সাইবার নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বা সাংবাদিকতা করতে যেন বাধা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবো আমরা। এ ক্ষেত্রে যেন একটি চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স থাকে, সেদিকে কঠোরভাবে নজর দেয়া হবে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন বিষয়ে বিএফইউজের উপস্থাপনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আনিসুল হক বলেন, অনেকেই সাংবাদিক সেজে অপরাধ করে। কিন্তু প্রকৃত সাংবাদিক ও সাংবাদিক সেজে অপরাধ করাটা এক নয়। এর মধ্যে বড় পার্থক্য আছে। সেই পার্থক্য যেন আমরা সবাই বুঝি, সেই অনুরোধ থাকবে। সাংবাদিক সমাজের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যেন এ আইনটা (সাইবার নিরাপত্তা আইন) ভালোভাবে পরিচালনা করা যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
আইনমন্ত্রী বলেন, আজ এই বিলটা (সাইবার নিরাপত্তা আইন) সংসদে উপস্থাপন করা হবে। এরপর এটা সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখানে হয়তো চার থেকে পাঁচ দিনের জন্য থাকবে।
সাংবাদিকদের অংশগ্রহণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমি আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। সেখানে আপনাদেরও যাতে আমন্ত্রণ জানানো হয়, সে ব্যাপারে বলেছি। তিনি (প্রতিমন্ত্রী) আমাকে মৌখিকভাবে আশ্বস্ত করেছেন সেখানে আপনাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
মন্ত্রী বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করলে বাদীর সাজা দেয়ার বিধান রাখার ব্যাপারেও কাজ চলছে। মিথ্যা মামলা করলে বাদীকে যে উল্টো সাজা দেয়ার ব্যাপারটা, সেটা নিয়েও কাজ করছি আমরা। এটার জন্য যা করা দরকার, তা নিয়ে আজই কথা শেষ করে ফেলবো। এটা আমি আপনাদের (সাংবাদিক) আশ্বস্ত করে গেলাম।
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মামলা শেষ করার বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে দেখবেন জানিয়ে তিনি বলেন, মামলা হলে তা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হওয়া উচিত। সাংবাদিকদের এ দাবির সঙ্গে আমিও একমত। এটার জন্য সাইবার ট্রাইব্যুনাল আছে, সেখানে আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবস্থা নেবো।
তিনি আরও বলেন, আর আমি যদি ভুল বলে না থাকি, তাহলে আইসিটি অ্যাক্টের মধ্যে এ বিষয়টা আছে যে মামলাটা কত দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। তারপরও সেটা যদি না থাকে, তাহলে এটা সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের ৬২ ধারা থেকে এ বিষয়ে বলা আছে। সেখানে কোনও একটা জায়গায় এটা যুক্ত করা হবে। মামলা যেন তাড়াতাড়ি শেষ হয় এবং এ আইনে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন।
এর আগে আলোচনা সভার শুরুতে সাইবার নিরাপত্তা আইন বিষয়ের সাংবাদিক সমাজের পক্ষে বিএফইউজের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ আইনমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক। বিএফইউজের মহাসচিব দ্বীপ আজাদের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বর্তমান সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।