পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ভাঙ্গুড়ায় ইউনিয়ন ভুমি সহকারির বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। টাকা নিয়ে ২ বছরেও খারিজ না দেওয়ায় অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভুমি সহকারি মুরারী মোহন এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মোঃ মাহফুজুর রহমান নামের এক ভুক্তভোগী। বুধবার তিনি ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের সিংগাড়ী গ্রামের মৃতঃ গোলাম রব্বানীর ছেলে। অভিযুক্ত মুরারী মোহন অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভুমি অফিসের নায়েব হিসেবে কর্মরত।
অভিযোগের অনুলিপি স্থানীয় সাংসদ,জেলা প্রশাসক,অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) ও সহকারি কমিশনারকে দেওয়া হয়েছে।
অলিখিত অভিযোগে জানা গেছে, অষ্টমনিষা অর্ন্তগত লামকান মৌজার সম্পত্তি খারিজ করার উদ্দেশে প্রায় ২ বছর পূর্বে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান ভুক্তভোগী মাহফুজুর। সেখানে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তফশীলদার মুরারী মোহন এর নিকট খারিজের বিষয়ে কথা বললে তিনি ঐ অফিসের কর্মরত কহিনুর খাতুন নামের এক মহিলাকে দেখিয়ে বলেন ওই ম্যাডাম এর সাথে দেখা করে আলোচনা শেষ করতে। এতে তিনি আপত্তি জানালে তহশীলদার মুরারী মোহন তাকে পরামর্শ দিয়ে বলেন,‘আপনার খারিজ দরকার তো তার সাথে কথা ফাইনাল করেন আমি আপনার যাবতীয় কাজ করে দিবো’। তখন কহিনুর খাতুন এর সাথে মাহফুজুর কথা বললে কহিনুর বলেন, ‘আপনি ঠিকানা দিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান। আমি ছুটির দিনে আপনার বাড়িতে গিয়ে কাগজ পত্র দেখে বাকি কথা বলবো।’
সেই কথামত মাহফুজুর নায়েব কে বলে বাড়িতে চলে যায়। কহিনুর খাতুন সে সময়ের এক ছুটির দিনে অফিসের ভলিয়ম বই সাথে নিয়ে মাহফুজুর এর বাড়িতে হাজির হয়ে যাবতীয় জমির কাগজপত্র দেখতে চান। তখন মাহফুজুর যাবতীয় কাগজপত্র দেখায়। তিনি দেখে বলেন,এটার খারিজ করা খুব কঠিন। তাই আপনাকে উপজেলা আফিস সহ খরচের জন্য ৪০,০০০/- (চল্লিশ হাজার) টাকা দিতে হবে। প্রথমে মাহফুজুর এতো টাকা দিতে অস্বীকার করলে বলে কিছু কম দেন। তারপর মাহফুজুর নায়েব সাহেব কে জানালে তিনি কহিনুরের কাছেই টাকা দেওয়ার কথা বলেন। অতঃপর প্রথমে ১৫,০০০/- টাকা নগদ প্রদান করেন। এর প্রায় ২ মাস পরে কাজ হয়ে গেছে বলে বাকি ১৩,৫০০/- টাকা নগদ গ্রহণ করেন।
কিন্তু ২৮,৫০০/ টাকা গ্রহণ করেও তার জমির খারিজের কোনো কিছুই হয় নাই। পরবর্তীতে নায়েব এর সাথে খারিজের বিষয়ে কথা বললে, সে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাকে তাড়িয়ে দেন। তখন মাহফুজুর বলেন,তিনি তো কহিনুর কে চেনেন না। নায়েবর কথা মত তিনি কহিনুর এর কাছে টাকা দিয়েছি। তবু নায়েব কোনো কথায় কর্ণপাত না করে তার জমির খারিজের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। উপায়ান্তর না পেয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে ইউনিয়ন ভুমি সহকারি মুরারী মোহন এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মচারী কহিনুর খাতুনকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিককে স্বাক্ষাতে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভুমি সহকারি মুরারী মোহন বলেন , অফিসের কর্মরত কহিনুর খাতুন বিভিন্ন জনের নিকট থেকে টাকা পয়সা নিয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন। অফিসের একজন নিম্ন শ্রেণির কর্মচারী হয়ে কি ভাবে অনুমতি ছাড়া টাকা নিতে পারেন এমন প্রশ্নের বিষয়ে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেন নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান ও সহকারী কমিশনার(ভুমি) বিপাসা হোসাইন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।