আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি জনগণের কল্যান চায় না। তারা মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারে, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। আর আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের দল, জনগণের কল্যানে কাজ করে। তাই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কোনো তুলনা হতে পারে না।’
যারা নিজের দলের গঠনতন্ত্র মানে না, নিয়ম মানে না, আইন মানে না, তো সেই দলের সাথে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে কীভাবে। যারা ঐ দুই দল বড় দল বলেন তারাও ভুল করেন।
বিএনপি’র গঠনতন্ত্রেই আছে সাজা প্রাপ্ত আসামী দলের নেতা হতে পারে না। আর বিএনপি একজন নেতাও কি পায় না যে অন্তত সাজাপ্রাপ্ত আসামী নন, খালেদা জিয়া এবং তাঁর ছেলে তারেক রহমান দু’জনেই সাজাপ্রাপ্ত আসামী। খালেদা জিয়ার ছেলে যাকে নেতা বানিয়েছে সে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী।
২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের তালিমপুর তেলিহাটি (টিটি) উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে জনসমুদ্রে পরিণত হওয়া জনসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ আয়নাল হোসেনের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, শাজাহান খান এমপি, আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা কাজী আকরাম উদ্দীন আহমদ, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাবুদ্দিন আজম, কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা।
জনসভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী মর্যাদায় পার্বত্য শান্তি চুুক্তি বাস্তবায়ন ও পরীবিক্ষণ কমিটির আহŸায়ক, জাতির পিতার ভাগ্নে, প্রধান মন্ত্রীর বড় ভাই, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশস্থলে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং অপর পাঁচটি প্রকল্পের নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশের মাটি ও মানুষের সংগঠন। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে এ দল গড়ে উঠেছে। তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নতি হয়। আর বিএনপি, জাতীয় পার্টি বা যে দলগুলো আছে, জামাত এরা কারা?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়া, সংবিধান লক্সঘন করে ক্ষমতা দখল করেছে। উচ্চ আদালতের রায় আছে। ক্ষমতায় বসে থেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দল তৈরি করেছিল সেই দল হচ্ছে বিএনপি। এরা মানুষের কল্যানও চায় না মঙ্গল ও চায় না। এরা মানুষকে আগুন দিয়ে পোড়ায়, মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। কাজেই এদের সাথে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি এবং স্বাধীনতার সুফল আজ বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাবে ইনশাল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী তার দেয়া ভাষণে আরও বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩শ’ সিটের মধ্যে মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল। আর আওয়ামী লীগ মহাজোট করেছিল। তারা পেয়েছিল বাকী সবগুলো আসন। তাহলে এই দুই দল এক পর্যায়ের হয় কীভাবে।
বিএনপি সরকারের আমলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, ৬৩ জেলার ৫শ’ জায়গায় একযোগে বোমা হামলা, দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, ওরা মানুষকে কিছু দেয়নি বরং মানুষের অর্থকরী সব লুটপাট করে বিদেশে নিয়ে গেছে। তারা এমন একটি রাজনৈতিক দল যারা নিজেরা নিজেদের গঠনতন্ত্রও মানে না।
দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছালে গগণ বিদারী শ্লোগান ও করতালির মাধ্যমে সমাবেশে আগত জনতা তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায়। প্রধানমন্ত্রী ও হাত নেড়ে জনতার জবাব দেন। কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে সমগ্র জেলাসহ বরিশালের আগৈলঝাড়া, গৌরনদীউপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী সকাল থেকেই সমাশে স্থলে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শোনেন।
শেখ হাসিনার নিজ নির্বাচনী আসন, গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া) সংসদ সদস্য। ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজ মাঠে যিনি নির্বাচনী সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার চার বছর পর আজ সেখানেই সেই আসনে জনসমাবেশে ভাষণ দেন তিনি।