়ে নির্মিত টাওয়ার) এর অধিকতর উন্নয়নের পাশাপাশি বাঁশ ব্যবহার করে আরও ভালো কিছুর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি, যাতে এ ধরনের পরিবেশবান্ধব স্থাপনাকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করে গড়ে তোলা সম্ভব হয়। জাতি গঠনের একজন অংশীদার হিসেবে, পরবর্তী প্রজন্মকে সুদক্ষভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অনুধাবন করে দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি টাওয়ারের নকশা তৈরির প্রতিযোগিতা’ আয়োজন করছে ‘কোড’।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে (আইইউটি) এই আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতা শেষ হবে অক্টোবরে। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও টেলিযোগাযোগ খাতের বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করবে ‘কোড’। এ লক্ষ্যে ইডটকো এখন ভবিষ্যতমুখী ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণ করছে, যাতে টেলিযোগাযোগ শিল্পের অবকাঠামো উন্নয়নে একটি উদ্ভাবনী ও টেকসই সমাধান প্রদানকারী নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার যে প্রতিশ্রুতি কোম্পানিটি দিয়েছিলো, সেটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। আর এভাবেই মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, লাওস প্রভৃতি দেশের ডিজিটাল রূপান্তরে ‘জাতি গঠনের অংশীদার’ হিসেবে ভূমিকা পালনের পাশাপাশি টেলিযোগাযোগখাতের নানামুখী চাহিদা