বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

কুয়াশাঢাকা ভোরে মেট্রোরেলে উপচে পড়া ভিড়

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২, ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ

মেট্রোরেলে উঠতে প্রথম দিন সংসারের ব্যস্ততায় আসতে পারেননি সৈকত মালাকার। শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে পাঁচটায় রাজধানীর বাবুবাজার এলাকা থেকে সপরিবারে ছুটে এসেছেন তিনি। সাথে এসেছে তার স্ত্রী মেয়ে এবং মেয়ের ছোট সন্তান। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পাসপোর্ট কার্যালয়ের সামনে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে তারা এসে পৌঁছছেন প্রবেশ গেটের সামনে। তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়ালেও তার কোনো আক্ষেপ নেই। দ্বিতীয় দিনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর পর অবশেষে সাড়ে আটটার পর গেট খুলে দিলে ঢুকতে পারেন তিনি।

মেট্রোরেল চালু হওয়ার দ্বিতীয় দিনে আগারগাঁও স্টেশনে মানুষের ভিড় বাড়ছে। দলে দলে লোক আসতে শুরু করেছে আগারগাঁও স্টেশনে।

মিরপুর থেকে এসেছেন জামিল হোসেন। সাথে স্ত্রী দুই মেয়ে এবং সন্তানকে নিয়ে এসেছেন। নাতনিও রয়েছে সাথে। তিনি ওয়াসায় চাকরি করেন। প্রথম দিন পরিবার নিয়ে আসতে পারেননি তাই আজ এসেছেন।

দ্বিতীয় দিনে আগারগাঁও থেকে ছেড়ে গেল মেট্রো রেলের প্রথম ট্রিপ। তার আগে ৭ টা ৫০ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে এসে দাঁড়ায় মেট্রোরেলের একটি। পরে সেটি ৮টায় দিয়াবাড়ি স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। তবে প্রথম ট্রিপে কতজন যাত্রী ছিল তা এখনো জানা যায়নি।

দ্বিতীয়টি ছেড়ে গেছে আটটা দশ মিনিটে। আজকে লাইন দীর্ঘ হলেও যাত্রীরা খুব সহজে টিকিট কাটতে পারছেন।

মানুষের ভিড় থাকায় টিকিট কাউন্টার থেকে শুরু করে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা যারা ব্যক্তি আছেন তারা তা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।

আগারগাঁও স্টেশনে আগতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের অধিকাংশ গতকাল এবং আগে আগাম টিকিট নিতে পারেননি। তাই তারা আজ কাউন্টারে সরাসরি টিকিট কিনছেন। বেশিরভাগ যাত্রী এসেছেন মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও ফার্মগেট এলাকা থেকে। স্টেশনে যাত্রীদের টিকিট কাটতে সহযোগিতা করছেন স্কাউটের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা।‌ তবে যাত্রার আগে মুহূর্ত থেকে স্মরণীয় করে রাখতে বেশিরভাগ যাত্রী সেলফি ও ছবি তুলছেন।

পল্লবী এলাকা থেকে এসেছেন ফারিয়া খাতুন। সঙ্গে তার আরও পাঁচ বন্ধু এসেছেন। তারা সবাই উত্তরার একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। সকালে দিয়াবাড়ি থেকে প্রথম ট্রিপে আগারগাঁও এসে নেমেছেন। এরপর ঘণ্টা খানেক সেখানে অবস্থান করেন। ফারিয়া বলছিলেন, প্রথম ট্রিপে এসেছি ভালো লাগল। আগারগাঁও স্টেশনে অবস্থান করছি দেখছি। আবারো দিয়াবাড়ির দিকে রওনা হব।

সঙ্গে থাকা তার বন্ধু সুজন বলেন, আমরা একসাথে ভোরবেলা পাঁচজন রওনা হয়েছে উত্তরা থেকে। দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও এসেছি। আগে মেট্রো রেলের কথা শুনতাম। আজ সেই বাস্তব অভিজ্ঞতার স্বাদ নিলাম। ঢাকাবাসীর জন্য কল্যাণকর হবে। তবে এই সিস্টেম চালু হয়েছে তা রক্ষণাবেক্ষণ ও সুষ্ঠু ব্যবহার আমাদের সবার দায়িত্ব।

দ্বিতীয় দিনে আগারগাঁও স্টেশন থেকে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং ইউটিউবারদের ঘটনাস্থল থেকে লাইভ করতে দেখা যাচ্ছে।

আগারগাঁও স্টেশনে বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। দীর্ঘ হচ্ছে লাইন। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ালেও সেই ভোগান্তির ছাপ কারো মুখে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

ফার্মগেটে থেকে এসেছেন ফাহিমা আক্তার। গতকালকে চাকরির ব্যস্ততায় আসতে পারেননি। সকাল আটটায় এসে সাড়ে আটটায় ঢুকে যান মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশনে। তবে তাকে টিকিট পেতে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। দাঁড়ানোর ১০ মিনিটের মধ্যে তিনি টিকিট পেয়ে যান। এরপর সেলফি নিতে ভুলেন নেই এই নারী। তিনি বলছিলেন, এক অন্যরকম অনুভূতি। আগে সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়ার কথা শুনেছি। আজ নিজের দেশের মেট্রোরেলে চড়ব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর